ফ্রান্সের বৃহত্তম বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়ন ‘কনফেডারেশন জেনেরালে দু ট্রাভায়েল’ (সিজিটি) এবার ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারীদের পাশে৷ গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্যারিসের রাজপথে পায়ে পা মিলিয়ে বিক্ষোভ দেখায় তারা৷
তিন মাস ধরে ফ্রান্সে লাগাতার চলছে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলন৷ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গত নভেম্বরে প্রথম পথে নেমেছিলেন হাজার হাজার মানুষ৷ ট্রাকচালকদের পোশাকের অনুকরণে তাঁদের পরনে হলুদ রঙের জ্যাকেট, যা থেকে এই আন্দোলনের নাম দাঁড়িয়ে যায় ‘ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলন’৷ দিনে দিনে জনজীবনের আরও নানা দাবি যুক্ত হয়েছে তাঁদের আন্দোলনে৷ দাবি উঠেছে ন্যূনতম মজুরি ২০ শতাংশ বাড়াতে হবে, আনতে হবে নারী–পুরুষের মজুরিতে সমতা৷ সরকারি পরিষেবার সুযোগ বাড়ানোর দাবিও তুলেছেন আন্দোলনকারীরা৷
ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনের নেতৃত্বে পরিচিত কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ত্ব বা দলকে দেখা যায়নি৷ সাধারণ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকেই উঠে এসেছে নেতৃত্ব৷ তাঁরা এলাকায় এলাকায় গণকমিটি গড়ে লড়াই সংগঠিত করে চলেছেন৷ ব্যাপক পুলিশি হামলা সত্ত্বেও আন্দোলনের রাস্তা ছেড়ে নড়েননি ফ্রান্সের বিক্ষুব্ধ মানুষ৷
ইতিমধ্যে জনবিক্ষোভে লাগাম টানতে আঞ্চলিক সরকারি কর্তৃপক্ষের হাতে বলপ্রয়োগের ক্ষমতা তুলে দিতে পার্লামেন্টে একটি কালা বিল পেশ করেছেন পুঁজিপতি শ্রেণির স্বার্থবাহী সাংসদরা৷ সাম্য–মৈত্রী–স্বাধীনতার মহান স্লোগান তোলা ফরাসি বিপ্লবের দেশে এ হেন দমনমূলক আইন আনার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে নতুন করে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সেখানকার সাধারণ মানুষ৷ তাই আন্দোলনের চাপে প্রেসিডেন্ট মাকরঁ কিছু কিছু দাবি মেনে নেওয়া সত্ত্বেও সমস্যায় জেরবার দরিদ্র, মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী, পেনশনভোগী, বেকার, ছোট ব্যবসায়ীরা আজও আন্দোলনের পথে৷
কর্পোরেট পুঁজিপতিদের স্বার্থবাহী মাকরঁ সরকারের পুলিশের হামলায় ইতিমধ্যে দশ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ কিন্তু পিছু হঠতে রাজি নন ফ্রান্সের মানুষ৷ এ দিনের বিক্ষোভেও পুলিশ ব্যাপক হামলা চালায়৷ সিজিটি–র পক্ষ থেকে ওই দিন দেশজোড়া ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়৷