কেরালার মানুষ আজ ভয়াবহ বন্যার কবলে৷ ইতিমধ্যেই ৪০টি শহর এবং শত শত গ্রাম বন্যার জলে ভেসে গেছে৷ ৩৯টির মধ্যে ৩৪টি জলাধার জলস্ফীতির কারণে খুলে দিতে হয়েছে৷ ফলে রাজ্যের ১৪টি জেলাই এখন জলের তলায় ডুবে আছে৷ সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা আলেপ্পি, এর্নাকুলাম, ত্রিশুর, কোট্টায়াম জেলার৷ ইতিমধ্যে সরকারিভাবে চার শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর এলেও, পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে মৃত্যুর মিছিল কোথায় থামবে তার ঠিক নেই৷
২০ লক্ষ মানুষ আশ্রয়হীন৷ জলবন্দি আরও কয়েক লক্ষ৷ জল নামার পরেও মহামারী ও খাদ্যাভাবে আরও কত প্রাণহানি ঘটবে তা কেউ জানে না৷ চাষবাস, মৎস্যচাষ সহ গ্রামীণ এলাকার জীবিকার সংস্থান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ শহরের মানুষও জীবিকা হারিয়েছেন৷ বন্যার একেবারে শুরু থেকেই কেরালায় এসইউসিআই(সি) দলের নেতা–কর্মীরা প্রাণের ঝুঁকিনিয়ে দুর্গত মানুষকে উদ্ধারের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন৷ দেশজুড়ে চলছে ত্রাণ সংগ্রহ এবং দুর্গত এলাকায় তা বিতরণের কাজ৷ কিন্তু রাস্তা ও রেল সংযোগ বহু জায়গাতেই বিচ্ছিন্ন থাকায় তাঁরা নৌকা, ভেলা সহ নানা যানবাহনের সাহায্য নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছানোর৷ ইতিমধ্যেই দলের মেডিকেল ইউনিট দুর্গত এলাকায় কাজ শুরু করেছে৷
বিপর্যয়ের ব্যাপকতা আন্দাজ করে যে দ্রুততায় সেনাবাহিনীকে উদ্ধারকার্যে নামানোর প্রয়োজন ছিল সে কাজে রাজ্য এবং কেন্দ্র উভয় সরকারই অনেকাংশে ব্যর্থ৷ প্রশাসনিক কর্তারা যে সব জায়গায় পৌঁছাতে ব্যর্থ সেখানেও কেরালার সাধারণ মানুষ, আন্দোলনের গণকমিটি সহ নানা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা যেভাবে ছুটে যাচ্ছেন তা খুবই প্রশংসনীয়৷
এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কেরালার দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নৈতিক কর্তব্যের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এসইউসিআই(কমিউনিস্ট)–এর স্বেচ্ছাসেবকরা দেশের প্রায় সমস্ত রাজ্যে ত্রাণ সংগ্রহ ও তা পাঠানোর জন্য সর্বশক্তিতে নেমে পড়েছেন৷পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে ত্রাণ তহবিলে অর্থ, ওষুধ, বেবিফুড ও নতুন জামা–কাপড় সংগ্রহ করে বন্যাদুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজে নেমেছেন দলের কর্মীরা৷
দলের রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে রাজ্যের প্রতিটি নাগরিক, বিভিন্ন ক্লাব, প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ সাহায্যে উদ্যোগ নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে৷
(৭১ বর্ষ ৪ সংখ্যা ২৪ আগস্ট, ২০১৮)