গতকাল (১৯ জুলাই) একটা জরুরি কাজে হঠাৎ কলকাতা যেতে হল৷ ধর্মতলা ঢোকার খানিক আগেই বাস থেমে গেল, কীসের নাকি অবরোধ হয়েছে৷ কলকাতা আসার এই এক ঝামেলা, বিরক্তি ধরে যায় একেবারে, যতবার আসি কোনও না কোনও হুজুগে ঠিক একটা মিছিল–অবরোধে পড়ি৷ তাড়া আছে বলে নেমে হাঁটতে শুরু করলাম৷ খানিক এগোতেই দেখি রাজভবনের সামনে লোকে লোকারণ্য৷ ছেলেদের সাথে প্রচুর মেয়েও স্লোগান দিচ্ছে পাশ–ফেল চালু করতে হবে বলে৷ এরকম দাবিতে কোনও রাজনৈতিক দল এতবড় বিক্ষোভ দেখাতে পারে? অবাক না হয়ে পারিনি৷ কাজ ভুলে দাঁডিয়ে পডেছিলাম কিছুক্ষণ৷ হঠাৎ দেখলাম একদল পুলিশ বেধড়ক লাঠিপেটা শুরু করল৷ আমি ভীতু মানুষ, আটকাতে এগিয়ে যেতে পারিনি, কিন্তু বিশ্বাস করুন, বুকের ভেতরটা কেমন যেন করছিল৷
আমার চেনা অন্তত সাতজন পুলিশে আছে৷ ওখানে দাঁডিয়ে আমি শুধু ভাবছিলাম, এদের ঘরে ছেলেপুলে, ভাইপো–ভাইঝি কিছুই নেই? হতভাগারা কাদের উপর লাঠি চালালো সত্যিই কি কিছু বোঝে না, নাকি উর্দি পরলে মাথা বিকিয়ে এক্কেবারে অমানুষ হয়ে যেতে হয়
চাকরি পাইনি বলে অনেক দুঃখ৷ কিন্তু আজ যা দেখলাম, না খেতে পেলেও এরকম চাকরি আমি করব না৷ পুলিশদের বলব, যে পদেই থাকুন, ভুলে যাবেন না আপনাদেরও ছেলেপুলে আছে৷ চাকরি না পেলে আপনার ছেলেমেয়েকেও টিউশন দিয়ে পডানোর মুরোদ হত না৷ আমার–আপনার ছেলেমেয়েদের হয়ে যারা বলছে তাদের উপরেও যদি লাঠি চালাতে হয়, মানুষ হয়েছেন কেন?
আপনাদের দলের অনেকে স্টেশনে আপনাদের কাগজ বেচে৷ কোনও দিন তাদের দিকে ফিরেও তাকাতাম না৷ কাল থেকে মনটা খারাপ হয়ে ছিল বলে আজ গিয়ে একটা কাগজ কিনলাম৷ সেখানেই আপনাদের ঠিকানা পেলাম৷ আপনারা এগিয়ে চলুন, আমার সাহায্য আপনারা পাবেন৷
মোহিত বৈদ্য
ই–মেলে প্রাপ্ত
(৭০ বর্ষ ৪৯ সংখ্যা ২৭ জুলাই, ২০১৮)