জীবনযন্ত্রণায় জর্জরিত দেশের মানুষ চাইছে খাদ্য, কাজ, বিদ্যুৎ৷ চাইছে রোগে ভুগে ভুগে মরার থেকে মুক্তি, আর দেশের প্রধানমন্ত্রী তাদের ভোলাতে শোনাচ্ছেন মহাকাশ যুদ্ধ, সেনাবাহিনীর ‘জোশে’র নানা কাহিনী৷ অসহায় মানুষ ভাবছে পেটে দুটো ভাত না পড়লে কোথায় পাব জোশ–শৌর্য–বীর্য? প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ওই উড়ছে রকেট, তাকিয়ে থাক, ভুলে যাবে খিদের জ্বালা৷ ‘পাকিস্তানকে মেরেছি’ এই নিয়ে সন্তুষ্ট থাক, কাজের কথা ভুলে যাও৷ মানুষ চাইছে মাথার উপর ছাদ– প্রধানমন্ত্রী শোনাচ্ছেন শৌচালয়ের কথা মানুষ চাইছে দুর্নীতির দমন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের যোগসাজশে বিদেশে পাড়ি দেওয়া প্রতারকদের নিয়ে নীরবই থাকছেন৷ মানুষ জানতে চেয়েছিল, বলুন প্রধানমন্ত্রী, রাফাল কেলেঙ্কারিতে, ওএনজিসির গ্যাস লুঠে, গুজরাট অয়েল করপোরেশনকে লুঠেরাদের হাতে ছেড়ে দিয়ে, তেল–গ্যাসের দাম যথেচ্ছ ভাবে বাড়িয়ে তাঁর বন্ধু কর্পোরেটদের কত টাকা পাইয়ে দিলেন? কোথায় গেল কালো টাকা ধরার প্রতিশ্রুতি? প্রধানমন্ত্রী ভুলে গেলেন কেন? কোথায় জবাব?
বিজেপি দলের ইস্তাহার প্রকাশ করে বলে দিলেন তিনি, আবার আমায় রাজা বানাও, ভোটের পর জবাবের কথা ভাবব সেই বই প্রকাশ করে অনেক কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু বললেন না, তাঁর নোট বাতিলের ফলে দেশের মানুষের কোন উপকারটি হল যে প্রসঙ্গ নিয়ে বিগত দু’বছর গলা ফাটিয়ে এলেন, তা নিয়ে ভোটের ইস্তাহারে তিনি একটা শব্দও খরচ করলেন না যেমন বললেন না, গো–রক্ষার হিড়িকে হাজার হাজার বেওয়ারিশ গবাদি পশু নিয়ে উত্তরপ্রদেশ–মধ্যপ্রদেশ-রাজস্থান-মহারাষ্ট্রের চাষিদের নাজেহাল হওয়ার কথা৷ বলেননি, আনন্দের উৎসব হোলির দিনে বিজেপি শাসিত হরিয়ানার গুরগাঁওতে যারা সংখ্যালঘু পরিবারের শিশুদের উপর হামলা চালিয়ে তাদের পাকিস্তানে চলে যেতে বলল, তাদের শাস্তি দিতে পুলিশের আগ্রহ নেই কেন? কেন, মহম্মদ আখলাক থেকে শুরু করে গোরক্ষার তাণ্ডবে নিহত মানুষদের একজন হত্যাকারীও শাস্তি পেল না? কেন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ আখলাকের পরিবারের সকলকে (তাঁদের এক পুত্র বায়ুসেনার কর্মী) পাকিস্তানে যেতে পরামর্শ দিলেন? কেন, বিজেপির সমালোচনা করার অপরাধে নিহত গোবিন্দ পানসারে, এমএম কুলবার্গি, গৌরী লঙ্কেশদের হত্যাকারীরা বুক বাজিয়ে ঘুরতে পারছে? এই হত্যাকাণ্ডগুলিকে সমর্থন করে প্রকাশ্যে উল্লাস জানানো একজন আজ বিজেপির প্রার্থী৷ তাহলে কি প্রধানমন্ত্রীর দলের সায় নিয়েই হত্যা, তা প্রধানমন্ত্রী মেনে নিলেন? কেন, সমঝোতা এক্সপ্রেস বিস্ফোরণ, হায়দরাবাদের মক্কা মসজিদের বিস্ফোরণ, আজমির শরিফের বিস্ফোরণে এনআইএ কোনও তদন্তই করল না? যে এনআইএ কার্যত প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর একজন মাত্র প্রিয়পাত্রেরই নিয়ন্ত্রণে, সেই সংস্থাকে তদন্তে বাধ্য করলেন না কেন তিনি? কোনও উত্তর নেই৷
