উত্তরপ্রদেশের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সম্পর্কে এক মহিলার কিছু বক্তব্য নিয়ে খবর করা এবং এ বিষয়ে টেলিভিশন চ্যানেলে বিতর্ক আয়োজন করায় চ্যানেল সম্পাদক সহ তিন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ৷
এই গ্রেপ্তারির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সম্পাদকদের সর্বভারতীয সংগঠন ‘এডিটর্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়া’ এক বিবৃতিতে বলেছে, পুলিশের এই আচরণ স্বেচ্ছাচারী এবং বেপরোয়া৷ এক্ষেত্রে আইনের স্বৈরতান্ত্রিক অপব্যবহার করা হয়েছে৷ এই পদক্ষেপ সংবাদমাধ্যমকে ভয় দেখানো এবং বাকস্বাধীনতা খর্ব করার অপচেষ্টা বলেই গিল্ড মনে করে৷
এক মহিলা সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন, যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে তাঁর ‘সম্পর্ক’ আছে৷ সেই সংবাদ নানা টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হয়৷ তারই একটি ভিডিও টুইটারে শেয়ার করার অভিযোগে পুলিশ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এফআইআর দায়ের করে নয়ডার সাংবাদিক প্রশান্ত কানোজিয়াকে গ্রেপ্তার করে লক্ষ্ণৌতে নিয়ে যায়৷ আটক করার প্রায় দু’দিন পরে তাঁকে গ্রেপ্তার হিসাবে দেখায় পুলিশ, যা সম্পূর্ণ বেআইনি৷ ‘নেশন লাইভ’ টিভি চ্যানেল এ নিয়ে প্যানেল বিতর্কের আয়োজন করায় চ্যানেলের প্রধান এবং সম্পাদককেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে৷ এডিটর্স গিল্ড বলেছে, ‘মহিলার দাবির সত্যতা আছে কি না তা ভিন্ন প্রশ্ণ৷ কিন্তু সেই সংবাদ টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো এবং তা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করার জন্য কারও বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানির মামলা দায়ের করা আইনের নির্লজ্জ অপব্যবহারের নজির’৷ পুলিশ ধারাগুলিকে জামিন অযোগ্য করে তোলার জন্য বহু মিথ্যা এবং অপ্রাসঙ্গিক অভিযোগ এনেছে৷ এর প্রতিবাদ করে গিল্ড বলেছে, তার মানহানি হয়েছে বলে কোনও ব্যক্তি অভিযোগ না জানালেও পুলিশ যেভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নিজে থেকে মামলা করেছে তা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও আইনের নিন্দনীয় অপব্যবহার৷
একই সাথে প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া উইমেনস প্রেস কোর, প্রেস অ্যাসোসিয়েশন সহ বহু সাংবাদিক সংগঠন বিজেপি সরকারের পুলিশের স্বৈরাচারী মনোভাবের নিন্দা করেছে৷
দি হিন্দু : ১০ জুন, ২০১৯