ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলন থেকে শুরু করে বর্তমানের আর জি কর আন্দোলন সব ক্ষেত্রেই গণদাবীর ভূমিকা অত্যন্ত কার্যকরী।এই সময়টায় আপনাদের পত্রিকা সুন্দর ও সুঠাম যুক্তির নিবন্ধে তুলে ধরেছে এই আন্দোলনের সফলতা। দেখিয়েছেন আন্দোলনের বিভেদকামী শক্তির স্বরূপটিকে। আমার মতো বহু পাঠককেই আপনারা আশ্বস্ত করেছেন যে এই আন্দোলনের গতিধারা বজায় থাকবে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাগুলির মধ্য দিয়ে। ঠিক সেই কারণেই চাই আপনাদের পত্রিকাটির নিরীক্ষার দৃষ্টি প্রসারিত হোক জনজীবনের আরও বহু সমস্যায়। দেখা যাচ্ছে দেশের মধ্যে ও আমাদের রাজ্যে ঘটে চলেছে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। যেখানে ধারাবাহিক ভাবে ঘটছে প্রাণহানি, সম্পদ ও জমি হারানোর মতো ঘটনা।
দেখা যাচ্ছে, গত লোকসভা নির্বাচনের সময় উত্তরপ্রদেশের নির্দলপ্রার্থীর বিজয় উৎসবে আরতিরত মহিলাদের উপর হুল্লোড়বাজদের আগুন লাগানোর ঘটনা, বাঙ্গালোরের ইবি হাসপাতালে ব্যাপক অগ্নিকাণ্ডে এক জনের মৃত্যু। মহারাষ্ট্রের পুণের একটি বিল্ডিংয়ে আগুন। ৭ জনকে দমকল বাহিনী উদ্ধার করলেও বাকি যারা ছিলেন তাদের কী হল? পরে কলকাতার এক বাজারে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ১৬টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, কেরালার মন্দিরে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে ৫ জন মারা যান, বাঙ্গালোরে করাত কলে আগুন লাগার ঘটনায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে, ভুবনেশ্বরের পোশাকের দোকানে আগুন লেগে পরপর বহু দোকানের পোশাক পুড়ে ছাই, ক্ষতির পরিমাণ অনেক, দেশজুড়ে দেওয়ালি উৎসব পালনের সময় আগুন লেগে বিধ্বস্ত হয়েছে জনজীবন। এ সবে বিরাজমান শাসকের কোনও হেলদোল দেখা যায়নি।
এই আগুন লাগার ঘটনা আমাদের রাজ্যেও ঘটেছে একের পর এক। কলকাতার নিজাম প্যালেসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত করছে সিবিআই, কিন্তু তদন্ত যে কী হচ্ছে জনমানসের আড়ালেই আছে। ৮ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ ২৪ পরগণায় ঘুটিয়ারি শরিফের রেলস্টেশনে ও পাশের ঝুপড়িতে ব্যাপক অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ২৮ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটের ব্যাপক অগ্নিকাণ্ড, ২৩ অক্টোবরের উল্টোডাঙার বসতিতে আগুন লেগে ১০টি বাড়ি পুড়ে ছাই, ১৬ নভেম্বর কলকাতায় ঘটে যায় আর একটি বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড। ২৩ নভেম্বর আগুন লাগে কাঁকুলিয়ায় বসতিতে। এই সব অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের কী হল? তাঁদের পুনর্বাসনের কী হল? কী ভাবে তাদের ক্ষতিপূরণ করবে সরকার তার কিছুই জনমানসে স্পষ্ট নয়। আপনাদের কাছে আবেদন, সত্যানুসন্ধানী নজরে এই বিষয়গুলি জনমানসে স্পষ্ট করে তুলে ধরুন এগুলি সাধারণ অগ্নিকাণ্ড, না কি এর পিছনে কোনও জমি হাঙরদের চক্রান্তও কাজ করছে?
মেঘমালা দাস, কলকাতা – ২৫