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ অনেক আগেই স্বীকার করে নিয়েছেন, ২০১৪–র লোকসভা নির্বাচনে দেওয়া তাঁদের প্রতিশ্রুতিগুলি ছিল আসলে ‘জুমলা’ (মন ভোলানো কথা)৷ এমনিতেই বুর্জোয়া ভোটবাজ দলগুলির ভাবনায় বলে, দুটি ভাত জোগাড়ে মরিয়া কোটি কোটি অভুক্ত মানুষ একটু খাবারের আশাতেই আর সব কিছু ভুলে যায়৷ ফলে নেতারা ভাবেন, টাকার বান্ডিল, মদ আর কিছু পাইয়ে দেওয়ার মাধ্যমেই ভোট তাঁরা কবজা করবেন ঠিকই৷ সামান্য কিছু রোজগারের আশায় হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ানো কর্মহীন নিরুপায় যুবকদের দু–চারশো টাকা দেওয়ার খোয়াব দেখিয়ে, ভোটের প্রচারে কাজে লাগানোও যাবে, আরও কিছুদিন ধোঁকা দেওয়াও যাবে৷ এর উপর সাম্প্রদায়িকতা এবং জাত–পাত–ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষের হাতিয়ার তো আছেই৷ তাই ইস্তাহার এদের সকলের কাছেই নিতান্ত একটা মামুলি ব্যাপার৷ ইস্তাহার মানেই কিছু মধুমাখা বুলি, আর মিথ্যা, রঙীন স্বপ্নের জাল, একথা মানুষের জানা৷ তাই ইস্তাহার নিয়ে নেতারা যতই হইচই করুন না কেন, সাধারণ মানুষ তাতে বেশি মাথা ঘামান না৷ কিন্তু সেই ইস্তাহারেও ২ কোটি চাকরি, কৃষকের আয় দ্বিগুণ করা, বিকাশ, এমনকী নোটবাতিল, জিএসটির সাফল্য এসব নিয়ে বেশি শব্দ খরচ করতে ভয় পেয়েছে বিজেপি৷ নিজের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিগুলিই এখন তাড়া করছে বিজেপি নেতাদের৷ তাই পালিয়ে বাঁচতে তাঁরা মরিয়া৷
২০১৪ সালে ভারতীয় কর্পোরেট পুঁজির মালিক ধনকুবের গোষ্ঠীগুলি প্রায় একজোট হয়ে নরেন্দ্র মোদিকে প্রায় অবতার বানিয়ে মানুষের সামনে আনতে একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল৷ তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ যাতে আন্দোলনে ফেটে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে এদেশের একচেটিয়া মালিকগোষ্ঠী নরেন্দ্র মোদিকে তুলে ধরেছিল এক সুপার ম্যাজিসিয়ানের মতো করে, যার হাতে দেশের প্রায় সব সমস্যার চটজলদি সমাধান হাজির৷ কিন্তু দিন গড়িয়েছে, আর দিন দিন নরেন্দ্র মোদির স্বরূপ দেশের মানুষের সামনে ধরা পড়তে শুরু করেছে৷ দেশের মানুষ দেখেছে, বিজেপির আচ্ছে দিনে দেশের মোট সম্পদের ৭৭.