আবারও প্রমাণ হল, একমাত্র সংগঠিত ও সুশৃঙ্খল আন্দোলনই পারে দাবি আদায় করতে। টানা ৪২ দিন ধরে জুনিয়র ডাক্তার এবং নাগরিক সমাজের লাগাতার ও অনমনীয় আন্দোলন সরকারকে বাধ্য করল আর জি করের চিকিৎসক-ছাত্রীর খুন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে গড়ে ওঠা আন্দোলনের অনেকগুলি দাবি মেনে নিতে।
নবান্নে প্রথম বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর ‘আন্দোলন অনেক হয়েছে, এ বার উৎসবে ফিরুন’ বলে আন্দোলনে যুক্ত চিকিৎসক সমাজ সহ গোটা নাগরিক সমাজের ফুঁসে ওঠা ক্ষোভকে গুরুত্বহীন দেখাতে চেয়েছিলেন যে মুখ্যমন্ত্রী, আন্দোলনকারীদের অনমনীয় দৃঢ়তার সামনে তাঁকেই ছুটে আসতে হয়েছে স্বাস্থ্যভবনের আন্দোলন মঞ্চে। অনুরোধ করতে হয়েছে আবার আলোচনায় বসার জন্য। শেষ পর্যন্ত পুলিশ কমিশনার এবং স্বাস্থ্যদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের সরানোর দাবি এবং হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবিও মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বাধ্য হয়েছেন রোগীকল্যাণ সমিতির নামে হাসপাতালগুলিতে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের মদতপুষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতিচক্র হিসাবে কাজ করা সংস্থাগুলিকে ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করতে। আন্দোলনের চাপেই চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সিবিআইকেও গ্রেপ্তার করতে হয়েছে ডাঃ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসিকে। অন্য দিকে এও সত্য, বেশ কিছু দাবি আদায় হলেও প্রকৃত দোষীদের সবাইকে এখনও চিহ্নিত এবং গ্রেপ্তার করা হয়নি। হাসপাতালে হাসপাতালে দাপিয়ে বেড়ানো দালালরাজ, সিন্ডিকেটরাজ এবং দুষ্টচক্রকে আজও ভাঙা হয়নি। এই সব দাবি আদায় করতে হলে বিভিন্ন রূপে আন্দোলনকে শুধু জারি রাখাই নয়, আরও তীব্র করতে হবে। একটা স্ফুলিঙ্গ থেকে অগ্নিশিখার মতো জ্বলে উঠেছে এই আন্দোলন। উত্তাল হয়েছে বাংলা, উত্তাল সমগ্র দেশ। সর্বব্যাপক হয়েছে আন্দোলন। দেশের সীমান ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছে গেছে প্রতিবাদের ঢেউ। শুধু ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীরাই নন, প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ-স্কুলের হাজারে হাজারে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকসমাজ, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, গৃহস্থ মহিলা, অভিনেতা-অভিনেত্রী, সমস্ত পেশার নাগরিক, শ্রমিক, গ্রামের কৃষক, এমনকি প্রথম সারির ফুটবল দলের খেলোয়াড় ও সমর্থকরাও।
মরদেহ সরানোর চেষ্টা আটকে দিয়েছিলেন ডাক্তাররাই
৯ আগস্ট ঘটনা প্রকাশ্যে আসামাত্র আর জি কর হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার, পিজিটি এবং নার্সরা সমবেত ভাবে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের দাবিতে মরদেহ সেমিনার রুমে আটকে দেন। এই বিক্ষোভের ফলে কর্তৃপক্ষের গোপনে মৃতদেহ সরিয়ে ফেলার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে যায় এবং গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে এসে যায়। জুনিয়র ডাক্তাররা তৎক্ষণাৎ সঠিক তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেন, যা অতি দ্রুত অন্য হাসপাতালগুলিতে এবং গোটা সমাজে ছড়িয়ে পড়ে।
