ভয়াবহ মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল মানুষসরকারের হুঙ্কারই সার

 

১২ জুলাই এসইউসিআই(সি)-র নেতৃত্বে ত্রিপুরার আগরতলায় বিক্ষোভ

আলুর দাম এখন বাড়তে বাড়তে কিলো পিছু ৩৫ টাকা ছুঁই ছুঁই। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের এক যুগ অতিক্রান্ত। মুখ্যমন্ত্রীকে তাই চমক দিতে আগের মতো ক্যামেরা সাথে নিয়ে বাজারে যেতে হয় না। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ‘টাস্ক ফোর্স’ নামে যে কিছু তৈরি হয়েছিল, মানুষ ভুলতে বসেছে। এই ক’বছরে শুধু খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি যেখানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে তাতেই মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।

মানুষের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ আঁচ করে মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধের নামে নবান্নে বৈঠক হল, তার প্রচারও হল। দাম কমানোর সময় বেঁধে দেওয়া হল। হুঙ্কার উঠল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। এরপর কেটে গেল দিনের পর দিন। কাজের কাজ কিছু হল না। মানুষ জানে, দাম যদি একটু কমেও, দু’দিন পরেই আবার যে কে সেই হবে। আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির পিছনে যারা আছে, নির্বাচনী লড়াইয়ে তাদের কাছ থেকেই তো বন্ড আসে, ‘চাঁদা’ আসে। এক নির্বাচনের পর থেকে পরের নির্বাচন পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়ে তার কয়েক গুণ টাকা তারা পকেটে ভরবেই। না হলে কেন তারা জোগাবে নির্বাচনে লড়ার খরচ?

মাত্র কয়েকটি খাদ্যপণ্যের চার বছরের দর

পণ্য                  জুলাই ’২০         জুলাই ’২৪

চাল                  ৩২ টাকা             ৪৪.৬৪ টাকা

আটা                ২৭.৫৭ টাকা       ৩৮.১৮ টাকা

ডাল                 ১০৭ টাকা           ১৩১ টাকা

চিনি                 ৩৯.৭১ টাকা       ৪৫.৯৫ টাকা

নুন                   ১০.৫৭ টাকা       ২২.৩৮ টাকা

আলু                ২২ টাকা             ৩৫ টাকা

পেঁয়াজ            ২২ টাকা             ৪১ টাকা

টমাটো             ৩৭ টাকা             ৬২ টাকা

দুধ                   ৪১ টাকা             ৫৫ টাকা

সরষের তেল   ১০৭ টাকা           ১৩১ টাকা

সরকারি হিসাব অনুযায়ী প্রতিটি পণ্যের কেজি প্রতি দাম ধরে

এই তুলনামূলক হিসাব দেখাচ্ছে, মাত্র গত চার বছরে জিনিসপত্রের দাম কী হারে বেড়েছে! সরকারি হিসাব অনুযায়ী বাজারদর একরকম হয় আর বাস্তবে বাজারে মেলে তার থেকে অনেক বেশি দামে। তালিকা থেকে স্পষ্ট, নিত্যপ্রয়োজনীয় আরও বহু শস্য, শাক-সব্জি, মাছ-মাংস-ডিম যা বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যদ্রব্যের তালিকায় থাকা প্রয়োজন, সেই সমস্ত কিছুকে এই হিসাবের বাইরে রাখা হয়েছে। বুঝতে অসুবিধা নেই, বাজারদর অনুযায়ী কী ভীষণ মূল্যবৃদ্ধির বোঝা সাধারণ মানুষকে বইতে হচ্ছে এবং তা প্রতিদিন প্রতি বছর কীভাবে লাফিয়ে বাড়ছে।

এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ কী? কেন্দ্র বলে রাজ্য দায়ী, রাজ্য বলে কেন্দ্র। কখনও বলা হয়, অতিবৃষ্টিতে ফলন ভাল হয়নি তাই দাম বাড়ছে। কখনও বলা হয় বৃষ্টি ভাল না হওয়ায় ফলন ভাল হয়নি, তাই দাম বাড়ছে। কিন্তু একটু খুঁটিয়ে দেখলেই এই দাম বৃদ্ধির কারণটা বোঝা যাবে। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে, আনাজের যখন এত দাম তখন চাষিও নিশ্চয়ইভালদামপাচ্ছে? আসুন আমরা সে দিকটা একটু তাকিয়ে দেখি।

পণ্য               চাষির দাম (টাকা প্রতি কিলো)      বাজারের দাম (টাকা প্রতি কিলো)

কুমড়ো                           ১০-১১                                        ৩০-৪০

আলু                               ১৫                                               ৩৫-৪০

পটল                               ১৩                                               ৬০-৮০

পেঁপে                              ১২                                                ৫০-৬০

ঢেঁড়শ                             ১৫-২০                                        ৮০-১০০

ঝিঙে                              ১৫-২০                                        ৬০-৮০

কাঁচা লঙ্কা                       ৩৫-৪০                                        ১৫০-১৮০

বেগুন                             ২০-২৫                                        ১০০-১২০

About suphal