৪ শতাংশ জমা হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ মানুষের হাতে৷ তাদের মধ্যে অতি ধনী ১ শতাংশেরই কুক্ষিগত মোট সম্পদের ৫১.৫৩ শতাংশ৷ ১১৯ জন ধনকুবেরের সম্পদ বেড়েছে ৩৯ শতাংশ হারে, আর নিম্নতম আয়ের ১৩ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষের রোজগার বেড়েছে মাত্র ৩ শতাংশ৷ এ দেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির সম্পদের পরিমাণ ২ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা যা কেন্দ্র এবং সমস্ত রাজ্য সরকারের চিকিৎসা, জনস্বাস্থ্য, শৌচাগার–নিকাশি ব্যবস্থা এবং জলবন্টন খাতে সম্মিলিত বরাদ্দের থেকে বেশি৷ আর্থিক বৈষম্যের দিক থেকে ভারত সবচেয়ে পিছনের সারির একজন৷ বিশ্বের শেষ ১১ দেশের মধ্যে স্থান হয়েছে নরেন্দ্র মোদির ‘আচ্ছে দিনের’ ভারতের (অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট)৷ তেল–গ্যাসের দাম বাড়াতে সাহায্য করে, মেক– ইন–ইন্ডিয়ার নামে অস্ত্র ব্যবসাতে ভারতীয় ধনকুবেরদের অবাধ সুযোগ করে দিয়ে মোদি সাহেব তাদের সম্পদ ফুলে ফেঁপে উঠতে সাহায্য করেছেন৷ তাদের ১০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ঋণের নামে ব্যাঙ্ক থেকে লুঠ করতে সাহায্য করেছেন৷ তাঁর প্রিয় ‘মেহুলভাই’, ললিত মোদি, নীরব মোদি থেকে তাঁদের সাহায্যে জেতা রাজ্যসভা সাংসদ বিজয় মালিয়ারা অবাধে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত সাধারণ মানুষের টাকা মেরে দিয়ে বিদেশে উড়ে গেছেন৷ ভোটের মুখে চলছে কিছু প্রত্যর্পণের মামলার নাটক৷ মানুষ জানে তাতে লুঠেরাদের কিছুই হবে না৷ তাই আজ মোদি ম্যাজিক দূরের কথা, মানুষের মনে প্রায় মোদি–আতঙ্ক চেপে বসেছে৷
এই পরিস্থিতিতে ২০১৯–এর ভোটের সামনে বিজেপি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে গো–রক্ষা, রকেট গবেষণা, রোবট টেকনোলজি ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে শব্দ খরচ করেছে অনেকগুলি৷ কিন্তু কর্মসংস্থানের কথা, চাষির আয়ের কথা, সার্বজনীন শিক্ষার কথা উঠতেই যেন ঢোক গিলেছে বিজেপির ইস্তাহার৷ তাঁদের লিখিত প্রতিশ্রুতি, কৃষিতে ২৫ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ তাঁরা আনবেন৷ কিন্তু বলা নেই, সে বিনিয়োগ করবে কে? বহুজাতিক সংস্থাগুলি কি? তাদের বিনিয়োগ মানে তো কৃষকের উচ্ছেদ, দাদনের কবলে জমি দিয়ে নিজে স্বাধীন কৃষক থেকে কৃষিমজুর বনে যাওয়া তার জন্য কৃষকরা বিজেপিকে ভোট দিতে যাবে কেন? বিজেপির ইস্তাহারের ভাষার জাল ভেদ করে একটু খঁুটিয়ে পড়লেই বোঝা যায়, তাদের পরিকল্পনা অনুসারে এই বিনিয়োগ আসলে হবে হাইটেক কৃষি প্রযুক্তি এবং রপ্তানি ভিত্তিক কিছু অর্থকরী ফসলের চাষে৷ আর