ভারতীয় অর্থনীতিতে এখন ‘সুপবন’ বইছে বলে মনে করেন শিল্পপতি গৌতম আদানি। তাঁর কথায়, ‘দেশের অর্থনীতিতে এর চেয়ে ভাল সময় কখনও আসেনি।’ তাঁর মতে, ‘অর্থনীতির চলতি গতি বজায় থাকলে আগামী এক দশকে প্রতি ১২ থেকে ১৮ মাসে এক লক্ষ কোটি ডলার যুক্ত হবে ভারতীয় অর্থনীতিতে। আর ২০৫০ সালে ভারতীয় অর্থনীতি ৩০ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছে যাবে।’
সম্প্রতি মুম্বইতে ক্রিসিল রেটিংসের ‘অ্যানুয়াল ইনফ্রাস্ট্রাকচার সামিট’ উপলক্ষে এক বত্তৃতায় কথাগুলি বলেছেন আদানি। ভারতীয় একচেটিয়া পুঁজিপতিদের শিরোমণি গৌতম আদানি তাঁর বক্তব্যে ভূয়সী প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস আমলে ১৯৯১ সালে নেওয়া অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমকে। বলেছেন, ‘যদি ১৯৯১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সময়টায় ভিত তৈরি ও রানওয়ে নির্মাণ হয়ে থাকে তা হলে ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সেই রানওয়েতে বিমান টেক-অফ করেছে।’ আদানির মতে, ১৯৯১ সাল ভারতীয় অর্থনীতির জন্য একটা বিরাট টার্নিং পয়েন্ট।
অর্থনীতিতে ভাল সময় মানে কী? সাধারণ মানুষের কাছে অর্থনীতির ভাল সময় মানে তো মানুষের হাতে কাজ, সংসার প্রতিপালনের উপযোগী বেতন, মাথার উপর একটা ছাদ, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের সুব্যবস্থা প্রভৃতি। আদানি বর্ণিত ভাল সময়ে কি এ-সব কিছু দেশের সাধারণ মানুষের কপালে জুটেছে? নাকি অর্থনীতি শুধু দেশের শিল্পপতি, পুঁজিপতি, বৃহৎ ব্যবসায়ীদের সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট? এঁদের অতি মুষ্টিমেয় সংখ্যাটা বাদ দিলে দেশের বাকি ৯৯ ভাগ সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই? দেখা যাক।
সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে, স্বাধীনতার পর গত পাঁচ দশকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সবচেয়ে তলানিতে পৌঁছেছে। স্থায়ী কাজ নেই বললেই চলে। সরকারি-বেসরকারি সব কাজই এখন চুক্তিভিত্তিক। মজুরি মালিকের ইচ্ছাধীন। শ্রম-সময় বলে কিছু নেই–আট ঘণ্টার পরির্বেত নয়, দশ এমনকি বারো ঘণ্টা পর্যন্ত খাটাচ্ছে মালিকরা। শিক্ষা-স্বাস্থ্যে সরকারি ব্যয় ক্রমাগত কমাতে কমাতে বেশির ভাগটাই এখন বেসরকারি এবং এর কোনওটিই এখন আর সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে নেই। যুব সমাজের একটা বিরাট অংশ গিগ কর্মী হিসাবে বাড়ি বাড়ি খাবার, পণ্য সরবরাহ করে, যাত্রী পরিবহণের কাজ করে। ২০২৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যাটা প্রায় আড়াই কোটিতে পৌঁছবে। অথচ এদের জন্য কোনও আইনানুগ কিংবা সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থাই নেই। ইউনিসেফের রিপোর্ট, ভারতে পাঁচ বছরের নীচে ৪০ শতাংশ শিশুই ভুগছে অপুষ্টিতে। বিশ্ব ক্ষুধাসূচকের সম্প্রতি প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ১২৫টি দেশের মধ্যে ভারতের জায়গা ১১১তে। ২০২০তেও যা ছিল ৬৬তে। শুধু তাই নয়, অর্থনীতির সময় আদানির মত অনুযায়ী যতই ‘ভাল’ যাচ্ছে, ততই সাধারণ মানুষ ক্রমাগত নিঃস্বে পরিণত হচ্ছে। এই মুহূর্তে দেশের মোট সম্পদের মাত্র তিন ভাগ আছে দেশবাসীর সবচেয়ে নীচের ৫০ ভাগ মানুষের হাতে। ফলে এই ভাল সময়ে সাধারণ মানুষের জন্য কী জুটেছে তা স্পষ্ট।
