মাইগ্র্যান্ট লেবার বা পরিযায়ী শ্রমিক এখন শ্রমশক্তির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এআইইউটিইউসি এদের নিয়ে গড়ে তুলেছে অল ইন্ডিয়া মাইগ্র্যান্ট ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির উদ্যোগে ১১ ও ১২ এপ্রিল যথাক্রমে সাঁতরাগাছি ও খড়গপুর রেল স্টেশন চত্বরে আয়োজিত হল পরিযায়ী শ্রমিক সদস্য সংগ্রহ শিবির। ভিন রাজ্যের কর্মক্ষেত্র থেকে ফিরে আসা এবং এ রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যের কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশাপাশি স্টেশন সংলগ্ন হকার, দোকানদার, গাড়ি চালক সহ নানান ধরনের শ্রমজীবীদের মধ্যে এই শিবির প্রবল আকর্ষণ তৈরি করেছে।
ভিন রাজ্যে বেশ কয়েক মাস কাজ করে ফিরে আসা শ্রমিকদের কয়েক জন জানালেন তাঁদের বঞ্চনা ও মালিকি হেনস্থার করুণ কাহিনী। কেউ কেউ বললেন, আর বাইরের রাজ্যে কাজ করতে যাবেন না। আবার কেউ বললেন, বঞ্চনা সত্তে্বও তাঁদের আবার না গিয়ে উপায় নেই। কারণ নিজের রাজ্যে কাজ পাওয়া দুষ্কর। সপরিবারে অনাহারে-অর্ধাহারে থাকার চেয়ে বরং হয়রানির সম্ভাবনা জেনেও ভিনরাজ্যে যাওয়া অপেক্ষাকৃত শ্রেয়। ঈদ উপলক্ষে কিছুদিনের জন্য বাড়ি এসে পরিবারের সদস্যদের সাথে আবেগের সম্পর্কে থেকে বাইরে যেতে মন না চাইলেও কঠিন বাস্তবতার কারণে বুকের যন্ত্রণা নিয়েই চোখের জলে আবার ভিনরাজ্যে কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সংখ্যাও কম নয়।
সংগঠনের প্রচারপত্র ও শিবিরের স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে বিপদাপন্ন পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে এই সংগঠনের দাঁড়ানোর নানা ঘটনা জানার পর শ্রমিকরা আশার আলো দেখতে পান এবং সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ করেন। এই সদস্যরা কিছু দিনের মধ্যেই স্মার্ট আইকার্ড পাবেন।
উভয় শিবিরে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি পূর্বতন বিধায়ক জয়কৃষ্ণ হালদার ও সম্পাদক জয়ন্ত সাহা। বক্তারা পরিযায়ী শ্রমিক জীবনের জ্বলন্ত সমস্যাগুলি তুলে ধরার পাশাপাশি সেগুলির সমাধানে দলমত নির্বিশেষে শ্রমিকদের নিয়ে গঠিত সর্বভারতীয় ভিত্তিক একমাত্র রেজিস্টার্ড সংগঠন অল ইন্ডিয়া মাইগ্র্যান্ট ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য পদ গ্রহণ করে ধারাবাহিক ও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার উপরে গুরুত্ব আরোপ করেন। তাঁরা ২০ জুন কলকাতায় শ্রমমন্ত্রীর কাছে গণডেপুটেশনে পরিযায়ী শ্রমিকদের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
লেখাটি গণদাবী ৭৭ বর্ষ ৩৬ সংখ্যা ১৮ এপ্রিল ২০২৫ এ প্রকাশিত