বিনিয়োগ হবে আমদানি করা খাদ্য–ফসল ও তার প্রক্রিয়াজাত প্যাকেট বন্দি খাদ্য নিয়ে বহুজাতিকের ব্যবসায়৷ দেশের কোটি কোটি মানুষের খাদ্য ধান–গম–সবজি–ডাল তৈলবীজ যাঁরা ফলান, পরনের বস্ত্র তৈরির তুলো যাঁরা ফলান, সেই সব সাধারণ চাষিদের এতে লাভ দূরে থাক, তাঁরা চাষ থেকেই উচ্ছেদ হয়ে যাবেন বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার৷ যে যোজনায় আসলে লাভ হয় বিমা কোম্পানিগুলির৷ এখনকার অভিজ্ঞতাও বলছে, ফসল বিমা যোজনার নামে চাষিকে ভুল বুঝিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রিমিয়াম তোলে বেসরকারি বিমা কোম্পানিগুলি৷ আর চাষের ক্ষতি হলে, ক্ষতিপূরণ দূরে থাক সরকারি অফিসার, পঞ্চায়েতবাবুদের সাথে যোগসাজশে চাষির জন বরাদ্দ কেবল হয়রানি৷ বিজেপির ইস্তাহার জোর গলায় দাবি করেছে, তারা আবার ক্ষমতায় এলে চাষে রোবট টেকনোলজি, কৃত্রিম বুদ্ধি অর্থাৎ কম্পিউটার আনবে৷ এ দেশের কৃষকদের সাথে এক নির্মম রসিকতা করেছে বিজেপি৷ যেখানে একটু সাধ্যের মধ্যে সার–বীজ–সেচের বিদ্যুৎ–ট্রাক্টরের তেল পাওয়াটাই আসল কথা, জলের জোগান পাওয়াটাই প্রধান কথা, সেখানে কম্পিউটার প্রযুক্তির বাগাড়ম্বর নিয়ে চাষি করবেটা কী? উত্তরপ্রদেশ–মহারাষ্ট্রে বিজেপির সরকার, অথচ চিনি কল, মদের কারখানার মালিকরা আখচাষিদের ১২৭০০ কোটি টাকা মেরে দিয়েছে৷ উত্তরপ্রদেশের হিন্দুত্বের চ্যাম্পিয়ান মুখ্যমন্ত্রী চাষিদের পরামর্শ দিয়েছেন, আখ ছেড়ে অন্য কিছু চাষ করতে৷ তবু টাকা আদায় করে দেওয়ার কথা বলেননি৷ বিজেপির ইস্তাহার এবং প্রধানমন্ত্রীও এ নিয়ে নীরব৷ বিজেপি আমলে চাষির আত্মহত্যার সরকারি হিসাব চেপে দেওয়ার চেষ্টা সত্ত্বেও যতটুকু জানা যায় তাতেই দেখা যাচ্ছে বছরে গড়ে ১২ হাজার চাষি আত্মহত্যা করেছে৷ যদিও বাস্তবে সংখ্যাটা আরও বহুগুণ বেশি৷ সরকারের নির্দেশে পুলিশ চাষির আত্মহত্যাকে প্রায় সর্বত্রই পারিবারিক অশান্তিতে আত্মহত্যা বলে চালায়৷ নাসিকের পেঁয়াজ চাষি, মহারাষ্ট্রের তুলোচাষি, অন্ধ্র–তেলেঙ্গানা, তামিলনাডুর চাষি থেকে শুরু করে বাংলার আলুচাষিদের আত্মহত্যা– সব ক্ষেত্রেই সরকার সংখ্যা চেপে দেয়৷ তাতেও যেটুকু খবর, এই বছরেই প্রথম তিন মাসে ৭০০–র বেশি চাষি ঋণের জালে জড়িয়ে নিজের জীবন শেষ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন৷
