শহিদ বসন্ত বিশ্বাস স্মরণ অনুষ্ঠান

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের আপসহীন ধারার শহিদ বসন্ত বিশ্বাস ১৯১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর দিল্লিতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অন্যতম প্রতিভূ বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জের ওপর বোমা নিক্ষেপ করেন। ১৯০৫ থেকে ১৯১১ বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের জোয়ার, ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকিদের আত্মদান বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলনে জোয়ার এনেছিল। আতঙ্কিত ব্রিটিশ সরকার তাই কলকাতা থেকে দিল্লিতে রাজধানী স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই স্থানান্তরের শোভাযাত্রাতেই বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর নেতৃত্বে উত্তর ভারতেও বিপ্লবী আন্দোলনের শক্তির জানান দিতে এই বোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনা করেছিল বিপ্লবী সংগঠনগুলি।

বসন্ত বিশ্বাস ছাড়াও সে দিন রাসবিহারী বসুর নেতৃত্বে এই কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন অবোধবিহারী, ভাই বালমুকুন্দ, আমিরচাঁদ প্রমুখ। ১৯১৩-তে লাহোরে অত্যাচারী শাসক গর্ডনের ওপর বোমা নিক্ষেপের কাজেও বসন্ত, বালমুকুন্দ প্রধান ভূমিকা নেন। ১৯১৪-র ফেব্রুয়ারিতে বসন্ত বিশ্বাস সহ অন্যেরা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। ১৯১৫-র ১১ মে পাঞ্জাবের আম্বালা জেলে বসন্ত বিশ্বাসের ফাঁসি হয়, অবোধবিহারী, বালমুকুন্দ, আমির চাঁদও এই মামলায় ফাঁসির দড়িতে শহিদের মৃত্যু বরণ করেন।

শহিদ বসন্ত বিশ্বাসের ১৩১তম জন্মদিবস উপলক্ষে ৬ ফেব্রুয়ারি মহাজাতি সদনে শহিদের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন করেছিল শহিদ বসন্ত বিশ্বাস স্মৃতিরক্ষা কমিটি। কমিটির সম্পাদক তরুণ বিশ্বাস, বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের পক্ষে গোপাল চক্রবর্তী, বিশিষ্ট নাগরিক অভিজিৎ রায়, গণদাবী পত্রিকার পক্ষে অঞ্জনাভ চক্রবর্তী প্রমুখ বসন্ত বিশ্বাস ও রাসবিহারী বসুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন ও স্বাধীনতা আন্দোলনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। নদীয়ার বাদকুল্লাতে বসন্ত বিশ্বাসের মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জানান বহু মানুষ।