অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের চাপে রাজ্য সরকারের বিলম্বিত বোধোদয় ঘটল। রাজ্য সরকার চার পুরসভার নির্বাচন তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এই নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া যে অত্যন্ত জরুরি ছিল তা ৬ জানুয়ারি লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিল এস ইউ সি আই (সি)। দলের রাজ্য সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য ওই চিঠিতে বলেছিলেন, ‘‘এই নির্বাচন প্রসঙ্গে কমিশন কোভিড বিধি মানার কিছু ভাসা ভাসা নির্দেশিকা দিলেও তা প্রয়োগের প্রশ্নে যে একেবারেই ঢিলেঢালা তা স্পষ্ট হয়ে গেছে মনোনয়ন জমার পর্বেই। বড় মিছিল, রোড শো ইত্যাদি নিষিদ্ধ হলেও দেখা গেছে শাসকদলের বাহিনী তাসা বাজিয়ে বিপুল জমায়েত করে মনোনয়ন জমা করতে গেছে। বহু জনের মুখে মাস্কও ছিল না। কিন্তু কমিশন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সদ্য সমাপ্ত কলকাতা কর্পোরেশনের নির্বাচনের সময়েও শাসক দল বা স্বীকৃত বিরোধী দলগুলিকে নিয়ম মানতে বাধ্য করার জন্য কমিশনের কার্যকরী ভূমিকা দেখা যায়নি।
আসন্ন নির্বাচনে সমাবেশ মিটিং মিছিলের জন্য কমিশন যে সব নির্দেশিকা দিয়েছে, তা সকলকে, বিশেষত শাসকদলকে মানাতে উদ্যোগী হবে এমন ভরসা কম। এমনিতেই ৫০০ লোকের জমায়েতে ছাড় দিয়ে কমিশন কোভিড বিপদ ডেকে আনার রাস্তা করেই রেখেছে। তার উপর বাড়ি বাড়ি প্রচার, সভা ইত্যাদি কোভিড সংক্রমণ বাড়াবেই তা নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
এই পরিস্থিতিতে আমরা দাবি করছি, কোভিড সংক্রমণের ঢেউ নিয়ন্ত্রিত না হওয়া পর্যন্ত ২২ জানুয়ারির ঘোষিত নির্বাচন স্থগিত রাখা হোক।” ৬ জানুয়ারি এই চিঠি পাঠানোর পর নির্বাচন কমিশনের গয়ংগচ্ছ মনোভাব আরও সপ্তাহ খানেক ধরে চলতে থাকে। এই অবস্থায় এস ইউ সি আই (সি) নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়ে পোস্টার ছাপিয়ে ব্যাপক জনমত গঠনে নামে। সরকারের নির্বাচনসর্বস্ব মানসিকতার বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে জনমত গড়ে ওঠে। হাইকোর্টে মামলা হয়। অবশেষে নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়।