পূর্ব মেদিনীপুরের জুনপুটে মিসাইল উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ও হরিপুরে পরমাণু চুল্লি স্থাপন করে হাজার হাজার মৎস্যজীবীর জীবন-জীবিকা উচ্ছেদ ও ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন ধ্বংস করার চক্রান্ত রুখতে ২৯ মার্চ জুনপুট থেকে হরিপুর পর্যন্ত সাইকেল মিছিল করল এলাকার শতাধিক ছাত্রছাত্রী। কাঁথি উপকূলীয় ছাত্র সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে বিচুনিয়া হাইস্কুল থেকে শুরু হয়ে মিছিল জুনপুটের প্রস্তাবিত মিসাইল উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে পৌঁছায় এবং সেখানে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্রছাত্রীরা। সামিল হন স্থানীয় গ্রামবাসীরাও। এরপর মিছিল হরিপুরে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রস্তাবিত স্থানে পৌঁছায়। সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সভার পর বিক্ষোভ দেখানো হয়।
সংগ্রাম কমিটির সভাপতি কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের ছাত্র সুজয় মাইতি বলেন, জুনপুটে সামরিক ঘাঁটি হলে বহু মৎস্যজীবী পরিবারকে উচ্ছেদ হতে হবে, এলাকায় কোনও কর্মসংস্থান হবে না। অভিভাবকদের জীবিকা চলে গেলে ছাত্র-ছাত্রীদেরও শিক্ষাজীবন বিপন্ন হবে। তিনি বলেন, জুনপুটে সামরিক ঘাঁটি হলে হরিপুরে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন অনেক সহজ হয়ে যাবে। আমরা এই দুই প্রকল্পেরই তীব্র বিরোধিতা করছি।
এলাকার মানুষ পুষ্পপুস্তক দিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের অভিনন্দন জানান। তাঁরা বলেন, জীবন দিয়ে হলেও মিসাইল প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলব। আন্দোলনের চাপে প্রকল্পের কাজ বন্ধ আছে, এই কাজ আর শুরু করতে দেব না। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিনন্দন জানান ‘জুনপুটে মিসাইল ও হরিপুরে পরমাণু চুল্লি বিরোধী গণ প্রতিরোধ মঞ্চ’-র সদস্যরা। তাঁরা বলেন, প্রশাসন যদি পুলিশ দিয়ে, লাঠি-গুলি দিয়ে জোর করে এই ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে প্রকল্প স্থাপন করে তাহলে জনগণ জীবন দিয়ে হলেও প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। সরকার যদি সত্যিই উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান চায় তাহলে জুনপুট, হরিপুরে মৎস্য সংরক্ষণ শিল্প ও পর্যটন শিল্প করুক।
আসন্ন ভোট-যুদ্ধে নেমে পড়েছে সব ক’টি ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক দল। কিন্তু জুনপুট হরিপুরের মানুষ প্রস্তুতি নিচ্ছে জীবন-জীবিকা রক্ষার বৃহত্তর আন্দোলনের। ২০০৬ সালের হরিপুরে পরমাণু চুল্লিবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি এখন অমলিন। আবার জাগছে জুনপুট, হরিপুর।