ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল বিশ্বভারতী

গরিষ্ঠসংখ্যক জনসাধারণকে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে গোটা দেশ জুড়ে শিক্ষার পন্যায়নের যে জোয়ার চলছে,সেই পথে হেঁটেই সম্প্রতি বিপুল ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ ভারতবর্ষ, এসএএআরকে(সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কোপারেশন) ভুক্ত দেশ এবং এসএএআরকে বহির্ভূত অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে ফর্ম পূরণ এবং ভর্তির ফি যথাক্রমে দ্বিগুণ,পাঁচগুণ এবং দশগুণ বৃদ্ধি করা হয়৷

এই চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হন বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী–গবেষকরা৷ বহুবার ডেপুটেশন দেওয়ার পর গত ২১ মে উপাচার্য সহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের সাথে আলোচনায় বসেন৷ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরেও কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সিদ্ধান্ত না জানতে পেরে সুবিচারের আশায় ছাত্রছাত্রীরা রাতভর অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন৷ ছাত্রদের ন্যায়সঙ্গত দাবি বিবেচনার পরিবর্তে পরের দিন,২২ মে সকালে রেজিস্ট্রার সহ কিছু শিক্ষক আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের ওপর চড়াও হন, এমনকি প্রতিবাদী ছাত্রীদেরও শারীরিক হেনস্থার শিকার হতে হয়৷ অধ্যাপক তথাগত চৌধুরী সহ কয়েকজন শিক্ষক অশ্লীল ভাষায় ছাত্রদের আক্রমণ করেন, ‘এই আন্দোলনে বাংলাদেশের ছাত্রদের থাকা অনুচিত এবং এর পিছনে বাংলাদেশের অবৈধ আর্থিক মদত আছে’ – এহেন সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক মন্তব্য করতেও শোনা যায় তাদের৷

রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সর্বস্তরের মেধাবী ছাত্রদের জন্য উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করে তোলাই যার লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল, সেখানে এই ধরণের ছাত্রস্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ কোনওভাবেই মেনে নেবে না গণতন্ত্রপ্রিয় সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা৷ ‘বিশ্বভারতী ছাত্রছাত্রী ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষের এই অশিক্ষকসুলভ নিন্দনীয় আচরণ এবং ছাত্র ঐক্যে ফাটল ধরানোর অপচেষ্টাকে তীব্র ধিক্কার জানানো হয়৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে দ্রুত বর্ধিত ফি প্রত্যাহার এবং দোষী শিক্ষকদের শাস্তির দাবিও জানান তাঁরা৷

(গণদাবী : ৭১ বর্ষ ৪২ সংখ্যা)