অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস অব এডুকেশন (এসার) রিপোর্ট-২০২৩ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। সারা দেশের ২৬টি রাজ্যের ২৮টি গ্রামীণ জেলার ৩৪,৭৪৫ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তাতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার অত্যন্ত নৈরাশ্যজনক ছবিই ফুটে উঠেছে। সমীক্ষা দেখাচ্ছে, ১৪-১৮ বছর বয়সী ৫৬.৭ শতাংশ ছাত্রছাত্রী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ভাগ অঙ্ক করতে পারে না। এই বয়সীরা অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। তিন অঙ্কের সংখ্যাকে এক অঙ্কের সংখ্যা দিয়ে ভাগ করতে পারে না অর্ধেকের বেশি ছাত্রছাত্রী। মাতৃভাষায় দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠ্যবই পড়তে পারে না ২৬.৫ শতাংশ। ইংরেজি বাক্য পড়তে পারে না ৪২.৭ শতাংশ। আর যারা পড়তেও পারে, অর্থ বুঝতে পারে না তার ২৬.৫ শতাংশ।
কেন শিক্ষার এই নৈরাশ্যজনক চিত্র? শিক্ষার এই দুর্বল ভিত্তি নিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে আগামী সমাজ? শিক্ষার এই দুর্বল ভিত্তি দূর করার জন্য যা যা করণীয় তা করার পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী মজেছেন মন্দির নির্মাণে। অজ্ঞতার সাথে, শিক্ষার পশ্চাদপদতার সাথে অন্ধ ধম¹য় বিশ্বাসের মেলবন্ধনই কি চান প্রধানমন্ত্রী? তা হলে দেশ এগোবে কী করে? এসার রিপোর্ট দেখাচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের ৩১.৭ শতাংশ বিজ্ঞান, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত নিয়ে পড়ে। সংখ্যাটা এক তৃতীয়াংশেরও কম। আবার শিক্ষার অতিরিক্ত ব্যয়বৃদ্ধির জন্য এদের অনেকেই পড়া চালিয়ে যেতে পারে না। অথচ সরকার শিক্ষায় অর্থ বরাদ্দ ক্রমাগত কমিয়ে চলেছে।
সারা দেশেই শিক্ষার দুর্দশাকে বাড়িয়ে তুলেছে মোদি সরকারের নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি। এই শিক্ষানীতিতে পাশ-ফেল প্রথা নেই। কিছু শিখুক, না শিখুক পাশ করিয়ে দেওয়াই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নীতি। তারই ফল ধরা পড়েছে এসার রিপোর্টে। শিক্ষানীতির পাশাপাশি পর্যাপ্ত এবং গুণমানের শিক্ষক নিয়োগ না করাও পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলেছে।