পূর্ব মেদিনীপুরঃ ২০ ফেব্রুয়ারি সারা দেশ জুড়ে কৃষক বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল এ আই কে কে এম এস। ওই দিন সারা দেশে ১৯৮টি জেলায় সংগঠনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখান কৃষক ও খেতমজুররা। সে দিনেই দিল্লিতে সংসদেও বিক্ষোভ হয়। কৃষিপণ্যের সহায়ক মূল্যের আইনি গ্যারান্টি চালু, জলনিকাশি ও বন্যা প্রতিরোধ, সারের কালোবাজারি বন্ধ করে ন্যায্য মূল্যে সার সরবরাহ, খরচের দেড়গুণ দামে ফসল বিক্রির ব্যবস্থা, ষাটোর্ধ্ব কৃষকদের পেনশন ও ভাতা, পান বিক্রির সমস্যা সমাধান, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া মেটানো, আবাস যোজনা সহ গ্রামীণ উন্নয়নে দুর্নীতির তদন্ত ইত্যাদি দাবিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই দিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলাশাসক দপ্তরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে নিমতৌড়ি স্মৃতিসৌধে কৃষক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, দিল্লির ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের নেতা শঙ্কর ঘোষ। জেলাশাসক দপ্তরে ডেপুটেশনে নেতৃত্ব দেন জেলা সম্পাদক জগদীশ সাউ এবং বক্তব্য রাখেন উৎপল প্রধান, প্রবীর প্রধান প্রমুখ।
শঙ্কর ঘোষ বলেন, আজকের সমাজের মূল যে সংকট পুঁজিবাদী ব্যবস্থা তাকে উচ্ছেদ করে শ্রমিক শ্রেণির রাজ সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে এই কৃষকেরা– এই স্বপ্ন যে মহান দার্শনিক শিবদাস ঘোষ দেখিয়েছিলেন, তাঁর জন্মশতবর্ষ চলছে। শিবদাস ঘোষের দেখানো পথেই এআইকেকেএমএস লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এবং দাবি আদায় করবেই। সর্বস্তরের কৃষক সমাজকে এই আন্দোলনে আরও সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি।
পশ্চিম মেদিনীপুরঃ একই দিনে মেদিনীপুর শহরে জেলাশাসক দপ্তরের সামনে বিশাল কৃষক বিক্ষোভ হয়। মেদিনীপুর স্টেশন থেকে ধামসা-মাদল সহ সুসজ্জিত এক বিশাল কৃষক মিছিল শহর পরিক্রমা করে। নেতৃত্ব দেন সংগঠনের পিচম মেদিনীপুর উত্তর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক প্রভঞ্জন জানা ও সভাপতি বঙ্কিম মুর্মু, দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক স্বদেশ পড়িয়া ও সভাপতি সূর্য প্রধান। মিছিল জেলাশাসক দপ্তরের গেটে পৌঁছলে বিশাল পুলিশ ও রেফ বাহিনী মিছিলের গতি রোধ করে। শুরু হয় বিক্ষোভ সভা। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তথা বিশিষ্ট কৃষক নেতা পঞ্চানন প্রধান। আলু সহ ফসলের ন্যায্য দাম, সারের কালোবাজারি রোধ সহ ৬ দফা দাবিতে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
১১-১৪ মার্চ কৃষকদের জীবন-জীবিকা রক্ষার আন্দোলন আরও তীব্রতর করার উদ্দেশ্যে সংগঠনের তৃতীয় সর্বভারতীয় কৃষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে কলকাতা ও জয়নগরে। সম্মেলন সফল করার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
বাঁকুড়াঃ ২০ ফেব্রুয়ারি এ আই কে কে এম এস-এর ডাকে ১৪ দফা দাবিতে বাঁকুড়া জেলাশাসক দপ্তরে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
স্থায়ী সেচ, ১০০ দিনের কাজ, বকেয়া মজুরি মেটানো, ফসলের লাভজনক দাম, সার, বীজ ও কীটনাশকের দাম কমানো, সারের কালোবাজারি বন্ধ , এমএসপি আইনসম্মত করা, বিএলএলআরও অফিসের এবং আবাস যোজনার দুর্নীতি বন্ধ করা ইত্যাদি দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের রাজ্য কমিটির সহ সম্পাদক কমরেড দোনা গোস্বামী। অতিরিক্ত জেলাশাসক দাবিগুলি সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।