নোট ছাপাতে বিপুল ব্যয় অথচ মিড-ডে মিলে বরাদ্দ কমল

ফাইল চিত্র । ১৪ নভেম্বর ২০১৬, কলকাতা

২০১৬-এর ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হঠাতই ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন।প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এতে কালো টাকা উদ্ধার হবে, জাল নোটের সমস্যা মিটবে, বাজারে নগদের পরিমাণ কমে ডিজিটাল লেনদেন বাড়বে এবং সন্ত্রাসবাদ নির্মূল হবে।রাতারাতি পড়িমরি করে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা জমা দিতে গিয়েই শুধু মারা গিয়েছিলেন দেড়শোর বেশি মানুষ!অসুস্থ, বৃদ্ধরাও রেহাই পাননি।নোট বাতিলের কারণে ছোট ব্যবসা, অসংগঠিত ক্ষেত্র মুখ থুবড়ে পড়ে।কোটি কোটি মানুষ কাজ হারান।বন্ধ হয়ে যায় লক্ষ লক্ষ ছোট ব্যবসা। এগুলির সাথে যুক্ত অসংখ্য পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। তবুও অধিকাংশ মানুষ তা কষ্ট করে মেনে নিয়েছিলেন এই ভেবে যে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণ করবেন, তাঁদের জীবনের সঙ্কটের কিছুটা হলেও সুরাহা হবে।

প্রতিশ্রুতি পূরণ তো দূরের কথা, উল্টে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পর বাজারে টাকার জোগান বাড়াতে রাজকোষের অর্থ বিপুল পরিমাণে খরচ করে ২০০০ টাকার নোট ছাপা শুরু হয়। এর জন্য মোট ১৭ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা ব্যয় করে অর্থমন্ত্রক। সেই সময় সমস্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে নোট রাখার ট্রে-ও বদলাতে হয়েছিল। অর্থমন্ত্রক সম্প্রতি দুই সাংসদের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে এর পেছনেই শুধু খরচ হয়েছে ৩২.২০ কোটি টাকা। আবার গত সেপ্টেম্বরের মধ্যে দু-হাজার টাকার নোট তুলে নেওয়ার ঘোষণা করায় নোট ছাপানোর বিপুল খরচ জলে গেল পুরোপুরি। সরকারের একের পর এক খামখেয়ালি সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিবেচনাহীন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিপাকে।

অন্যদিকে শিশুশিক্ষার জন্য অপরিহার্য মিড ডে মিলের খাতে খরচ কমানো হচ্ছে।গত বছরের থেকে এ বছর তা আরও কমানো হয়েছে।কেন্দ্র মিড ডে মিলের জন্য বছরে মাত্র ১২ হাজার কোটি টাকা খরচের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বিপুল ছাত্র-সংখ্যার নিরিখে যা অত্যন্ত কম। মোদি সাহেবের নির্বাচনী চমক ছিল নোট বাতিল। আর তার মাশুল গুনছে স্কুলের শিশুরাও– সাধারণ মানুষের সাথে আধপেটা মিড-ডে মিল খেয়ে।