তা হলে গৌতম আদানি অর্থনীতির ভাল সময়ের যে কথা বলছেন, তাতে ভালটা কাদের হয়েছে? এই ভাল সময়টা আসলে এসেছে দেশের মুষ্টিমেয় একচেটিয়া পুঁজিপতিদের জীবনে, ধনিক শ্রেণির জীবনে। স্বাধীনতার আট দশকে সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থা যখন গভীর খাদে তলিয়ে যেতে বসেছে তখন দেশের এক শতাংশ পুঁজিপতির হাতে জমা হয়েছে দেশের মোট সম্পদের ৪০.১ শতাংশ।
গৌতম আদানির কথাই ধরা যাক। ১৯৮৮তে গুজরাটের একটি ট্রেডিং কোম্পানি হিসাবে আদানি গোষ্ঠীর পথ চলা শুরু। সেই রাজ্যে মোদির মুখ্যমন্ত্রীত্বের সময় থেকে গতি পেতে থাকে এই গোষ্ঠীর উত্থান। মোদির প্রধানমন্ত্রীত্বে তা উল্কার গতি নেয়। আজ একদিকে এই গোষ্ঠী যেমন বিশ্বে দ্বিতীয় ধনীর স্থানে উঠে এসেছে, তেমনই দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদের সিংহভাগ– তাপবিদ্যুৎ, সৌরবিদ্যুৎ, বায়ু বিদ্যুৎ, গ্যাস, পরিকাঠামো, বন্দর, বিমান বন্দর, লজিস্টি’, খনি, টেলিভিশন, ডিজিটাল সহ সব রকমের সংবাদমাধ্যম, ভোজ্য তেল, সিমেন্ট প্রভৃতি ক্ষেত্রগুলি এখন এই গোষ্ঠীর দখলে। স্বাভাবিক ভাবেই আদানির মতো ধনকুবেররা যে অর্থনীতিতে সুপবন দেখবেন এবং আর্থিক সংস্কারের জয়গান গাইবেন তাতে অবাক হওয়ার কী আছে!
গৌতম আদানির বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, কংগ্রেসের আর্থিক নীতি এবং বিজেপির আর্থিক নীতির মধ্যে যে কোনও পার্থক্য নেই, পরেরটা যে আগেরটা ধারাবাহিকতাতেই এসেছে, তা বুঝতে তাঁর অসুবিধা হয়নি। অসুবিধা হওয়ারও কথা নয়। কারণ তাঁর মতো একচেটিয়া পুঁজিপতিরাই কংগ্রেস এবং বিজেপি সরকারের আর্থিক সংস্কার নীতির ফলটি পুরোপুরি আত্মসাৎ করেছে। সাধারণ মানুষের একাংশ যথার্থ রাজনৈতিক চেতনার অভাবে পুঁজিপতি শ্রেণির শোষক-চরিত্র এবং সরকারগুলির পুঁজিপতি শ্রেণির সেবাদাসের চরিত্র ধরতে না পারায় বিচার করতে বসেন– এই সরকারটা ভাল আর ওই সরকারটা খারাপ। দেশের বামপন্থী দলগুলির বড় অংশেরও শ্রেণিচেতনা গোলমেলে হওয়ার কারণে একই ভুল হয়। তাই তারা অনায়াসে পুঁজিপতিদের একটি জোট এনডিএ-র বিরোধিতা করতে গিয়ে তাদেরই আর একটি জোট ইন্ডিয়াকে প্রগতিশীল ভেবে বসেন। যে ভুলটি পুঁজিপতিদের হয় না।
অর্থনীতিতে সংস্কার, আধুনিকীকরণ, বিশ্বায়ন প্রভৃতি কথাগুলি শুনতে বেশ ভাল মনে হলেও আসলে এগুলি দেশের মোট জনসমষ্টির কোন অংশের স্বার্থের কথা ভেবে সরকার নিয়ে এসেছে তা আদানির বক্তব্যেই স্পষ্ট। ১৯৯১ সালে নরসিমা রাওয়ের প্রধানমন্ত্রীত্বে কংগ্রেস সরকার এই আর্থিক সংস্কার নীতির আনুষ্ঠানিক সূচনা করে। আর্থিক সংস্কারের গতিমুখ হয়ে দাঁড়ায়– প্রাইভেটাইজেশন, লিবারালাইজেশন, গ্লোবালাইজেশন। সংস্কারের নামে তা আসলে ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিতে সরকারি মালিকানার বিলুপ্তি ঘটিয়ে সেগুলির বেসরকারিকরণ করা তথা পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়া। এটাই প্রাইভেটাইজেশন। পাশাপাশি লিবারালাইজেশন বা