প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্লাস নিয়ে শাসকদলের চূড়ান্ত দুর্নীতি এবং বেনিয়ম জনসমক্ষে বেরিয়ে এসেছে। আশা এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের উপর এই যোজনার সার্ভের কাজ একরকম জবরদস্তি চাপিয়ে দেওয়া হয়। আবাস যোজনার ঘর পাওয়া, না পাওয়া নিয়ে অন্যান্য রাজ্যের মতো এখানেও চরম দুর্নীতি আছে। যাদের ঘর পাওয়ার কথা তারা ঘর পায়নি, অথচ যাদের বাড়ি গাড়ি আছে তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এবং স্বজনপোষণ করে নিজেদের নামে ঘর নিয়েছে। এই কাজের সমীক্ষা যে প্রক্রিয়াতে হওয়া উচিত ছিল সেটা পরিকল্পিতভাবে এড়িয়ে গিয়ে সরকার নিজেদের দুর্নীতি আড়াল করতে ও পিঠ বাঁচাতে আশা-অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সামনে ঠেলে দিয়েছে। পরিণামে এলাকায় গিয়ে এই কর্মীদের জনরোষের মুখে পড়তে হচ্ছে। জেলায় জেলায় এই কর্মীরা শাসকদলের লোকজনদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের আটকে রাখা হচ্ছে, জনগণের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। তাঁরা পারিবারিক ক্ষতির মুখেও পড়ছেন।
স্কিম ওয়ার্কার ফেডারেশন এবং পশ্চিমবঙ্গ আশা কর্মী ইউনিয়ন ও ওয়েস্ট বেঙ্গল অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেল্পার্স ইউনিয়ন শুরু থেকেই আলাদা আলাদাভাবে প্রতিবাদে পথে নেমেছে। প্রতিটা জেলার ব্লকে ব্লকে হাজার হাজার কর্মী সমস্ত ভয় ভীতি হুমকি উপেক্ষা করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। বিক্ষোভ প্রদর্শন, আধিকারিকদের ডেপুটেশন দেওয়া, ঘেরাও, ইত্যাদি চলছে। সরকারি কোনও স্তরের আধিকারিক এই নির্দেশের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে পারছেন না। তাঁরা উপরতলার নির্দেশের অজুহাত দেখাচ্ছেন। বহু জায়গায় আধিকারিকরা কর্মীদের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিস ইস্যু করছেন। কিন্তু কোনও প্রকার ভয়ভীতিতে দমে না গিয়ে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা সেই সমস্ত শো-কজ নোটিসের উত্তর দিচ্ছেন। দাবি তুলছেন আশা এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দিয়ে তাঁদের নিজেদের দপ্তর বহির্ভূত কোনও কাজ করানো চলবে না, আবাস যোজনা প্লাসের সার্ভে করানো চলবে না ও ক্ষতিগ্রস্তদের অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সারা রাজ্যে স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলনে সরকারকে এবং জেলায় জেলায় আধিকারিকদের পিছু হটতে হয়েছে।
শুরুতেই সংগঠনের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল যে, কোনও ভাবেই এই কাজ এই কর্মীদের দিয়ে করানো চলবে না। বহু বাধা-বিপত্তি, হুমকি উপেক্ষা করেও কর্মীরা ১৫-১৬টি জেলাতে এই কাজ শুরুতেই বয়কট করেছেন। আন্দোলন এখনও চলছে। চূড়ান্ত দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।