আদিবাসীদের জমি অ-আদিবাসীরাও কিনতে পারবে। এ বিষয়ে ওড়িশার বিজেডি সরকারের মন্ত্রিসভা এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া জন অধিকার সুরক্ষা কমিটি। কমিটি ১৫ নভেম্বর এক বিবৃতিতে বলেছে, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে আদিবাসীদের অধিকার হরণের নানা প্রক্রিয়া বেড়েই চলেছে। সংশোধনের নামে বনাঞ্চল আইন এমন ভাবে পাল্টে দেওয়া হয়েছে যে, আদিবাসী এবং বনাঞ্চলে বসবাসকারী গরিব মানুষ বনাঞ্চলের জমি ও নানা সম্পদের ওপর যে অধিকার ভোগ করত, তা হারাতে চলেছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি এই কালা আইন কার্যকর করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আদিবাসী জনগণ প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। সরকারের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে বেদান্ত গোষ্ঠী গত ১২ আগস্ট ওড়িশার রায়গড় জেলায় সিজমালি পাহাড়ের জমি দখলে নামে। মানুষ তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ওড়িশারই কালাহাণ্ডি জেলায় কুত্রুমালি পাহাড়ে জমি দখলে নামে আদানি গোষ্ঠী। জন অধিকার সুরক্ষা কমিটির হিসাব অনুযায়ী, যদি এই দখলদারি আটকানো না যায়, তাহলে ১৮০টি গ্রামের ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ এলাকা থেকে উচ্ছেদ হবে।
এই পরিস্থিতিতে বনাঞ্চল সংরক্ষণ আইন-২০২২ ও তার সংশোধনী আইন-২০২৩ প্রত্যাহার এবং বন অধিকার আইন-২০০৬ সম্পূর্ণ রূপায়ণের দাবিতে আন্দোলন তীব্রতর করার লক্ষ্যে জন অধিকার সুরক্ষা কমিটির ডাকে ১৫ নভেম্বর শহিদ বিরসা মুণ্ডার ১৪৯তম জন্মদিবস পালিত হয়। শহিদ বিরসা মুণ্ডা ব্রিটিশের বিরুদ্ধে জমিদার-মহাজন ও ঠিকাদারদের শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে আদিবাসী মানুষকে সংগঠিত করে বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম করেছিলেন। ছোটনাগপুরে আদিবাসীদের নিয়ে তাঁর গৌরবোজ্জ্বল আন্দোলন তাঁকে জমিরক্ষা আন্দোলনের প্রতীকে পরিণত করেছে। এ দিন সংগঠনের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, আসাম, ত্রিপুরা সহ বিভিন্ন রাজ্যে শহিদ বিরসা মুণ্ডার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্দোলনের শপথ নেন কমিটির সদস্য ও উপস্থিত জনেরা।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে ‘খাস কমিটি’ গঠন করেছে সে প্রসঙ্গে সুরক্ষা কমিটির বক্তব্য, এতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে খাস জমিতে বসবাসকারী গরিব মানুষ উচ্ছেদ হবে। কারণ, অনেকের কাছেই জমির পাট্টা নেই। কমিটি জানিয়েছে, উচ্ছেদের এই সর্বাত্মক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে।