Breaking News

পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আসামে বিদ্যুৎগ্রাহক আন্দোলন

আসামের বিজেপি সরকার গ্রাহকস্বার্থ বিরোধী প্রিপেড স্মার্ট মিটার স্থাপন ও বিদ্যুতের বেসরকারিকরণের চক্রান্ত করছে। এর বিরুদ্ধে ১৫ মে অল আসাম ইলেক্ট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছাড় জেলা কমিটি ডাক দিয়েছিল নাগরিক মিছিলের। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে শহরের ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে সমবেত হন শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী-অধ্যাপক-আইনজীবী সহ কয়েক শত সাধারণ মানুষ।

২০২১ সালের ১৭ আগস্ট কোভিড পরিস্থিতির সুযোগে বিদ্যুৎক্ষেত্রের বেসরকারিকরণের অন্যতম পদক্ষেপ হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্ত গ্রাহকের মিটারকে স্মার্ট মিটারের দ্বারা প্রতিস্থাপনের নির্দেশ জারি করে। আসাম সরকার রাজ্যের বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা এপিডিসিএল-কে দিয়ে অত্যন্ত কৌশলে এই নির্দেশ কার্যকর করতে শুরু করে। প্রথমে গ্রাহকদের প্রচলিত ডিজিটাল মিটার বদল করে স্মার্ট মিটার লাগিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। তার দু-তিন দিনের মধ্যেই মোবাইলে মেসেজ পাঠানো শুরু করে যে স্মার্ট মিটারকে প্রিপেড করা হয়েছে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রিচার্জ না করলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। অন্য দিকে যারা বাধ্য হয়ে প্রিপেড স্মার্ট মিটার প্রতিস্থাপন করেছেন তাদের বিদ্যুতের বিল আগের তুলনায় দ্বিগুণ, তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। ফলে এর বিরুদ্ধে জনমনে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়।

অল আসাম ইলেক্ট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে এই মিছিলে বিশিষ্ট নাগরিক ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নাগরিক ও ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রতিনিধিরা যোগ দেন। মিছিল আটকাতে বিজেপি সরকার পুলিশ পাঠায়। পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরে যেতে চাপ দিতে থাকে। সংগঠনের রাজ্য শাখার অন্যতম আহ্বায়ক অজয় আচার্য বিদ্যুৎ গ্রাহকদের উপর নামিয়ে আনা অত্যাচার প্রতিরোধে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তাঁর বক্তব্যের পর নাগরিকরা মিছিল শুরু করলে পুরুষ পুলিশ কর্মীরা মহিলা আন্দোলনকারীদের টানা হেঁচড়া করতে শুরু করে। এতে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। টানা-হেঁচড়ায় বহু আন্দোলনকারী আহত হলেও মিছিল আটকানো যায়নি। পুলিশি বাধাকে উপেক্ষা করে নাগরিকেরা জেলাশাসক কার্যালয়ের দিকে এগিয়ে যান। জেলাশাসক কার্যালয়ের সামনে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ ও স্লোগান চললেও প্রথমে স্মারকপত্র নিতে কেউ রাজি হননি। নাগরিকদের প্রবল চাপে শেষ পর্যন্ত জেলাশাসক স্মারকপত্র গ্রহণ করেন। এই আন্দোলনের পর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বহু মানুষ অল আসাম ইলেক্ট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনর সাথে যুক্ত হয়ে এলাকায় এলাকায় আন্দোলন গড়ে তোলার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।