১৮৫৫ সালে ছোটনাগপুরের ভগ্না ডিহির মাঠ থেকে তৎকালীন অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে জনজাতি উপজাতি ও শোষিত নিপীড়িত মানুষকে সাথে নিয়ে সাঁওতাল বিদ্রোহের বীর সেনানী সিধু, কানহু, চাঁদ ভৈরবের নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিদ্রোহ। সেই বিদ্রোহে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গরিব মানুষ সামিল হয়েছিলেন তৎকালীন শাসক ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও জমিদার মহাজনদের শোষণের বিরুদ্ধে। হাজার হাজার মানুষ এই লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেন। শহিদ হয়েছিলেন সিধু কানহু। ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিদ্রোহ স্মরণে ৩০ জুন হুল দিবস পালিত হল রাজ্যের নানা স্থানে। বহু সংগঠন এই দিনটি মর্যাদার সাথে পালন করে।
সিধু কানহু মেমোরিয়াল অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ৩০ জুন হুল দিবস, পালিত হল কলকাতার সিধু কানহু ডহরে। সিধু কানহু-র প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। সমিতির সম্পাদক পরিমল হাঁসদা বলেন, ‘মূর্তি নগরী’ এই কলকাতা, অথচ কলকাতার সিধু কানহু ডহরে সিধু কানহু-র মূর্তি নেই। সমিতি ১৯৮৩ সালথেকে সরকারি উদ্যোগে এই মূর্তি প্রতিষ্ঠার দাবি করে আসছে। অবিলম্বে কলকাতা সহ রাজ্যের প্রতিটিজেলা সদরে সরকারি অর্থে সিদো কানহু-র মূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বক্তারা বলেন, আদিবাসীদের জমি-জল-জঙ্গলের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। কোনও অবস্থাতেই আদিবাসী ও গরিব মানুষকে তাদের অধিকৃত বা দখলকৃত জমি থেকে উচ্ছেদ করা চলবে না। দাবি করা হয়, ফরেস্ট রাইট অ্যাক্ট-২০০৬ সম্পূর্ণ রূপে লাগু করে সকল আদিবাসী ও চিরাচরিত বনবাসীদের অধিকৃত জঙ্গলের জমির পাট্টা দিতে হবে এবং কোনও অবস্থাতেই ‘সান্তাল পরগণাস টেনেন্সি অ্যাক্ট’ ও ‘ছোটনাগপুর টেনেন্সি অ্যাক্ট’ সহ অন্যান্য রাজ্যের আদিবাসীদের জমি রক্ষার আইন সংশোধনের নামে পাল্টে দেওয়া চলবে না।
হুল দিবস স্মরণে এ আই ডি এস ও-র মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা লোকাল কমিটির পক্ষ থেকে মাল্যদান ও শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন অনুষ্ঠান সংগঠিত হয় শ্যামলাপুর সিধু কানহু মূর্তির পাদদেশে।