নরেন্দ্র মোদি একটা রেকর্ড করেছেন, তাঁর পাঁচ বছরের রাজত্বে বেকারির হার বিগত ৪৫ বছরের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেছে৷ তিনি লেবার ব্যুরোর রিপোর্ট চেপে দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেই রিপোর্ট ফাঁস হতে দেখা যাচ্ছে, বিজেপির পাঁচ বছরের রাজত্বে দেশের ৭৭ শতাংশ পরিবার ভরণপোষণের উপযুক্ত রোজগারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত৷ এই পরিস্থিতিতে বেকার যুবকদের কাজের প্রতিশ্রুতি দিতে বিজেপির মতো মিথ্যার কারবারিরও আটকেছে৷ তাই ইস্তাহারে যুবকদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিতে গিয়ে বিজেপি নেতারা তাদের স্বনিযুক্তি প্রকল্প আর স্টার্টআপ শিল্পের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছেন৷ বিজেপির ইস্তাহার যুবকদের কার্যত বলে দিয়েছে, স্থায়ী কাজ, সরকারি খালি পদ পূরণ করা, বৃহৎ শিল্পে সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য আনার মতো বেতনের আশা তাদের ছাড়তে হবে৷ ২০১৪ থেকে ২০১৯ কাটিয়ে তাঁরা এবার সব প্রতিশ্রুতির পিছনে তারিখ বসিয়েছেন কোনওটায় ২০২২, কোনওটায় ২০২৪৷ সেই তারিখ চলে গেলে আবার একটা বসবে, বিজেপি জানে মানুষের স্মৃতি বড় দুর্বল এ যেন খেলার মাঠে জমিদার বাবুকে গোল করতে দেওয়ার জন্য গোলপোস্ট তুলে নিয়ে বলের পিছনে খিদমদগারের ছোটার গল্প
পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে বিজেপির নিজস্ব সংগঠন কিছুই নেই৷ চরম দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু নেতা, বিধায়ক–সাংসদ কেন্দ্রের ক্ষমতার দয়ায় নিজেদের পিঠ বাঁচাতে তৃণমূল, কংগ্রেস কিংবা সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে ভিড়েছেন, তারাই বিজেপি র ভরসা৷ সেই বিজেপি তাই দুর্নীতি নিয়ে কিছু বলবার মুখ রাখে না, তারা মুখে যতই যাই বলুক না কেন, ইস্তাহারের পাতায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লিখিতভাবে বিশেষ কিছু বলে নিজেদের বিড়ম্বনা বাড়ায়নি৷ তাহলে বিজেপির বাকি রইল কী? তাদের সম্বল যা দেখা যাচ্ছে গোটা প্রচারপর্ব থেকে ইস্তাহার সর্বত্র৷ তা হল বালাকোটে বিমানহানা, সেনাবাহিনীর ক্ষমতা আর সংখ্যালঘু বিদ্বেষ৷ মানেকা গান্ধী, গিরিরাজ সিং, সাক্ষী মহারাজ, যোগী আদিত্যনাথরা তো কথায় কথায় সংখ্যালঘু মানুষদের পাকিস্তানে পাঠাচ্ছেন৷ খোদ বিজেপি সভাপতি এনআরসি, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এমনভাবে প্রচার করছেন, যাতে মনে হয় সংখ্যালঘু মাত্রেই বিদেশি তিনি পশ্চিমবঙ্গ, আসামের মাটিতে দাঁড়িয়ে এমন ইঙ্গিতই করে গেছেন৷ আর প্রধানমন্ত্রী? তিনি বক্তৃতা দিয়ে বেড়াচ্ছেন, কিন্তু তাতে দেশের মানুষের কথা কোথায়? তিনি এখন, রাজস্থানের পোস্টারে শোভা পাচ্ছেন গুলির মালা গলায়, রাইফেল হাতে নতুন অবতার হিসাবে৷
বিজেপি ভুলে যাচ্ছে তারা মানুষকে যত বোকা ভাবছে, তারা তত বোকা নয়৷ ভোটেও সে কথা টের পাবে তারা৷