কর্তৃপক্ষের অবহেলাই কেরালা-উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে আনল — এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)

এসইউসিআই(কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ১ আগস্ট এক বিবৃতিতে বলেন, কেরালার ওয়েনাড়ে ২৯ জুলাই মধ্যরাত্রে ভারী বর্ষণ ও ভয়াবহ ভূমিধসের কারণে শত শত মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। সংবাদমাধ্যমে মৃতের সংখ্যা যা বলা হচ্ছে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি এবং তা দ্রুত আরও বেড়ে চলেছে। ধ্বংসস্তূপ ও কাদার নিচে শত শত মানুষ চাপা পড়ে রয়েছেন, তাঁদের সকলকে হয়তো কোনও দিনই উদ্ধার করা যাবে না। দুটি জনপদের গোটা জনবসতি সম্পূর্ণ মুছে গেছে।

অরণ্যনিধন, খনন, পর্যটন ব্যবসার প্রয়োজনে বিশালাকার নির্মাণ সহ সরকারের জনস্বার্থবিরোধী নীতি পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। এর ফলে কেরালা রাজ্যটি বার বার প্রবল খরা, বন্যা, ভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের কবলে পড়ছে। ভঙ্গুর পশ্চিমঘাট পর্বতমালা এলাকার সমস্ত বাসিন্দা ওয়েনাড়ের এই বিপর্যয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদেরও যে কোনও সময়ে এই ধরনের বিপর্যয়ের শিকার হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আমরা দাবি করছি, ধসে আটকে পড়া মানুষের উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের বিপর্যয়ের সামনে আর না পড়তে হয়, সে জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক সতর্কতা ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। কর্তৃপক্ষের দোষে সৃষ্ট এই ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এ কথাও মনে রাখা দরকার যে, মানুষের প্রাণ ও প্রকৃতির সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারেরই। এ সম্পর্কে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব গ্রহণে রাজ্য সরকারকে অবশ্যই তৈরি থাকতে হবে এবং অবশ্যই সামগ্রিক কর্ম-পরিকল্পনা তৈরি ও তা রূপায়ণ করতে হবে। অরণ্যনিধন ও পর্যটনের নামে নির্মাণ অবিলম্বে সরকারকে বন্ধ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসন, যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও জীবিকার ব্যবস্থা করতে হবে। অবিলম্বে দুর্গতদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, আশ্রয় ও চিকিৎসা-সহায়তার ব্যবস্থাও সরকারকে করতে হবে। কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারই যাতে তাদের কর্তব্য যথাযথ ভাবে পালন করে, তার জন্য রাজনৈতিক দল ও জনপ্রতিনিধিদের সোচ্চার হতে হবে। সমাজের সর্বস্তরের সহৃদয় মানুষকে যুক্ত করে একটি সামগ্রিক বিপর্যয় মোকাবিলা ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।