এআইইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড শঙ্কর দাশগুপ্ত ১৪ অক্টোবর এক বিবৃতিতে বলেন, যে এয়ার ইন্ডিয়া একসময় একটি গৌরবোজ্জ্বল সরকারি সংস্থা হিসাবে গণ্য হত, সেটিকে মাত্র ১৮ হাজার কোটি টাকার নামমাত্র মূল্যে যেভাবে টাটার হাতে তুলে দেওয়া হল, সংগঠনের সর্বভারতীয় কমিটি তার তীব্র নিন্দা করেছে। এই পদক্ষেপ বৃহৎ পুঁজিপতিদের স্বার্থে সরকারি সংস্থা ও সরকারি ক্ষেত্রের সর্বাত্মক বেসরকারিকরণ এবং সরকারি ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন প্রকল্পেরই অঙ্গ।
ভারত সরকার ১৯৪৮ সালে এয়ার ইন্ডিয়া অধিগ্রহণ করে এবং ১৯৫৩ সালে এটি জাতীয়করণ করা হয়। সেই সময় থেকে সরকার এই সংস্থাটি গড়ে তুলতে কয়েক লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেছে। শুধু ২০০৯-১০ সালেই এই কাজে সরকার ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছিল। এয়ার ইন্ডিয়ার ৬৭ হাজার কোটি টাকা ঋণের ৪৬ হাজার ২৬২ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকারই বহন করবে বলে ঘোষণা করেছে। বলা বাহুল্য, এই পুরো টাকাটাই জনসাধারণের কাছ থেকে আদায় করা রাজস্বের ভাণ্ডার থেকে ব্যয় করা হবে। এ কথা অস্বীকার করা যায় না যে, একচেটিয়া কারবারীদের সর্বোচ্চ মুনাফার লক্ষ্যে পরিচালিত বর্তমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থার লাগামহীন শোষণে ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত জনসাধারণের ওপরে এই অর্থ সংগ্রহের জন্য বিপুল করের বোঝা চাপানো হবে। এই বেসরকারিকরণে হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারীর চাকরি অসুরক্ষিত হয়ে পড়বে এবং একই সঙ্গে এঁদের পরিবারের সদস্যরাও বিপদগ্রস্ত হবেন।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কর্তৃক এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণের জনবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এআইইউটিইউসি বলেছে, বিশ্বায়নের নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এই ঘটনা শ্রমিক শ্রেণির ওপর এক কঠোর আঘাত।
সংগঠনের সর্বভারতীয় কমিটি বৃহৎ পুঁজিপতিদের স্বার্থে এয়ার ইন্ডিয়া বেসরকারিকরণের এই জনবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য দেশের সমস্ত সচেতন ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ, বিশেষত মেহনতি মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।