হাওড়ার বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি এক মাস পরেও পুনর্বাসন পায়নি। তীব্র গরম ও প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে ত্রিপল টাঙিয়ে তাঁরা দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁদের না আছে শৌচাগার, না আছে পানীয় জলের ব্যবস্থা। বিপর্যয়ের পরেই শাসক ও বিরোধী দলের নেতারা এলাকায় গিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। খবরের কাগজে তা ফলাও করে প্রচারিত হয়েছিল। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলি কোনও সুরক্ষা আজও পায়নি। প্রশাসন মুষ্টিমেয় কয়েক জনকে ১৫০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে দায় সেরেছে।
এই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে হাওড়া নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চ। মঞ্চের উদ্যোগে ১৭ এপ্রিল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পানীয় জল, শৌচাগার, রাস্তাঘাট, জলনিকাশি, বিদ্যুৎ এবং ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণের দাবিতে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। মঞ্চের অভিমত, এই বিপর্যয় ম্যানমেড। ভূমির ধারণ ক্ষমতার বেশি ময়লা চাপানোর ফলে এই বিপর্যয় ঘটেছে। অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে। প্রতিরোধ মঞ্চের নেতৃবৃন্দ বলেন, সাত দিনের মধ্যে দাবিগুলি পূরণ করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সরকার এবং প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি পালনের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারগুলি ১৪ মে নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চের নেতৃত্বে হাওড়া পুরপ্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়। ওই দিন বুকে পোস্টার ঝুলিয়ে পুরসভার ফটকে বিক্ষোভ দেখায় ভূমিধসে গৃহহারা পরিবারের সদস্যরা। গৃহহারারা অভিযোগ করেন, প্রশাসন তিন দিনের মধ্যে সব করে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও এখনও কিছুই করেনি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ৯৬টি পরিবার চরম সমস্যায় দিন কাটাচ্ছে। প্রবল বিক্ষোভের মুখে পুরসভার চেয়ারপার্সন ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
আন্দোলনের চাপে এলাকায় পানীয় জলের ব্যবস্থা হলেও বেশিরভাগ নাগরিক পরিষেবার ব্যবস্থা এখনও হয়নি। প্রতিরোধ মঞ্চের জেলা নেতৃত্ব উত্তম চ্যাটার্জী, কার্তিক শীল, মিতা হোড় এবং পুতুল চৌধুরীরা বলেন, সমস্ত দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
এই লেখাটি গণদাবী ৭৭ বর্ষ ৪১ সংখ্যা ২৩ – ২৯ মে ২০২৫ এ প্রকাশিত