বীরভূম জেলার মুরারই লোকাল কমিটির প্রবীণ কর্মী কমরেড ফকিরুদ্দিন সেখ ২২ মে বার্ধক্যজনিত রোগে ৯০ বছর বয়সে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাঁর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। মুরারই লোকাল কমিটির সম্পাদক কমরেড গোলাম মুজতবা, লোকাল কমিটির সদস্য সহ এলাকার অন্যান্য কমরেড ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত হয়ে কমরেড ফকিরুদ্দিন সেখের মরদেহে মাল্যদান ও এক মিনিট নীরবতা পালন করে শ্রদ্ধা জানান।
কমরেড ফকিরুদ্দিন সেখ দারিদ্রের সাথে লড়াই করে জীবন অতিবাহিত করেছেন। মুরারই এলাকায় পার্টি গড়ে ওঠার প্রথম দিকে ১৯৬১ সালে তিনি প্রয়াত জননেতা কমরেড জিয়াদ আলি বক্সীর মাধ্যমে এ যুগের শ্রেষ্ঠ মাক্সর্বাদী চিন্তানায়ক কমরেড শিবদাস ঘোষের চিন্তার সংস্পর্শে আসেন ও দল গড়ে তোলার সংগ্রামে নিজেকে নিয়োজিত করেন। কমরেড জিয়াদ আলি বক্সীর ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা ও সাহচর্যে দলের সাথে তাঁর একাত্মতা গড়ে ওঠে এবং তিনি একজন নিষ্ঠাবান কর্মীতে পরিণত হন। নেতৃস্থানীয় সংগঠক কমরেড বকুল চৌধুরীর স্নেহময় রাজনৈতিক সাহচর্য তাঁকে বিকশিত করে তোলে। কমরেড সেখ মহান নেতা কমরেড শিবদাস ঘোষের অনেক মিটিং ও ক্লাসে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেই সময়ে কংগ্রেসি জোতদারদের আক্রমণের বিরুদ্ধে ও পরে সিপিএমের অত্যাচারের বিরুদ্ধে দৃঢ় সংগ্রামী ভূমিকা নিয়ে সাহস ও নিষ্ঠার সাথে তিনি দলের কাজ করে গিয়েছেন। ১৯৬৬ সালে ভুখা মিছিলে গ্রামের অন্যান্য মানুষের সাথে তিনিও অংশগ্রহণ করেন, নিজের গ্রাম দাঁতুড়া থেকে রামপুরহাট, ৪০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ পায়ে হেঁটে যান। দলের সমস্ত ধরনের আন্দোলনে তিনি নিয়মিত অংশ নিতেন। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত পার্টির চিন্তা বুকে বহন করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে দল হারাল নীরবে দল-অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাওয়া এক সংগ্রামী চরিত্রকে, এলাকার মানুষ হারাল তাদের প্রিয়জনকে।
প্রয়াত কমরেড ফকিরুদ্দিন সেখের বিপ্লবী জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ২০ জুন দাঁতুড়া গ্রামে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বক্তা ছিলেন দলের জেলা সম্পাদক কমরেড মদন ঘটক।
কমরেড ফকিরুদ্দিন সেখ লাল সেলাম