‘‘কমিউনিজম সম্পর্কে নিছক কেতাবি জ্ঞান আয়ত্ত করতে যাওয়াটা হবে মস্ত বড় ভুল। কমিউনিজম সম্বন্ধে এতদিন ধরে যা কিছু বলা হত, আমাদের বত্তৃতা আর প্রবন্ধগুলোতে তার নিছক পুনরাবৃত্তি করলে হবে না। কারণ এখন আমরা যা বলছি ও লিখছি তা সমস্ত ক্ষেত্রে আমাদের দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে যুক্ত। কাজ না করে, সংগ্রাম না চালিয়ে কমিউনিস্ট বইপত্র আর পত্র-পত্রিকা থেকে পাওয়া কেতাবি জ্ঞানের কোনও মূল্য নেই। কারণ, এর ফলে, তত্ত্ব আর ক্রিয়ার মধ্যে যে ব্যবধান বহুকাল ধরে চলে আসছে, পুরোনো বুর্জোয়া সমাজেও যে ব্যবধান একটা মারাত্মক ক্ষতিকর ফাটলের মতো ছিল, সেটা রয়েই যাবে। …
পুরনো স্কুলগুলিতে শুধুমাত্র পুঁথিসর্বস্ব শিক্ষা দেওয়া হত। সেখানে ছাত্ররা একগাদা অকার্যকরী, অনাবশ্যক, নিষ্ফলা জ্ঞান মাথায় ঢোকাতে বাধ্য হত, যা মস্তিষ্কের চিন্তার শৃঙ্খলা নষ্ট করত এবং তরুণরা একটা বাঁধা ছকে তালিম পাওয়া আমলায় পরিণত হত। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, মানবজাতির আহরিত এবং সংগৃহীত জ্ঞানভাণ্ডার আয়ত্ত না করেই কমিউনিস্ট হওয়া যায়। এরকম সিদ্ধান্ত টানা মানে বিরাট ভুলের খপ্পরে পড়ে যাওয়া। যে সমস্ত জ্ঞানের সমন্বয় থেকে কমিউনিজমের উদ্ভব, সেগুলো আয়ত্ত না করে শুধুমাত্র কমিউনিস্ট স্লোগানগুলো শিখে নিলে এবং কমিউনিস্ট বিজ্ঞানের সিদ্ধান্তগুলো জেনে নিলেই কমিউনিস্ট হওয়া যায়, এমনটা ভাবা ভুল। মানবসভ্যতার যাবতীয় জ্ঞানের সমষ্টি থেকে কী ভাবে কমিউনিজমের উদ্ভব ঘটল, তা দেখিয়ে দিতে মার্কসবাদই হচ্ছে একটা দৃষ্টান্ত।”
– যুব লিগের কর্তব্য