ভারতের আর্থিক বৃদ্ধিকে কে-টাইপ বৃদ্ধি আখ্যা দিচ্ছেন পুঁজিবাদী অর্থনীতিবিদরাই। ইংরেজি কে-অক্ষরের মতো এক শ্রেণির মানুষ আর্থিক বৃদ্ধির সমস্ত সুযোগকে আত্মসাৎ করে ক্রমাগত ওপরের দিকে উঠে চলেছে, আরেক শ্রেণির মানুষ আরও দারিদ্রের অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। সমাজে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বাড়ছে।
বিশ্বজুড়েই পুঁজিবাদী দেশগুলিতে এই একই চিত্র। দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের যে বার্ষিক অনুষ্ঠান সম্প্রতি হয়ে গেল তার রিপোর্টে গোটা বিশ্বের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে এমন আশঙ্কাই উঠে এসেছে। অর্থাৎ আর্থিক বৃদ্ধি হচ্ছে, কিন্তু সেই বৃদ্ধির সুফল ভোগ করছে মুষ্টিমেয় অংশের মানুষ, ব্রাত্য থেকে যাচ্ছে সমাজের নিচের দিকের মানুষরা– যাঁরা জনসংখ্যার গরিষ্ঠ অংশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর ভক্তকুল দেশের উন্নতির যত ঢাকই পেটান এই ভয়ঙ্কর বৈষম্যকে আড়াল করতে তাঁরা পারছেন না, পারছেন না সংখ্যাগরিষ্ঠের আর্থিক দুর্দশা ঢাকতে।
এক একটা সমীক্ষা আসছে, তার রিপোর্ট মার্ক্সবাদের বক্তব্যকেই সত্য প্রমাণ করে দেখাচ্ছে যে, পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পরিশ্রমের ফসল লুঠ করেই মুষ্টিমেয়র সম্পদের পাহাড় গড়ে ওঠে। তাই এই ব্যবস্থায় সব মানুষের উন্নয়নের কথা ডাহা মিথ্যা এবং প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। এ সব সমীক্ষার বিশ্লেষণ এই সত্যেই উপনীত করে যে, পুঁজিবাদ সমস্ত মানুষের উন্নয়নে ব্যর্থ। এখানেই ঘুরে ফিরে আসে সমাজতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা, প্রমাণ হয় তার বিশ্বজনীন প্রাসঙ্গকিতা, যে সমাজে একজনের পরিশ্রমের ফসল আর একজন লুট করতে পারে না। শ্রমজীবী মানুষই সেখানে সমাজের সমস্ত সম্পদের মালিক।
(তথ্যসূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা–১৮-০১-২০২৪)