কলকাতায় বিশাল যৌথ সমাবেশে কৃষক-শ্রমিকের যুক্ত আন্দোলনের ডাক

চাষির ফসলের এমএসপি আইনসঙ্গত করা, কালোবাজারি বন্ধ করে সস্তায় সার-বীজ-কীটনাশক ও সেচের ব্যবস্থা করা, খাদ্যশস্যের সর্বাত্মক রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু করা, গ্রামীণ শ্রমিকদের সারা বছর কাজ ও বাঁচার মতো মজুরি দেওয়া, কৃষকদের উপর থেকে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা, শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার হরণকারী চারটি কালা শ্রমকোড বাতিল করা ইত্যাদি একগুচ্ছ দাবিতে সংযুক্ত কিসান মোর্চা (এসকেএম) ও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ উদ্যোগে দেশের সমস্ত রাজধানী শহরে রাজ্যপাল ভবনের সামনে বিক্ষোভ, অবস্থান, ধরনা সহ নানা কর্মসূচি পালিত হল। গোটা দেশের কয়েক লক্ষ শ্রমিক ও কৃষক এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।

কলকাতায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ২৬ -২৭ নভেম্বর অবস্থান কর্মসূচির পর ২৮ নভেম্বর বিশাল সমাবেশ হয়। বক্তব্য রাখেন কৃষক ও শ্রমিক সংগঠনগুলির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এস কে এম-এর কেন্দ্রীয় নেতা ও অল ইন্ডিয়া কিসান-খেতমজদুর সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কমরেড শঙ্কর ঘোষ তাঁর বক্তব্যে বলেন, শ্রমিক-কৃষকের এই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ হল আন্দোলনের মঞ্চ, নির্বাচনী মঞ্চ নয়। ভারতের গণআন্দোলনের ইতিহাসে শ্রমিক ও কৃষককে নিয়ে গড়ে ওঠা এই যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ এক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। নিপীড়িত জনগণের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা বাস্তব পরিস্থিতিই আজ আমাদের এক মঞ্চে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। দিল্লির কৃষক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছে ৫০০ কৃষক সংগঠনের মিলিত সংগঠন ‘সংযুক্ত কিসান মোর্চা’। এই আন্দোলন আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন করে কৃষক-শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষিত হয় না, একমাত্র দীর্ঘস্থায়ী সংগঠিত গণআন্দোলনের পথেই পুঁজিপতি শ্রেণির স্বার্থে রচিত শ্রমিক-কৃষক বিরোধী কালাকানুন প্রত্যাহার করতে সরকারকে বাধ্য করা যায়। তাই চাই কৃষক-শ্রমিকের যুক্ত আন্দোলন।

রাশিয়ায় মহান লেনিনের নেতৃত্বে ও চিনে মহান মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বে শোষক শ্রেণির বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই লক্ষ্যেই আমাদের কৃষক-শ্রমিকদের এই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ আন্দোলন পরিচালনা করবে, এটাই ইতিহাসের দাবি। তিনদিনের এই কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন এ আই কে কে এম এস-এর রাজ্য সম্পাদক কমরেড গোপাল বিশ্বাস, রাজ্য কমিটির সদস্য কমরেড রঙ্গলাল কুমার ও কমরেড স্বপন দেবনাথ সহ সংগ্রামী শ্রমিক সংগঠন এ আই ইউ টি ইউ সি-র নেতৃবৃন্দ।