এ রাজ্যে কর্মরত প্রায় ৪৮ হাজার পার্শ্বশিক্ষক সরকারি বঞ্চনার শিকার হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন৷ পূর্ণ শিক্ষকের মর্যাদা এবং সমকাজে সমবেতন কাঠামো চালু করার দাবিতে ‘পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চ’ লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে৷
ঐক্যমঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগীরথ ঘোষ ক্ষোভের সাথে বলেন, ১৫ বছরেরও বেশি সময় কাজে নিযুক্ত থাকলেও এবং এনসিটিই–র নির্দেশিকা অনুযায়ী পার্শ্বশিক্ষকরা সকলেই প্রয়োজনীয় ডিএলএড যোগ্যতা অর্জন করলেও আজও শিক্ষকের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না৷ তা ছাড়া নামমাত্র ভাতা যা দেওয়া হচ্ছে, তা বর্তমান মূল্যসূচকের সাপেক্ষে নিতান্ত সামান্য৷ ফলে তীব্র আর্থিক কষ্টে গত ৪ বছরে শতাধিক শিক্ষক মারা গিয়েছেন৷
ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঐক্যমঞ্চ ১১ নভেম্বর থেকে সল্টলেকে বিকাশ ভবনের পাশে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে৷ এই আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ১৭ নভেম্বর অবস্থান মঞ্চে যান এস ইউ সি আই (সি) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য৷ তিনি আন্দোলনকারীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, অন্য পেশার সঙ্গে শিক্ষকতার পার্থক্য আছে৷ শিক্ষাদানের মাধ্যমে ছাত্রদের জীবনে আলো জ্বালান শিক্ষকরা৷ তাই তাঁদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর৷ স্বাধীনতার এতদিন পরে সেই শিক্ষকদের পথে নামতে হচ্ছে৷ আবার পথে নামারও অনুমতি দেয়নি সরকার৷ হাইকোর্টে আবেদন করে আপনারা অবস্থানে বসেছেন, অনশন করছেন৷ এর আগে আপনাদের উপর লাঠিচার্জ হয়েছে৷ দেখা যাচ্ছে, কী রাজ্য, কী কেন্দ্রীয় সরকার– কেউই শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে পারে না বা শিক্ষকদের দাবি মেটাতে পারে না, অথচ উৎসবে দেদার টাকা ঢালতে পারে, পুলিশ–মিলিটারি খাতে বিপুল ব্যয় করতে পারে৷ কমরেড ভট্টাচার্য এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান৷
১৬ নভেম্বর পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে অবস্থান মঞ্চে যান ছাত্র সংগঠন ডি এস ও এবং যুব সংগঠন ডি ওয়াই ও–র প্রতিনিধিরা৷ অনশনকারীদের পুষ্পস্তবক দিয়ে সংহতি জানান যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কমরেড সুপ্রিয় ভট্টাচার্য এবং ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও কলকাতা জেলা সম্পাদক কমরেড আবু সাঈদ৷ তাঁরা দাবি জানান, অবিলম্বে পার্শ্বশিক্ষকদের সমকাজে সমবেতন দিতে হবে এবং তাঁদের শিক্ষকের পূর্ণ মর্যাদা দিতে হবে৷