গাজা আজ ধ্বংসের অপর নামে পরিণত হয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে চলা যুদ্ধে গাজা মৃতের শহরে পরিণত হয়েছে। পঞ্চাশ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। সেখানে মানুষের বর্তমান যা অবস্থা আমাদের পক্ষে কল্পনা করাও কঠিন। ইজরায়েলের হামলায় ও নিষ্ঠুর নীতিতে সেখানকার মানুষ তেষ্টায়, অনাহারে, বিনা চিকিৎসায় প্রতি মুহূর্তে প্রাণটুকু বাঁচানোর জন্য লড়াই করছেন। এমন পরিস্থিতিতে উচিত ছিল মানবিক দিক থেকে গোটা বিশ্বের দেশগুলোর গাজার পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু তথাকথিত সব থেকে ক্ষমতাধর দেশ আমেরিকার সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁরা গাজা ভূখণ্ডের দখল নেবেন। গাজাকে নতুন করে তৈরি করবেন, তবে সেখানে প্যালেস্টিনীয়দের জায়গা হবে না, ট্রাম্পের ফরমান তাদের চলে যেতে হবে অন্য কোনও দেশে।
মানবতার দিক থেকে আমেরিকার উচিত ছিল গাজায় যুদ্ধবিধ্বস্ত অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর। তাদের কাছে উপযুক্ত পরিমাণ পানীয়, খাদ্য, চিকিৎসা পৌঁছে দিয়ে আবারও মূল স্রোতে ফেরানোর জন্য চেষ্টা করা। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদের শিরোমণি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট সেই অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো তো দূরের কথা, প্যালেস্টিনিয়ীদের নিজস্ব বাসস্থান ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলছে। আমরা আজ এ কোন বিশ্ব দেখছি!
আসলে ইজরায়েলের মদতদাতা হিসাবে আমেরিকা এই যুদ্ধের প্রথম থেকেই ছিল। অন্যদিকে আজ গোটা বিশ্বে যুদ্ধ বাধানোর কাণ্ডারি আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের ক্ষমতা আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ও গাজাকে সামরিক এবং পর্যটনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবসায়িক লক্ষ্যে বর্তমানে বিশ্বের সব থেকে নিষ্ঠুর কাজটা করার পরিকল্পনা করছে। কুড়ি লক্ষের বেশি মানুষের জীবনকে আজ চরম অনিশ্চয়তারমধ্যেঠেলেদিচ্ছেতারা।গোটাবিশ্বেরশান্তিপ্রিয়সচেতনমানুষদেরসাম্রাজ্যবাদী শক্তি আমেরিকা ও ইজরায়েলের অমানবিক চক্রান্তের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা প্রয়োজন। মহান লেনিন দেখিয়েছিলেন নিজেদের বাজার বৃদ্ধির জন্য সাম্রাজ্যবাদ যুদ্ধ বাধায়। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রকৃত লড়াই করতে গেলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদ উচ্ছেদের সংগ্রামে আজ আমাদের শামিল হতে হবে।
অর্ঘ্য প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর