তখন প্রায় মধ্যরাত, অনশনের ৮৩ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। টানা আন্দোলনের ধকলে ক্লান্ত অবসন্ন শরীরটাকে তারা আস্তে আস্তে ফেলে দিতে থাকলো করুণাময়ীর রাস্তার পিচের ওপর। রেলিংয়ের কাছে রাস্তায় বসে কার্তিকের খোলা আকাশের নিচে সন্তানকে কোলে নিয়ে পিঠ চাপড়িয়ে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছে আন্দোলনকারী মা। হঠাৎ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পুলিশকর্মীরা কর্তাদের নির্দেশে জড়ো হতে লাগলো অনশন স্থানের অদূরে। মুহূর্তের মধ্যে সাইরেন বাজিয়ে হাজির উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তারা। গার্ড, মাথায় হেলমেট পরে প্রস্তুত বাহিনী, শেষ মুহূর্তের নির্দেশ দেওয়া চলছে। এ যেন যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার প্রস্তুতি। শত্রু কারা? শত্রু আমার আপনার ঘরের শিক্ষিত ভদ্র সভ্য টেট-উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা।
আন্দোলনের শুরু থেকেই উপস্থিত ছিলেন ডিওয়াইও নেতা-কর্মীরা। তাঁরা ফোনে জানালেন, পুলিশ অ্যাকশন শুরু হবে বোধহয়। কিছু কর্মীকে নিয়ে ছুটে গেলেন এস ইউ সি আই (সি) রাজ্য কমিটির সদস্য কমরেড মৃদুল সরকার। বৃহস্পতিবার বিকাল গড়াতেই আশঙ্কা সত্যে পরিণত হল। ক্লান্তি ঝেড়ে উঠে বসে চার-পাঁচ-ছয় জনের দলে ভাগ হয়ে আন্দোলনকারীরা শক্ত করে হাতে হাত ধরে গড়ে তুললেন মানবশৃঙ্খল। রাতের প্রায়ান্ধকার আলোয়, নির্জন রাস্তায়, নিরস্ত্র, অনশনে দুর্বল সাধারণ ঘরের ছেলেমেয়েদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল রাজ্য সরকারের পুলিশ। পনেরো মিনিটেই অভিযান শেষ। টেনে হিঁচড়ে চ্যাংদোলা করে, মেরে ধরে একের পর এক প্রতিবাদীকে বাসে, প্রিজন ভ্যানে তুলে নেওয়া হল। তখন কারও নাক ফেটে, কারও পা কেটে রক্ত ঝরছে।
‘ফুটপাত দখল বেআইনি’ বলে সিপিএম সরকারের আমলে প্রকাশ্য দিবালোকে ‘অপারেশন সানসাইন’ দেখেছেন রাজ্যের মানুষ। আবার রাতের অন্ধকারে আন্দোলন ভাঙতে পুলিশ লেলিয়ে দেওয়ার দৃশ্যও বাংলার মানুষের কাছে এই প্রথম নয়। ২০০৬-এর ২৫ সেপ্টেম্বর আন্দোলন ভাঙতে রাতে আলো নিভিয়ে দিয়ে সিঙ্গুর বিডিও অফিসে ‘উন্নততর বামফ্রন্ট’ সরকারের পুলিশের তাণ্ডব আজও ভোলেনি মানুষ। যে দল গদিতে থাকে তার কাছে জনগণের যে কোনও আন্দোলনই অনায্য, তা সে সিঙ্গুর জাতীয় সড়ক অবরোধ হোক বা কৃষি নীতি বাতিলের দাবিতে সংযুক্ত কিসান মোর্চার দিল্লির রাস্তা অবরোধ। তখন সিপিএম ও বিজেপির সুর রাজ্যের তৃণমূল সরকারের মতোই। শাসকের রং বদলায় চরিত্র বদলায় না, এক শাসকের ভাষা অন্যের মুখে উঠে আসে।
কিন্তু এই প্রতিবাদীরা কারা? কেন এই প্রতিবাদ? এঁরা ২০১৪ টেট-উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থী। গড়ে তুলেছেন আন্দোলনের হাতিয়ার ‘একতা মঞ্চ’। কী অদ্ভুত বিষয়! রোজ যাদের দেখে মনে হয় ন্যুব্জ, কুব্জ প্রতিবাদও করতে জানে না, সেই তারাই যখন আক্রান্ত হয়, কোথা থেকে যেন বুঝে যায়–বাঁচতে গেলে, দাবি আদায় করতে গেলে লড়তে হবে, জোট বাঁধতে হবে, গড়ে তুলতে হবে লড়াইয়ের মঞ্চ।
এঁদের দাবি এঁরা আর কোনও ইন্টারভিউতে যাবেন না। ২০২০ সালে ১১ নভেম্বর বিধানসভা নির্বাচনের আগে নবান্নে প্রেস কনফারেন্স করে মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছিলেন, তা রূপায়ণ করতে হবে। ২০১৪ ও ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষা উত্তীর্ণদের একসঙ্গে ইন্টারভিউ করা যাবে না। ২০১৪-র নিয়োগ আগে সম্পূর্ণ করতে হবে। কী বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী? বলেছিলেন, ‘২০ হাজার ছাত্রছাত্র়ী টেট পরীক্ষায় পাশ করেছে। টেট পরীক্ষায় পাশ করার পর ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে নিয়োগ করে শূন্যপদ পূরণ করা হবে। এখন শূন্যপদ আছে ১৬৫০০ কিন্তু পাশ করেছে ২০ হাজার। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিসেম্বর, জানুয়ারির মধ্যে এই ১৬৫০০ পোস্টে অবিলম্বে নিয়োগ হবে আর বাকিদের ধাপে ধাপে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিয়োগ করা হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী যখন ঘোষণা করছেন তখন তৃতীয় টেট অর্থাৎ ২০১৭ টেট হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে তিনটে টেট পরীক্ষা হয়েছে– ২০১২, ২০১৪ ও ২০১৭ সালে। ২০১২ সালের পরীক্ষা ওই বছর হলেও পরের দুটি নির্দিষ্ট বছরে না হয়ে যথাক্রমে ২০১৫ ও ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে হয় অথচ নিয়ম হচ্ছে, যে বছর়ে টেট পরীক্ষা হওয়ার কথা সেই বছরই নিতে হবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। এখন ২০১৪ সালের টেট-উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া আট বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও শেষ হল না। এর জন্য কে দায়ী? এই আটটা বছর নষ্ট হওয়ায় যাদের বয়স ৪০ বছর পেরিয়ে গেল, যার জন্য তারা আইন অনুযায়ী আর ইন্টারভিউ দিতে পারবে না তার জন্য কে দায়ী? এই টেট পাশ করার জন্য বাবা-মায়ের কষ্টার্জিত লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পড়াশোনা করেও শুধুমাত্র সরকারের আর পর্ষদ কর্তৃপক্ষের অপদার্থতার জন্য তাদের ভবিষ্যত যে নষ্ট হল তার দায় কে নেবে? নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী এ কথা বলেছিলেন। তা হলে তিনি কি আইন জানেন না, নাকি ওটা জুমলা ছিল? এখন ‘আমি জানি না’– বললেই কি তাঁর অপরাধ ঢাকা পড়ে?
২০১৪ টেট পরীক্ষায় প্রশ্ন ভুল ছিল বলে ২০১৮ সালে একটি মামলা হয়। পরে সেই নম্বর দেওয়া হয়। অভিযোগ এই নম্বর দেওয়া নিয়ম মেনে হয়নি। যোগ্যদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদের নম্বর দিয়ে নিয়োগ করা হয়। ২০১৯ সালে রমেশ মালি নামে এক ব্যক্তি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ, ২০১৪-র টেটে সুব্রত মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি ফেল করেও চাকরি পেয়েছেন। এমনকি সাদা খাতা জমা দিয়েও মোটা অঙ্কের কাটমানি দিয়ে চাকরি পেয়েছেন এমন অভিযোগও উঠেছে। এখানে ‘বাগদার রঞ্জন’– এর কথা উঠে আসে। দ্বিতীয় দফার ১৬৫০০-র মধ্যে বাস্তবে কত নিয়োগ হয়েছে কেউ জানে না। আবার যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের কতজনের স্বচ্ছ মেধা তালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছে তা কেউ বলতে পারবে না, কারণ পর্ষদ কোনও মেধা-তালিকাই তৈরি করেনি। ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট দুর্নীতির অভিযোগে ২৬৯ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে এবং ২০১৪-র টেটে যে ৫৬ হাজার জন প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি পেয়েছেন ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নম্বর বিভাজন সহ তাদের যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করতে নির্দেশ দিয়েছে। দুর্নীতির শিকড় কত গভীরে এই তথ্য প্রকাশ পেলেই তা উন্মোচিত হবে। ২০১৪-র টেটে হাজার কোটির দুর্নীতি হয়েছে বলে অনুমান।
এটা ঠিক যে কোনও নিয়োগে আবেদনকারী প্রার্থীদের সকলেরই নিয়োগ সম্পন্ন হয় না। কিছু প্রার্থী ওয়েটিং-এ থেকে শেষ পর্যন্ত বাদ যান। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য নিয়োগে যদি দুর্নীতি না হত, মেধাতালিকার ভিত্তিতে হত, তা হলে যারা আজ ফেল করে সাদা খাতা জমা দিয়েও শিক্ষকের পদে চাকরি পেয়েছে, তাদের জায়গায় আন্দোলনকারীরা সকলে রাস্তায় পড়ে না থেকে স্কুলে পড়াতেন। আন্দোলনকারীদের এই বক্তব্য যথেষ্ট যুক্তিপূর্ণ। এমনকি নবনিযুক্ত পর্ষদ সভাপতিও দুর্নীতির বিষয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তরে বলেই ফেললেন যে, তাহলে কি ২০১৪-র টেটে যে ৫৬ হাজার নিয়োগ হয়েছে তার সবটাই বিধি মেনে নিয়োগ পায়নি? কেউই তা বলছে না, কিন্তু পর্ষদ তো জানে এই ৫৬ হাজারের মধ্যে কতটা জল আছে! তার তালিকা পর্ষদ কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করছে না কেন? দুর্নীতি আর মিথ্যা ঢাকতে গিয়ে পর্ষদ কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক সম্মেলনে বারবার অসত্য কথা বলেছেন। ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে পর্ষদ সভাপতি সরকারের সংবেদনশীলতা বোঝাতে গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী ২০ হাজার নিয়োগের কথা বলেছিলেন। প্রথম পর্যায়ে ২০২০ সালে ১৬৫০০ পদ এবং বর্তমানে ১১ হাজারেরও অধিক পদ সৃষ্টি করলেন, যা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০ হাজার পদের চেয়ে অনেক বেশি। পর্ষদ সভাপতি ভুলে গেলেন যে মুখ্যমন্ত্রী যখন ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণদের জন্য ২০ হাজার পদ সৃষ্টি ও নিয়োগের কথা ঘোষণা করলেন তখন ২০১৭ টেট পরীক্ষা হয়নি আর বর্তমানে যে ১১ হাজারের বেশি পদে নোটিফিকেশন বেরিয়েছে তা ২০১৪ ও ২০১৭ সহ সমস্ত টেট উত্তীর্ণদের জন্য। দুটো বিষয় সম্পূর্ণ ভিন্ন। মুখ্যমন্ত্রীর সংবেদনশীলতা বোঝাতে গিয়ে পর্ষদ সভাপতি ডাহা মিথ্যা তথ্য সাংবাদিক সম্মেলনে দিয়ে দিলেন। সরকারের উচিত ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী ২০১৪-র টেট নিয়োগ সম্পূর্ণ করা তারপর ২০১৭-র টেট উত্তীর্ণদের নিয়ম মেনে পদ তৈরি করে নিয়োগ সম্পন্ন করা এবং দুর্নীতিগ্রস্তদের কঠোর শাস্তি দেওয়া।
