জনস্বাস্থ্য ও মেডিকেল শিক্ষার বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জনমতের তোয়াক্কা না করে তৈরি করেছে ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন অ্যাক্ট৷ যার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত ন্যাশনাল মেডিকেল কাউন্সিল ভেঙে দেওয়া হয়েছে৷ তৈরি করা হয়েছে স্বৈরতান্ত্রিক ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন– যার বেশিরভাগ সদস্যই সরকারি আমলা এবং সকলেই সরকার মনোনীত৷ এর মাধ্যমে দেশের মেডিকেল শিক্ষা এবং জনস্বাস্থ্যকে সম্পূর্ণরূপে কুক্ষিগত করবে কেন্দ্রীয় সরকার৷
মেডিকেল শিক্ষার স্বাধিকার হরণকারী এবং জনস্বাস্থ্য ও মেডিকেল শিক্ষাকে কর্পোরেট পুঁজি নিয়ন্ত্রিত ব্যবসার লক্ষ্যে তৈরি এই দানবীয় কালা আইনের বিরুদ্ধে মেডিকেল সার্ভিস সেন্টার লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে৷ তারই ধারাবাহিকতায় ৯ নভেম্বর দিল্লিতে মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের উদ্যোগে একটি সর্বভারতীয় কনভেনশনের আয়োজন করা হয়৷
দিল্লি সহ দেশের ১৮টি রাজ্য থেকে মেডিকেল ছাত্র ও চিকিৎসক প্রতিনিধিরা কনভেনশনে যোগ দেন৷ তাঁরা এন এম সি–র বিরুদ্ধে জোরালো বক্তব্য রাখেন এবং এই কালা আইন বাতিলের দাবি তোলেন৷
কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট শল্যচিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের নেতা ডাঃ সুভাষ দাশগুপ্ত৷ বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে ছিলেন ডাঃ মৃদুল দাগা (দিল্লির মৌলানা আজাদ মেডিকেল কলেজের প্রফেসর ডিরেক্টর), ডাঃ সন্দীপ মিশ্র (দিল্লি এইমসের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক), ডাঃ তরুণ মণ্ডল (প্রাক্তন সাংসদ, জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা ও মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি), ডাঃ অশোক সামন্ত (হাসপাতাল ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক), ডাঃ কাফিল খান (উত্তরপ্রদেশ বিআরডি মেডিকেল কলেজের লেকচারার), ডাঃ বিজ্ঞান বেরা (মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের সর্বভারতীয় সম্পাদক)৷ এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ প্রদীপ ব্যানার্জী, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সজল বিশ্বাস এবং কোষাধ্যক্ষ ডাঃ স্বপন বিশ্বাস৷
এন এম সি বিরোধী আন্দোলন পরিচালনার জন্য এই কনভেনশন থেকে গঠিত হয় ন্যাশনাল অ্যাকশন ফোরাম এগেনস্ট ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন (এন এ এফ–এন এম সি)৷ সভাপতি নির্বাচিত হন তেলেঙ্গানার জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের নেতা ডাঃ সাত্তার খান, সম্পাদক হয়েছেন মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের কলকাতা জেলা সম্পাদক ডাঃ বিপ্লব চন্দ্র৷ এই কালা আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে দীর্ঘস্থায়ী শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান নবনির্বাচিত সম্পাদক ডাঃ বিপ্লব চন্দ্র৷
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সারা দেশজুড়ে এনএমসি বিরোধী দিবস পালন এবং মার্চ মাসের মাঝামাঝি দেশ জুড়ে সংগৃহীত স্বাক্ষর সংবলিত স্মারকলিপি নিয়ে পার্লামেন্ট অভিযানের ডাক দেয় নবনির্বাচিত কমিটি৷