১৪ আগস্ট গণআন্দোলনের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন রাত। এ দিন পুরুষশাসিত সমাজে লাঞ্ছিত, দমিত, দুর্বল বলে গণ্য কয়েক লক্ষ নারীশক্তি প্রবল বলিষ্ঠতায়, অদম্য তেজে মধ্য রাতে শহরের প্রান্তে প্রান্তে, গ্রামে গঞ্জে প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন পুরুষরাও। ৪ সেপ্টেম্বর ‘বিচার পেতে আলোর পথে’, এই আহ্বানেও একই চিত্র। এই ভাবে একের পর এক পালিত হয়েছে অসংখ্য কর্মসূচি। স্বতঃস্ফূর্ত এই প্রতিবাদে এস ইউ সি আই (সি) পতাকা ছাড়াই সকল শক্তি নিয়ে সামিল হয়েছে কর্মসূচিগুলি সফল করতে। এই নারকীয় বীভৎস ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে রাজ্য সরকার, তার পুলিশ প্রশাসন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কী না করেছে! প্রথমে এই খুনকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চেয়েছে, পরে প্রমাণ লোপাট করার সব রকম ষড়যন্ত্র করেছে। ১৪ আগস্ট গভীর রাতে রাস্তায় যখন গণপ্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়েছে, ঠিক সেই সময় শাসকদলপুষ্ট দুষ্কৃতীরা আর জি করে ডাক্তারদের অবস্থানমঞ্চে হামলা চালায়। এমার্জেন্সি সহ অন্য বিভাগে ভাঙচুর করে, ভেঙে দেয় দামি দামি যন্ত্রপাতি। চলে যাওয়ার সময় ডিউটিরত নার্সদের অশ্রাব ভাষায় হুমকি দিয়ে যায়।
নাগরিক আন্দোলনে সর্বশক্তি নিয়ে ছিল এস ইউ সি আই (সি)
৯ আগস্ট কর্তব্যরত অবস্থায় ডাক্তার-ছাত্রী হত্যার নৃশংস ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে দুপুরেই ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও, যুব সংগঠন এআইডিওয়াইও, মহিলা সংগঠন এআইএমএসএস হাসপাতালের গেটে যেমন বিক্ষোভ সংগঠিত করেছে, তেমনই এসইউসিআই(সি)-র পক্ষ থেকে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে টালা থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। পরদিন ১০ আগস্ট দলের পক্ষ থেকে সারা বাংলা প্রতিবাদ দিবস পালন করা হয়। ১৪ আগস্ট হাসপাতালে দুষ্কৃতী হামলার পর মধ্য রাতেই এর প্রতিবাদে ১৫ আগস্ট ধিক্কার দিবস এবং ১৬ আগস্ট সারা বাংলা সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হুমকি দিয়েছিলেন, এই রাজ্যে ধর্মঘট চলবে না। আগের মতোই এ বারেও প্রয়োজনে হুমকি উপেক্ষা করেই জনস্বার্থে পুনরায় ধর্মঘট সফল করার জন্য জনসাধারণের কাছে আবেদন জানিয়েছিল দল। অতি অল্প সময়েও ধর্মঘটে যে সমর্থন জনসাধারণ জানিয়েছেন, তা অভূতপূর্ব।
আর জি করে ডাক্তারি-ছাত্র সৌমিত্র বিশ্বাস হত্যার বিচার মেলেনি
এর আগে, ২০০১ সালে আগের সরকারের আমলে এই আর জি করেই ডাক্তারি ছাত্র সৌমিত্র বিশ্বাসের মৃত্যুর ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা হয়েছিল। সে দিনও এআইডিএসও এই মৃত্যুর জন্য দায়ী দুষ্কৃতীচক্রকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। সিপিএম শাসনে শুধু বানতলাই নয়, আরও বহু ধর্ষণ ঘটেছে। সবশেষে সিঙ্গুরে ও নন্দীগ্রামে সরকারি মদতে ধর্ষণ ও গণধর্ষণ করানো হয়েছে। এ রাজ্যে তৃণমূল শাসনে কামদুনি সহ আরও বেশ কিছু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে যার কোনও বিচার হয়নি। বিজেপি ও কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতেও ধর্ষণ ও খুনের খবর প্রায় প্রতিদিন সংবাদপত্রে পাওয়া যায়। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ নারীধর্ষণ ও খুনে এবং পশ্চিমবঙ্গ নারীপাচারে দেশে শীর্ষস্থানে। সিপিএম শাসিত কেরালাতেও যৌন নির্যাতন, ধর্ষণের অভিযোগ উঠছে। নিজ নিজ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এই দলগুলি কেউই আন্দোলন করছে না। শুধু কি তাই? বিগত শতাব্দীর আশির দশকে পশ্চিমবাংলায় সিপিএম-এর শাসনকালে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন পুলিশী আক্রমণ চালিয়ে ভাঙতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু পারেনি। আন্দোলন জয়ী হয়েছিল। সেই আন্দোলনে এস ইউ সি আই (সি) এবং ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও সর্বশক্তি নিয়েই ছিল।
সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে অবিচল আন্দোলন
এ বারের আন্দোলনে বহু মতের, বহু পথের চিকিৎসক ছাত্র-ছাত্রীরা যুক্ত। বাইরের নানা স্বার্থান্বেষী শক্তি এই আন্দোলনকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা লাগাতার চালিয়ে গেছে। আন্দোলনের নেতৃত্ব তাতে এতটুকু বিভ্রান্ত না হয়ে যে দক্ষতার সঙ্গে আন্দোলনকে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছেন তা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সবাই জানেন, কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি ‘ছাত্রসমাজ’ নাম দিয়ে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়ে কার্যত দলীয় কর্মীদের নামিয়ে কলকাতা ও হাওড়া শহর জুড়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছিল। তাকে কাজে লাগিয়ে পর দিন ধর্মঘট ডেকে আন্দোলনের ব্যাপক জনসমর্থনকে দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলার মানুষের এই হীন রাজনীতি ধরতে অসুবিধা হয়নি। মানুষ দ্বিধাহীন ভাবে এই সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতিকে ধিক্কার জানিয়েছে। চিকিৎসক-নেতৃত্বও আন্দোলনে এই দলীয় অনুপ্রবেশকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। আবার পূর্বতন শাসক দল, যারা এই আর জি করেই একই রকম ভাবে নানা সিন্ডিকেট চালিয়েছে, যার পরিণতিতে এক ডাক্তারি ছাত্রকে খুন করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে, অতীতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে বারে বারে লাঠি চালিয়ে দমন করতে চেয়েছে, তারাও আন্দোলনের বন্ধু সেজে আন্দোলনকে সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে কাজে লাগাতে চেয়েছে। তাদের হাত থেকেও আন্দোলনের নিরপেক্ষতা রক্ষা করে নেতৃত্ব আন্দোলনকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এর সবটাই সম্ভব হয়েছে নেতৃত্বের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থাকার জন্য।
ডাক্তাররা ঘোষণা করেছেন, তাঁরা তাঁদের আন্দোলনের যে মূল লক্ষ্য– ধর্ষক ও খুনিদের সবাইকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও শাস্তি এবং কলেজ তথা হাসপাতালগুলিকে ভয়ের পরিবেশ থেকে মুক্ত করা, তা যত দিন না অর্জিত হচ্ছে তত দিন তাঁদের আন্দোলন চলবে। তাঁরা নাগরিক সমাজের আন্দোলনকে অব্যাহত রাখার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। আন্দোলনের পাশাপাশি রাজ্যের বন্যাদুর্গত এলাকাগুলিতে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা অভয়া ক্লিনিক খুলে বন্যার্ত মানুষদের চিকিৎসা, ওষুধ সরবরাহ প্রভৃতি কাজ চালাচ্ছেন।
জনগণের নিজস্ব কমিটি গড়ে তুলতে হবে