শুধু টেট নিয়োগেই নয়, এসএসসি, নার্স, পুলিশ কনস্টেবল, রাজ্য সরকারি গ্রুপ-ডি পদ, ডব্লিউবিসিএস সহ রাজ্যের প্রায় সমস্ত নিয়োগেই অভিযুক্ত রাজ্যের শাসকদল। বাগ কমিটির রিপোর্ট এই বিষয়ে একটি প্রামাণ্য দলিল। এমনকি এই রাজ্যে ক্ষমতায় না থেকেও কল্যাণী এইমসে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডঃ সুভাষ সরকার, বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা, রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে এবং এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও চলছে। শিক্ষক নিয়োগ সহ নিয়োগে দুর্নীতি আমাদের দেশে বা রাজ্যে এটাই প্রথম নয়। রাজ্যে পূর্বতন সিপিএম সরকারের আমলে ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত একটা সময় ছিল যখন ম্যানেজিং কমিটির হাত ধরে নেতা ও মন্ত্রীদের স্পর্শপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা, আত্মীয় পরিজন, স্বজন, দলের কর্মীদেরই স্কুলে শিক্ষকের পদে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিয়োগপত্র মিলত। এর জন্য বহু ক্ষেত্রেই দিতে হত মোটা টাকার ডোনেশন। ফলে বঞ্চিত হত মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা। বিগত সিপিএম সরকারের আমলে প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিটিআই) ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের কথা সকলের নিশ্চয়ই মনে আছে। এনসিটিইকে এড়িয়ে সিপিএম সরকার নিজেদের মতো করে নিয়ম বানিয়ে রাজ্যে পিটিটিআই কলেজগুলো চালাতে থাকে। পরবর্তীকালে একটা মামলাকে কেন্দ্র করে এই দুর্নীতি ও বেআইনি কাজ প্রকাশ হয়ে পড়লে পিটিটিআই কলেজগুলোর স্বীকৃতি বাতিল হয়ে যায়। এর ফলে চাকরিপ্রাপ্ত শিক্ষক ও পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
শুধু এই রাজ্য নয়, ত্রিপুরাতে ২০১০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে ১০৩২৩ জন শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করে স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল সেই রাজ্যের হাইকোর্ট (আনন্দবাজার পত্রিকা, আগরতলা ৮ মে ২০১৫)। গুজরাটে গত সাত বছরে নয়টি সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রতিটিতে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। রেলের বর্তমান পরীক্ষার বেনিয়ম আমরা জানি। তিন বছর হয়ে গেল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল না। এ ছাড়া ইউজিসি, এনইউটি, ইউপিটিইটি, রাজস্থান এলিজিবিলিটি একজামিনেশন, কমন এন্ট্রাস একজামিনেশন সহ বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা আকছার ঘটে চলেছে। মধ্যপ্রদেশে বিজেপি সরকারের ব্যাপম কেলেঙ্কারি নিয়োগের পরীক্ষার সমস্ত কেলেঙ্কারিকে ছাপিয়ে গেছে। এই দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে গিয়ে একজন তদন্তকারী অফিসার ও সাংবাদিক সহ ৫০ জনকে খুন করা হয়। অভিযোগের আঙুল উঠেছে ওই রাজ্যের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। এই সমস্ত দুর্নীতির কোনও সঠিক বিচার বা শাস্তি কিছুই হয়নি। সেই বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম এখন তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনকারী এবং সাধারণ মানুষ জানে এই দলগুলোর আন্দোলনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ভোট রাজনীতি, ক্ষমতা দখল।
রাজ্য জুড়ে বেকার যুবকদের ভবিষ্যৎ নষ্টের কার্নিভাল চলছে। বছরের পর বছর চলে যাচ্ছে নিয়োগ হচ্ছে না, ন্যায্য চাকরি অধরা থাকছে। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির পারদ ক্রমাগত চড়ছে। আরও অনেক রাঘববোয়াল এর সাথে যুক্ত। অপরদিকে দুর্নীতির প্রতিবাদে মেধা তালিকার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবিতে হবু শিক্ষকেরা, যাদের শিক্ষাঙ্গনে থাকার কথা, তাঁরা ২০১৫ সাল থেকে রাস্তাতেই পড়ে রয়েছেন। দেশেও বেকারত্বের পারদ ক্রমাগত চড়ছে। চাকরির দাবিতে আন্দোলনও তীব্র হচ্ছে। প্রয়োজন এই লড়াইকে আরও সংগঠিত রূপ দেওয়া, সঠিক দিশা দেখানো। করুণাময়ীর আন্দোলনকে পুলিশ দিয়ে থামিয়ে দিলেও এ লড়াই ব্যর্থ হবে না। একদিন তা ধারালো অস্তে্র পরিণত হবে।