Breaking News

জাতীয় শিক্ষানীতি প্রত্যাহারের দাবি তুলুন সাংসদরা চিঠি সেভ এডুকেশন কমিটির

ফাইল ফটো

(অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রকাশ এন শাহ এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর বিরোধী দলের সাংসদদের উদ্দেশে নিম্নলিখিত চিঠিটি দেন)

২০২০ সালের ২৯ জুলাই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি চালুর ঘোষণা মাত্রই অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটি এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, সংসদে কোনও বিতর্ক-আলোচনা ছাড়াই গায়ের জোরে মন্ত্রিসভার অনুমোদনে এই শিক্ষানীতি পাশ করিয়ে নেওয়া হয়েছে। খসড়া শিক্ষানীতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের মতামত ও প্রতিক্রিয়াকে কোনও গুরুত্ব না দেওয়ায় সেটি সংশোধনও করা হয়নি। সেভ এডুকেশন কমিটি যে কারণে জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করে সেগুলি হলঃ

১) ভারতীয় সংবিধানে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার যে কাঠামো আছে, তার ভিত্তিকেই ধ্বংস করছে জাতীয় শিক্ষানীতি, ২) এই শিক্ষানীতি শিক্ষার বেসরকারিকরণ, কর্পোরেটকরণ, ডিজিটাইজেশন, কেন্দ্রীকরণ এবং গেরুয়াকরণ করার ষড়যন্ত্রমূলক ব্লু-প্রিন্ট, ৩) সংবিধানে শিক্ষা কেন্দ্র-রাজ্য যুগ্ম তালিকাভুক্ত। এই শিক্ষানীতির মাধ্যমে রাজ্যের অধিকার অস্বীকার করা হয়েছে। সাথে সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকদের স্বাধিকারে আঘাত করা হয়েছে, ৪) শিক্ষার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরিতে ব্যয়ভারের দায়িত্ব থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে হাত তুলে নেওয়ার অধিকার দিয়েছে এই শিক্ষানীতি। এর পরিণতিতে শিক্ষা বাজেটেও বরাদ্দ ক্রমশ কমবে, ৫) এই শিক্ষানীতি সাধারণ মানুষের স্বার্থের বিরোধী, ফলে সার্বজনীন নয়, ৬) এই শিক্ষানীতি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার মূলনীতির বিরোধী।

গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি ও তাদের জোটসঙ্গী বাদ দিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির কাছে সেভ এডুকেশন কমিটির দাবিগুলি সমর্থন করা এবং সেগুলি তাদের ইস্তাহারে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানানো হয়েছিল কমিটির পক্ষ থেকে। প্রতিটি দলকে এই জনবিরোধী শিক্ষানীতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। নির্বাচনী ইস্তাহারে ঘোষণা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যে, তাদের দল জিতলে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রত্যাহারে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।

নির্বাচনে বিজেপির শক্তি ক্ষয় হয়েছে। গঠিত হয়েছে জোট সরকার। বিরোধী দলগুলি এই সুযোগ ব্যবহার করে সংসদের উভয় কক্ষেই তাদের প্রতিবাদ ধ্বনিত করে এই শিক্ষানীতি প্রত্যাহারে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করুক, কমিটি চিঠিতে সেই আশা ব্যক্ত করেছে। কমিটি জানিয়েছে, এমনকি বিরোধীরা সংসদে এ বিষয়ে একটা নতুন প্রস্তাব পেশ করুন।

জাতীয় শিক্ষানীতির কেন্দ্রীকরণের কর্মসূচিকে আরও সংহত করার লক্ষ্যে তৈরি এনটিএ কর্তৃক নিট, ইউজিসি নেট পরীক্ষার সাম্প্রতিক ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং সিএসআইআর-নেট এবং নিট-পিজি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তে প্রমাণিত হল, শিক্ষাক্ষেত্রে এবং শিক্ষা প্রশাসনে কেন্দ্রীকরণে সেভ এডুকেশন কমিটির বিরোধিতা কতটা যুক্তিযুক্ত ছিল। কমিটি মনে করে, যদি জাতীয় শিক্ষানীতি সম্পূর্ণভাবে চালু করা হয়, তা হলে সারা দেশে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।