সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ধর্ষণ সংক্রান্ত একটি মামলায় অভিযুক্তকে প্রশ্ন করছেন সে ধর্ষিতা মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজি আছে কি না? তা হলে তাকে জেল খাটতে হবে না এবং সরকারি চাকরিও বজায় থাকবে।
এই মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এআইএমএসএসের সাধারণ সম্পাদক কমরেড ছবি মহান্তি ৩ মার্চ এক বিবৃতিতে বলেন, একজন নাবালিকা স্কুল ছাত্রীকে প্রতারণা, বেঁধে রাখা, গলা টিপে ধরা এবং বারবার ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হননি অভিযুক্ত সুভাষ চৌহান, মেয়েটির মুখ বন্ধ করতে পেট্রল ঢেলে তাঁকে পুড়িয়ে দেওয়া, তাঁর মা ও ভাইয়ের গায়ে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল।
এই নির্যাতিতা আত্মহত্যার চেষ্টা করলে মামলাটি জনসমক্ষে আসে। বোম্বে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের দেওয়া আগাম জামিনকে বাতিল করেছে সঙ্গতভাবেই। এমন একটি মামলায় প্রধান বিচারপতির মন্তব্য থেকে মনে হয় যেন তিনি অপরাধীদের শাস্তিদানের জন্য দায়বদ্ধ বিচারক নন। বরং তিনি যেন জঘন্য অপরাধীকেও বুঝিয়ে-শুনিয়ে সুখে-স্বাচ্ছন্দে জীবন কাটাতে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। সম্ভবত তিনি চরম অপরাধের শিকার নির্যাতিতাকে একটি বস্তু হিসাবেই দেখেছেন।
ধর্ষিতাকে বিয়ে করেই ধর্ষণের দোষ স্খালনের এই প্রস্তাব ভারতীয় সমাজের পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাকেই প্রকট করে তুলেছে। যে মানসিকতা সুপ্রিম কোর্টের সর্বোচ্চ পদাধিকারীর কথাতেও প্রতিফলিত হয়েছে। বিচারব্যবস্থার সর্বোচ্চ আসনকেও যখন এই কলুষ স্পর্শ করতে পারছে সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের মেয়েরা বিচারব্যবস্থার উপর কেমন করে আস্থা রাখবে? বিচার এবং অপরাধীর শাস্তিকে ত্বরান্বিত করবে সে আশা করাটাই তো স্বাভাবিক ছিল! দেশের বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সকলের সাথে সর্বস্তরের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বিশেষত নারী সমাজের কাছে আবেদন, ন্যায় বিচারের দাবিতে সোচ্চার হোন।