এই আন্দোলন দেশের মানুষের সামনে একটা বিরাট শিক্ষা রেখে গেল। ‘পিপলস পাওয়ার’ অর্থাৎ জনগণের শক্তি বলতে যা বোঝায় তা যে-কোনও দলের সংগঠিত শক্তির থেকে যে অনেক বেশি, তা প্রমাণ করে দিয়ে গেল। সচেতন, সংগঠিত জনশক্তিকে পুলিশ-মিলিটারি দমন করতে পারে না। বুর্জোয়া বিচারব্যবস্থাও তখন যা-খুশি রায় দিতে পারে না। অনেক সময় বাইরে থেকে দেখে মনে হয়, জনসাধারণ বোধহয় সব কিছু মুখ বুজে সহ্য করে যায়, প্রতিবাদ করে না। বাস্তবে শাসকের দুষ্কর্ম মানুষের মনে বিক্ষোভের বারুদ হয়ে জমতে থাকে। যে কোনও একটি স্ফূলিঙ্গে তাতে বিস্ফোরণ ঘটে যায়। আর জি করের আন্দোলন ঠিক সেটাই দেখিয়ে দিল। এর আগে দিল্লির কৃষক আন্দোলন দেখিয়ে দিয়েছিল সংগঠিত জনশক্তি কতখানি ক্ষমতা ধরে। কেন্দ্রের দোর্দণ্ডপ্রতাপ বিজেপি সরকার বাধ্য হয়েছিল সংগঠিত কৃষক আন্দোলনের কাছে মাথা নত করতে। বাংলাদেশের আন্দোলনেও একই জিনিস দেখা গেছে।
এ কারণেই এস ইউ সি আই (সি)-র প্রতিষ্ঠাতা, এ যুগের অন্যতম মহান মার্ক্সবাদী চিন্তানায়ক শিবদাস ঘোষ বার বার জনগণের নিজস্ব শক্তির জন্ম দেওয়ার কথা বলেছেন। তার জন্য জনগণের নিজস্ব কমিটি গড়ে তোলার কথা বলেছেন। বলেছেন, কোনও প্রতিষ্ঠিত দলের অঙ্গুলি হেলনে নয়, অন্ধের মতো কোনও দলকে সমর্থন করে নয়, জনগণের এই নিজস্ব কমিটিগুলি নিজেরা চিন্তা করবে, আলাপ-আলোচনা করবে, সিদ্ধান্ত নেবে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করবে। শাসক শক্তির সমস্ত অপকর্মের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে, তা প্রতিরোধ করবে। রাশিয়াতে বিপ্লবের আগে ঠিক এই জিনিসই ঘটেছিল। সেখানকার শ্রমিকরা, সৈনিকরা নিজস্ব শক্তি হিসাবে অসংখ্য সোভিয়েত গড়ে তুলেছিল। সেই সোভিয়েতগুলিই জারের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এখানেও তাই আন্দোলনে কিছু জয় অর্জিত হয়েছে মানে আন্দোলনের শেষ নয়। আন্দোলনকে দীর্ঘস্থায়ী করে শেষ পর্যন্ত জয় ছিনিয়ে আনতে সংগঠিত জনশক্তির জন্ম দিতে হবে, গড়ে তুলতে হবে জনগণের অজস্র কমিটি। এই কমিটিগুলি এক দিকে আশু দাবি নিয়ে আন্দোলন করবে, অন্য দিকে জনগণের উপর শাসকদের যে কোনও রকম আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলবে। এ পথেই আসবে জনতার জয়।
এস ইউ সি আই (সি) সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ আন্দোলনরত চিকিৎসকদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন, ডাক্তার হিসাবে আপনারা কোটি কোটি মানুষের কাছে সমাজ পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে যেতে পারেন। জুনিয়র ডাক্তার হিসাবে হাসপাতালগুলির বিপর্যস্ত পরিকাঠামো ও নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আপনারা যে ভাবে পরিষেবা দিয়ে মানুষের জীবন রক্ষা করেন, সেটা দৃষ্টান্তমূলক। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী– চিকিৎসা ব্যবস্থার এই টিমে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান এই ভগ্নদশা স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে অন্তত ধরে রাখতে সাহায্য করছে।
আমি চাই এই বিরাট গণআন্দোলন থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের যে অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা ও ভালবাসা আপনারা অর্জন করলেন, তা আগামী দিনে সমাজের সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের শক্তি হিসাবে জ্বলে উঠুক। আপনাদের মনুষ্যত্বের স্পর্শে যেন বহু মানুষের মনুষ্যত্ব প্রজ্জ্বলিত হয়। প্রাণই প্রাণের সঞ্চার করে, আগুনই আগুন জ্বালায়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এই আগুন জ্বালানোর ভূমিকা আপনারা গ্রহণ করুন।