রাশিয়া সর্বহারা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করিয়াছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু
স্ট্যালিন এবং তাঁহার সমর্থকগণ রাশিয়ার সমাজতন্ত্রকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য অভিযান চালাইয়াছেন যাহাতে তাঁহারা অন্যান্য দেশকে অনুপ্রাণিত করিতে পারেন৷ ….
আজ যদি ইউরোপে এমন কোনও একজন মাত্র ব্যক্তি থাকেন যাঁহার হাতে আগামী কয়েক দশকের জন্য ইউরোপীয় জাতিগুলির ভাগ্য ন্যস্ত, তবে তিনি হইলেন মার্শাল স্ট্যালিন৷ সুতরাং, ভবিষ্যতে সোভিয়েত ইউনিয়ন কী করে, না করে তাহার দিকে সর্বাধিক উদ্বেগ লইয়া গোটা বিশ্ব এবং সর্বোপরি গোটা ইউরোপ তাকাইয়া থাকিবে৷
আমরা সকলেই জানি যে, সপ্তদশ শতকে ইংল্যান্ড সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক সরকারের ধারণা প্রবর্তনের মধ্য দিয়া বিশ্বসভ্যতায় একটি উল্লেখযোগ্য অবদান জোগাইয়াছিল, ঠিক সেইভাবে অষ্টাদশ শতকে ফ্রান্স ‘স্বাধীনতা সাম্য বিশ্ব–ভ্রাতৃত্বের’ আদর্শের মাধ্যমে পৃথিবীর সংস্কৃতিতে এক আশ্চর্য অবদানের স্বাক্ষর রাখিয়াছিল৷ ঊনবিংশ শতকে জার্মানি তাহার মার্কসীয় দর্শনের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য ভাবে বিশ্বসভ্যতাকে দান করিয়াছিল৷ বিংশ শতকে রাশিয়া সর্বহারা বিপ্লব, সর্বহারার সরকার ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে কৃতিত্বের মধ্য দিয়া পৃথিবীর সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করিয়াছে৷
…সন্দেহ নাই যে, আমরা জাতীয়তাবাদী৷ কিন্তু আমরা আন্তর্জাতিকতাবাদীও বটে৷ আমার কথা বলিতে পারি যে, আমি বিশ্বাস করি কোনও জাতি স্বাধীন না হইলে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী হইতে পারে না৷ বিশ্বের মুক্তি ভারতের স্বাধীনতার উপর নির্ভর করে৷ যতক্ষণ একটিমাত্র জাতিও বন্ধনদশায় থাকিবে ততক্ষণ আন্তর্জাতিকতাবাদ বিকাশলাভ করিতে পারিবে না৷ শুধু যে দাস জাতিই দুঃখ ভোগ করে তাহা নয়, যে জাতি উহাকে দাসে পরিণত করিয়াছে সে অধিকতর দুঃখ ভোগ করে৷ বিশ্বের মঙ্গলের জন্য আমরা সকল জাতির স্বাধীনতা চাই৷ পৃথিবীতে স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রী প্রতিষ্ঠার উহাই একমাত্র পথ৷