সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এস ইউ সি আই (সি)-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ৬ জুন নিম্নলিখিত বিবৃতি দিয়েছেন।
শাসক বুর্জোয়া শ্রেণি আরও একবার তাদের বিশ্বস্ত সেবাদাস বিজেপিকে নানা উপায়ে কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় বসানোর– যদিও কম শক্তি নিয়ে–বন্দোবস্ত করল। এ জন্য তারা বিজেপিকে বিপুল পরিমাণ টাকা, বশংবদ আমলাতন্ত্র ও কেনা-গোলাম সংবাদমাধ্যমের শক্তি জুগিয়েছে।
পাশাপাশি হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক প্রচারকে চরম উচ্চতায় নিয়ে গেছে। জাতপাতের বিভেদে ইন্ধন দিয়েছে। সব কিছু দেখেও সরকার মনোনীত নির্বাচন কমিশন নীরব দর্শক হয়ে এ সবে প্রশ্রয় দিয়ে গেছে। এই নির্বাচন আবার প্রমাণ করল, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ধুয়া বাস্তবে নিছক লোক-ঠকানোর একটি উৎকৃষ্ট উপকরণ। তবে দেশের জনগণের অবশ্যই অভিনন্দন প্রাপ্য। কারণ তাঁরা বিজেপিকে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা দেননি।
এই নির্বাচনে একটা ভয়াবহ ছবি দেখা গেল। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী বুর্জোয়া দলগুলি, বিশেষত বিজেপি গদি দখলের উদগ্র লালসায় কাদা-ছোঁড়াছুড়িতে, নোংরা ভাষা প্রয়োগে, এমনকি বিরুদ্ধপক্ষকে অশ্লীল আক্রমণে সকল সীমা ছাড়িয়েছে, শঠতা ও মিথ্যাচারের স্রোত বইয়ে দিয়েছে। এও প্রমাণিত হল, মহিমান্বিত বুর্জোয়া সংসদীয় গণতন্ত্র আজ একটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং তার জায়গা নিচ্ছে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার। সংস্কারবাদী বামপন্থী সোসাল ডেমোক্রেটিক শক্তি সিপিআইএম ঐক্যবদ্ধ বামপন্থী আন্দোলনের রাস্তা পরিত্যাগ করে বিকল্প বুর্জোয়া জোটের লেজুড়বৃত্তি করতে গিয়ে আরও একবার নিজেকে ধিক্কৃত করেছে।
জনগণকে বুঝতে হবে, কেবলমাত্র সরকার পরিবর্তন তাদের দারিদ্র্যপীড়িত জীবনে কোনও পরিবর্তন আনবে না, তেমনই যে জ্বলন্ত সমস্যাগুলি তাদের জীবনকে বিপর্যস্ত করছে, তারও কোনও সমাধান হবে না।
আজকের দিনের জরুরি প্রয়োজন হল, নির্মম বুর্জোয়া শোষণের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে সর্বহারা বিপ্লবী নেতৃত্বে এবং উন্নত সাংস্কৃতিক-নৈতিক মানের ভিত্তিতে শ্রেণিসংগ্রাম ও গণসংগ্রামগুলি গড়ে তোলা।