কলকাতায় ডাঃ কাফিল খান, কনভেনশনে বিপুল সমাগম

ডাঃ কাফিল আহমেদ খানের কথা মনে পড়ে? ২০১৭ সালের ঘটনা৷ উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুরে বিআরডি মেডিকেল কলেজের শিশুবিভাগের অধ্যাপক ডাঃ কাফিল খানকে যোগী আদিত্যনাথ সরকার বরখাস্ত করে জেলে পুরেছিল৷ ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার এই হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থার টাকা না মেটানোয় তারা সরবরাহ বন্ধ করে দেয়৷ এর ফলে সরকারি হিসাবে ৭০টি শিশুর মৃত্যু সারা দেশে বিজেপিকে প্রবল সমালোচনার মধ্যে ফেলেছিল৷ সেই সময় ডাঃ কাফিল খান নিজস্ব টাকা খরচ করে কয়েকশো অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে কোনওক্রমে পরিস্থিতি সামাল দেন৷ বাস্তবে তাঁর ভূমিকার জন্যই বহু শিশুর প্রাণ বাঁচে এবং সরকারি অব্যবস্থার দিকটি প্রচারে আসে৷ এই অপরাধে সরকার তাঁকে গ্রেপ্তার করে ৯ মাস কারাগারে আটকে রাখে৷

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট তাঁর সাসপেনসন সম্পর্কিত তদন্ত ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে৷ তদন্ত কী হবে ভবিষ্যৎই বলবে৷ কিন্তু তাঁর পরিবার আজও প্রবল হুমকির মুখে৷

ডাঃ কাফিল খানের ওপর থেকে সাসপেনশন ও সমস্ত চার্জ প্রত্যাহারের এবং চিকিৎসক ও কর্মীদের  ওপর প্রশাসনিক সন্ত্রাস বন্ধের দাবিতে ২২ জুলাই কলকাতার রোটারি সদনে নাগরিক কনভেনশন আহ্বান করে মেডিকেল সার্ভিস সেন্টার৷

সভায় উপস্থিত হয়ে ডাঃ কাফিল খান বলেন, আমি শুধু একজন মুসলিম বলে নয়, যে কোনও ডাক্তার আজ ভারতবর্ষে যদি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন তাঁর পরিণতি হবে আমারই মতো৷ অপর্ণা সেন বলেন, ‘‘ভারতবর্ষে এমন সরকার চলছে যারা মানবশিশুকে বাঁচানোর প্রয়োজন মনে করে না, গোরুর প্রাণ বাঁচানোর জন্য মরিয়া৷’’ ডাঃ বিনায়ক সেন বলেন, ‘‘সিভিল সোসাইটিরই দায়িত্ব ভারতবর্ষে জাতপাত–ধর্মের নামে যে অন্যায় চলছে তার প্রতিবাদ করা’’৷ ডাঃ তরুণ মণ্ডল বলেন, ‘‘ভারতবর্ষে সংবিধান স্বীকৃত স্বাস্থ্যের মৌলিক অধিকারকে অবিলম্বে বাস্তবায়িত করতে হবে৷ এছাড়া বক্তব্য রাখেন  ডাঃ উদয় নারায়ণ সরকার (প্রখ্যাত কার্ডিও–থোরাসিক সার্জেন), অ্যাডভোকেট পার্থসারথি সেনগুপ্ত (কলকাতা হাইকোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী), ডাঃ অশোক সামন্ত প্রমুখ৷

(গণদাবী : ৭২ বর্ষ ১ সংখ্যা)