নির্বাচনে ছাত্ররা কী চায় তা ভোটপ্রার্থীদের সামনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে ছাত্র-ইস্তেহার প্রকাশ করল এআইডিএসও। কলকাতায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় অফিসে ১৫ এপ্রিল এই উপলক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কমরেড বিশ্বজিত রায় বলেন, সংসদে এমন প্রার্থীদের পাঠানো উচিত যাঁরা জনগণের প্রকৃত দাবি তুলে ধরবেন।
রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিশ্রুতির ম্যানিফেস্টো বা ইস্তাহার প্রকাশ করে থাকে। কিন্তু ভোটাররা ম্যানিফেস্টো প্রকাশ করে সাংসদের কাছে দাবি জানাচ্ছেন– এই চিন্তা অভিনব। এআইডিএসও-র এই চিন্তা আগামী দিনে নানা অংশের মানুষকে সংগঠিত ভাবে দাবি উত্থাপনে উদ্বুদ্ধ করবে।
লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে রাজ্যে ক্ষমতাসীন এবং ক্ষমতা প্রত্যাশী ভোটবাজ দলগুলি নানা ভাবে ভোটের অঙ্ক কষছে। তারা দুর্নীতিতে অকণ্ঠ নিমজ্জিত। চলছে দলবদলের সুবিধাবাদী রাজনীতি। অন্যদিকে হারিয়ে যাচ্ছে জনগণেরবেঁচে থাকার দাবি। এই পরিস্থিতিতে দেশের লক্ষ লক্ষ ছাত্রের সাথে প্রস্তুতি বৈঠকের মধ্য দিয়ে তুলে আনা হয়েছে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নিজস্ব ৩১টি দাবি সনদ। যাকে ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে এই ছাত্র-ইস্তেহার।
কী আছে তাতে? দেশের সমস্ত রাজ্যের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এবং বেশিরভাগ ডিগ্রি কলেজে অসংখ্য প্রস্তুতি বৈঠক হয়েছে। যাতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্য থেকে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি-২০ এবং রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের রাজ্য শিক্ষানীতি-২৩ বাতিলের দাবি। বস্তুত রাজ্য শিক্ষানীতি ‘২৩ জাতীয় শিক্ষানীতি ‘২০-রই কার্বন কপি। এ দুটি বাতিলের পাশাপাশি দাবি উঠে এসেছে স্কুলে-কলেজে সমস্ত শূন্যপদে দুর্নীতিমুক্তভাবে নিয়োগ, উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ, সমস্ত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করা, এ রাজ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া ৮২০৭টি স্কুল খোলা এবং সমস্ত প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সরকারি অর্থ বরাদ্দের দাবি। মোট ৩১টি দাবি ম্যানিফেস্টোতে তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্বজিত রায় বলেন, নির্বাচনের এই পুরো সময় ধরে এই ইস্তেহার নিয়ে সারা দেশেই কলেজ বিশ্ববিদ্যালগুলিতে প্রচার চালানো হবে। যারা ভোট চাইতে আসবে তাদের কাছে শিক্ষার দাবিগুলো তুলে ধরা, তার ভিত্তিতে দলগুলির শিক্ষা সংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি এবং পরিকল্পনা ও শিক্ষার প্রশ্নে তাদের ভূমিকার কথা ছাত্রছাত্রীরা জানতে চাইবে। তাঁর প্রত্যাশা–কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আন্দোলন যারা গড়ে তুলছে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীরা সেই গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষে তাঁদের মত ব্যক্ত করবেন।