উদারিকরণের নামে তাদের মূল করণীয় কাজ ছিল শ্রমিক-কৃষক সহ সব স্তরের সাধারণ মানুষের জন্য শিক্ষা-চিকিৎসা সহ সামাজিক সুরক্ষাগুলিকে বিসর্জন দেওয়া। এ ছাড়া একচেটিয়া পুঁজি নিয়ন্ত্রণ আইন বিলোপ করা, শেয়ার বাজার মুক্ত করে, বিদেশি মুদ্রা আইন শিথিল করে দেশীয় সংস্থাগুলিতে বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া, মালিকদের হাতে ইচ্ছামতো শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সুযোগ তুলে দেওয়া, পুঁজিপতিদের আয়কর কমিয়ে দেওয়া এবং তাদের বকেয়া কর মকুব করে দেওয়া, লাইসেন্সের জন্য নানা দপ্তরের অনুমতি নেওয়ার নিয়ম বাতিল করা, ব্যাঙ্ক ঋণ মকুব করে দেওয়ার মতো একের পর এক সর্বনাশা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এগুলোর মধ্য দিয়ে শ্রমিক-কৃষক সহ জনসাধারণের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে বৃহৎ একচেটিয়া পুঁজিপতিদের বিদেশের বাজারে প্রতিযোগিতায় এঁটে ওঠার ক্ষমতা অর্জন করার উদগ্র লালসার কাছে আত্মসমর্পণের সরকারি নীতিই পাকাপোক্ত হয়।
রাষ্ট্রীয় একচেটিয়া পুঁজির দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে ততদিনে বিপুল পুঁজির অধিকারী হয়ে উঠেছে ভারতের একচেটিয়া পুঁজিপতিরা। বিদেশের বাজারে ঢুকে বিদেশি লগ্নিপুঁজির সাথে বোঝাপড়ার পূর্ণ সুযোগ গ্রহণ করা এবং সেই সাথে দেশের বাজারকেও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এনে সর্বোচ্চ মুনাফা লোটা তখন তাদের উদ্দেশ্য। সেই কারণে তারা সরকারের উপর চাপ দিতে থাকে যাতে গ্লোবালাইজেশনের নীতি নিয়ে এসে সরকার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজের উপর নিয়ন্ত্রণ শিথিল করে এবং লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ও আর্থিক সংস্থাগুলি তাদের হাতে তুলে দেয়। এক কথায়, গোটা ভারতীয় অর্থনীতিকেই তারা তাদের হাতে ছেড়ে দিতে বলে এবং ভারতীয় একচেটিয়া পুঁজির পলিটিক্যাল ম্যানেজার হিসাবে কাজ করা তখনকার কংগ্রেস সরকারও তাদের খুশি করতে ঠিক সেই মতোই অর্থনৈতিক নীতিগুলিকে ব্যাপক ভাবে বদলে ফেলে।
তার ফল হিসাবে দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে তা আজ সকলেরই জানা। দেশের যে জনসাধারণ ইতিমধ্যেই অশেষ দুর্গতির মধ্যে গলা পর্যন্ত ডুবে রয়েছে, এর ফলে তাদের উপর নতুন করে বিদেশি বহুজাতিক সংস্থা ও ভারতীয় একচেটিয়া শিল্পগোষ্ঠীর নির্মম শোষণ-নির্যাতন নেমে এল। এত দিনের চালু শ্রম আইনকে বদলে সরকার নতুন শ্রমকোড চালু করল। যার বলে ছাঁটাই, ওয়েজ ফ্রিজ, মজুরি সংকোচন, শ্রমিক-কর্মচারীদের অর্জিত সুযোগ-সুবিধাগুলি কেড়ে নিল মালিক শ্রেণি, বাড়িয়ে দেওয়া হল শ্রমিক-কর্মচারীদের শ্রমসময়। স্থায়ী কাজ বিলুপ্ত করে দিয়ে সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক কাজই রেওয়াজে পরিণত করে দেওয়া হল। বাড়িয়ে দেওয়া হল কাজের বোঝা। এমনকি শ্রমিক-কর্মচারীদের সংগঠিত হওয়ার, দাবি জানানোর অধিকারও কেড়ে নেওয়া হল। পরিণতিতে শোষণ মাত্রাতিরিক্ত আকার ধারণ করল।
