কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার পরিচালিত জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন আন্দোলনের চাপে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হল। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিদ্যুৎক্ষেত্র বেসরকারিকরণ করতে একটি জয়েন্ট ভেঞ্চার গড়ে তুলবে। জম্মু-কাশ্মীর পাওয়ার ট্রান্সমিশন কোম্পানি এবং পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডকে নিয়ে এই জয়েন্ট ভেঞ্চার গড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছিল।
এই সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে বিদ্যুৎক্ষেত্রে সার্বিক বেসরকারিকরণ করা হবে, অন্যদিকে শ্রমিক কর্মচারীদের জীবনে ছাঁটাইয়ের খড়গ নেমে আসবে এবং বিদ্যুতের দাম আরও বেশি হারে বাড়বে। এটা উপলব্ধি করেই বিদ্যুৎক্ষেত্রের কর্মচারীরা আন্দোলনে নামে। জয়েন্ট ফোরাম অব জম্মু-কাশ্মীর ইলেক্ট্রিসিটি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৭ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালীন ধর্মঘটের ডাক দেয়। ১৮ ডিসেম্বর শ্রীনগর হয়ে পড়ে বিদ্যুৎবিহীন। আন্দোলন ভাঙতে গভীর রাতে আন্দোলনের নেতাদের বাড়ি বাড়ি হানা দেয় পুলিশ। ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি অব ইলেকট্রিসিটি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড এমপ্লয়িজ (এন সি সি ও ই ই ই) হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, একজন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হলে সারা দেশ জুড়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে। পরের দিন প্রশাসনের আহ্বানে মিলিটারি নামে। তবুও ধর্মঘট ভাঙতে ব্যর্থ হয়। সাধারণ মানুষও ব্যাপকভাবে এই আন্দোলনকে সমর্থন করে। আন্দোলনের এই শক্তিবৃদ্ধি লক্ষ করে এবং দিল্লির কৃষক আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিয়ে অবশেষে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সামনে মাথা নত করতে সরকার বাধ্য হয় এবং বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ঘোষণা করে।
কেন্দ্রীয় শ্রমিক ইউনিয়ন এ আই ইউ টি ইউ সি-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড শঙ্কর দাশগুপ্ত ২১ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সংগ্রামী অভিনন্দন জানিয়েছেন। অভিনন্দন জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া ইলেক্ট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় কনভেনর অনাভরথন, প্রদীপ আর বি এবং সুব্রত বিশ্বাস ২৩ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে বলেছেন, আন্দোলনের এই জয় বিদ্যুৎ আইন ২০০৩ এবং তার সংশোধনী বিল ২০২১-এর বিরুদ্ধে আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করবে।