এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ২৯ এপ্রিল এক বিবৃতিতে বলেন, এনসিইআরটি কর্তৃপক্ষ ভারতবর্ষের ইতিহাসের স্কুল সিলেবাস থেকে মোগল আমল ও দিল্লি সুলতানী আমলের সমস্ত বিষয় মুছে দিয়ে তার পরিবর্তে তথাকথিত হিন্দুত্ববাদী ভারতীয়ত্বের অনুসারী নানা রাজবংশের অধ্যায় যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান উদ্যোগ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে মহাকুম্ভকে। দুটি ‘জ্যোতির্লিঙ্গ, ‘চারধাম যাত্রা’ এবং ‘শক্তিপীঠ’-অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে হিন্দুত্ববাদী ধারণার সাথে যুক্ত ‘পবিত্র ভূগোল’ হিসাবে। এই হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপের আমরা তীব্র নিন্দা করছি। শিক্ষার গেরুয়াকরণের সুস্পষ্ট উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মোগল সম্রাট বাবরকে আক্রমণকারী হিসাবে বর্ণনা করা হলেও ইংরাজ শাসনকাল সম্পর্কে সে কথা বলা হয়নি।
ইতিহাস ইতিহাসই এবং তা যে কোনও ব্যক্তির পছন্দ-অপছন্দের ঊর্ধ্বে। কেউ চাইলেই কি ভারতের ইতিহাস থেকে ব্রিটিশ শাসনকাল মুছে দিতে পারে? সামাজিক বিকাশের ধারায় ইতিহাস এক অলঙ্ঘনীয় সত্য হিসাবে লিপিবদ্ধ এবং কোনও শাসক চাইলেই তা মুছে দিতে পারে না। এর মধ্য দিয়ে ছাত্রদের ঐতিহাসিক জ্ঞান থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে এবং ইতিহাসের বিকৃত ধারণা মনে গেঁথে দিয়ে তাদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে। শাসকগোষ্ঠীর হিন্দুত্ববাদী অ্যাজেন্ডাকে আরও তুলে ধরার জন্যই তা করা হচ্ছে।
এ দেশের শাসক বুর্জোয়া এবং তার সেবাদাসদের ঘৃণ্য রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডাকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে দেশের শিক্ষাবিদদের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করার জঘন্য চেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ করা এবং দেশের ছাত্র সমাজের স্বার্থ রক্ষার্থে এগিয়ে আসার জন্য দেশের সকল শিক্ষাপ্রেমী মানুষের কাছে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।