এক দিকে বেসরকারিকরণের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত এবং জাতীয় সম্পত্তি ও সম্পদের অবাধ লুঠ, অন্য দিকে এই মাত্রাতিরিক্ত শোষণের ফল হিসাবে ভারতীয় বহুজাতিক পুঁজির মুনাফা ও সম্পদের পরিমাণ লাফিয়ে বাড়তে থাকল। এই যে লক্ষ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির গল্প শোনাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী কিংবা তাঁর প্রভু আদানিরা, সেই বিপুল সম্পদের মালিক তো এই এক শতাংশ পুঁজিপতিই। তাই ভারতীয় অর্থনীতির পরিমাণ ৫ লক্ষ কোটি হোক, ৭ লক্ষ কোটি হোক বা ৫০ লক্ষ কোটি হোক তার সঙ্গে দেশের ৯৯ ভাগ সাধারণ মানুষের জীবনের সম্পর্ক শুধু এইটাই যে, তাদের উপর সীমাহীন শোষণ-লুণ্ঠন চালিয়েই গড়ে উঠছে এই সম্পদ। আর পুঁজিপতি শ্রেণির তল্পিবাহক সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা এবং অর্থনীতির ভাড়াটে বিশেষজ্ঞরা এই এক শতাংশ পুঁজিপতির সমৃদ্ধিকেই দেশের সমৃদ্ধি বলে প্রচারের ঢাক বাজাচ্ছে।
এই অবস্থায় খুব স্বাভাবিক ভাবেই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ শোষিত-বঞ্চিত অর্ধাহার-অনাহারক্লিষ্ট মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। সেই ক্ষোভ প্রায়ই দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভের আকারে ফেটে পড়ছে। দিল্লি তথা উত্তর ভারত জুড়ে কৃষক আন্দোলন যার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। মানুষের এই ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভে ভীত শাসক শ্রেণি যে কোনও মূল্যে এই ক্ষোভকে চাপা দিতে বদ্ধপরিকর। বহুজাতিক সংস্থা ও দেশের একচেটিয়া গোষ্ঠীগুলির স্বার্থ সুরক্ষার জন্য ভারতীয় পুঁজিবাদী রাষ্ট্র দেশের মানুষের মধ্যে যে কোনও বিক্ষোভকে নির্মম ভাবে দমন করতে শোষিত জনতার গণতান্ত্রিক অধিকারের শেষ চিহ্নটুকু পর্যন্ত মুছে ফেলে নিজেকে নজিরবিহীন স্বৈরাচারী ক্ষমতায় সজ্জিত করে তুলছে। নিয়ে আসছে নিত্য-নতুন কালা আইন। পুরনো আইনগুলিকে আরও কঠোর করে তুলছে। পাশাপাশি, জনগণকে বিচ্ছিন্ন, অসংগঠিত ও অসচেতন অবস্থায় রেখে দিতে তারা সব ধরনের তমসাচ্ছন্ন, জরাগ্রস্ত ও প্রতিক্রিয়াশীল ধ্যান-ধারণাকেও উৎসাহ জুগিয়ে চলেছে। এর সামগ্রিক ফল হিসাবে রাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান ফ্যাসিবাদী ঝোঁক আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।
একচেটিয়া পুঁজির এই সর্বাত্মক আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে সঠিক শ্রেণিচেতনায় বলিয়ান হয়ে জনজীবনের জ্বলন্ত সমস্যাগুলি সমাধানের দাবিতে সঠিক নেতৃত্বে ব্যাপক গণআন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। তার জন্য সবার আগে প্রয়োজন, সমাজ যে দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত– একদিকে মুষ্টিমেয় শোষক পুঁজিপতি শ্রেণি এবং অন্য দিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ শোষিত শ্রমিক-কৃষক সহ সাধারণ মানুষ এবং ভারত রাষ্ট্রটিও যে একটি পুঁজিবাদী রাষ্ট্র, তা স্পষ্ট করে বোঝা। এই শ্রেণিচেতনার ভিত্তিতে শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার মধ্য দিয়ে গণসংগ্রামগুলিকে ক্রমাগত তীব্র করতে পারলেই একমাত্র এই আক্রমণকে রোখা সম্ভব।