গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যঙ্গচিত্র আঁকা হোর্ডিং টাঙিয়ে উত্তরপ্রদেশের যোগী প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার হলেন একদল শ্রমিক। কী ছিল সেই হোর্ডিংয়ে? ছিল রান্নার গ্যাসের দাম এগারোশো টাকা করার প্রতিবাদ। তাতে লেখা ছিল, মোদি চুক্তি-চাকরির মাধ্যমে যুবকদের স্বপ্নকে হত্যা করছেন। অতি তৎপর পুলিশ এখন তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়াচ্ছে এই হোর্ডিংয়ের বরাত যে দিয়েছিল তাকে। অবশ্য তারা রাজ্যের নারী ধর্ষণকারীদের খুঁজে সময় নষ্ট করছে না!
অন্য দিকে, শিব এবং দুর্গা সেজে আসামের গুয়াহাটিতে বাইক চালাচ্ছিলেন দু-জন শিল্পী। রাস্তায় বাইক থামিয়ে তাঁরা একটি পথনাটিকা অনুষ্ঠিত করেন। সেই পথনাটিকার বিষয় ছিল, জ্বালানির দাম বৃদ্ধির জন্য তাদের আর বাইক চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ওই পথনাটিকার ভিডিও ফুটেজ দেখেই বিজেপি সরকারের পুলিশের রাষ্ট্রপ্রেম এবং ধর্মবোধ এত জোর জেগে ওঠে যে রাষ্ট্রদ্রোহিতা এবং ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে শিল্পীরা গ্রেফতার হন।
এই ঘটনা দুটো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় বর্তমানের অসহিষ্ণু রাষ্ট্রকে। যে রাষ্ট্র প্রতিবাদের ভাষাটুকু কেড়ে নিতে চায়। এই রাষ্ট্রের পুলিশ নারী ধর্ষণ, খুনের, জালিয়াতির কিনারা করে না। অন্য দিকে, একটা প্রতিবাদী হোর্ডিং কিংবা নাটক তাদের ঘুম কেড়ে নেয়। যে কোনও ধরনের বিরুদ্ধ মতাবলম্বীর গায়ে লাগিয়ে দেয় দেশদ্রোহী তকমা। শিল্পীর স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা, প্রতিবাদের স্বাধীনতাহীন এ দেশে গণতন্ত্র কথাটি সোনার পাথরবাটি নয় কি?
অনুপম ভট্টাচার্য, সল্টলেক