পাঠকের মতামতঃ প্রকৃত বিরোধী কারা

ভোট রাজনীতিতে প্রকৃত অর্থে বিরোধী কারা? শুধু পতাকার রং আলাদা হলেই আর মুখে বিরোধিতার ঝড় তুললেই কি বিরোধী হয়ে যায়? ভোটসর্বস্ব দলগুলির নেতারা নিজের স্বার্থ পূরণ করবার জন্য অন্য পাঁচটা ব্যবসার মতো রাজনীতিকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করে। আবার প্রয়োজন মতো দল বদলে নেয়, ঠিক যেমন এক ব্যবসা না চললে অন্য ব্যবসা ধরতে হয়। এঁদের একমাত্র লক্ষ্য গদিতে বসে জনগণের সম্পত্তির লুঠপাট চালানো। পুঁজির মালিকদের টাকা এঁরা নিয়ে ভোটে লড়েন, তারপর গদি পেলেই সেই মালিকদের সেবা করতে থাকে। সরকার মালিকদের পক্ষে কোনও বিল আনলে এইসব তথাকথিত বিরোধীরা লোকদেখানো বিরোধিতা করে। জিএসটির কথা ধরুন। কংগ্রেস চালু করতে চাইল, বিজেপি তখন তার ঘোরতর বিরোধী। আবার বিজেপি ক্ষমতায় বসেই চালু করে দিল। আসলে মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করবার সময় এরা সব একই নৌকার যাত্রী। এ ক্ষেত্রে মালিকের দরকার হয় একটি শক্তিশালী সরকার, যাতে তাদের সাধের বিলগুলি অনায়াসে পাশ করিয়ে নিতে পারে। তাই স্লোগান ওঠে এবার ৪০০ পার। আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতার বিরোধিতা করে তৃণমূল আবার নিজের রাজ্যেই আদানিকে ডেকে এনে ব্যবসার সুবিধা করে দেয়। সিপিএম দাবি করছে, তারা নির্বাচনী বন্ড থেকে টাকা নেয়নি। ক্ষমতায় থাকাকালীন এবং তারপরেও তারা কর্পোরেটের থেকে নিয়মিত চাঁদা পেয়েছে। আবার যারা বন্ডের টাকা নিয়েছে তাদের সাথে ইন্ডিয়া জোটে দিব্যি আছে। টাটাদের সুবিধা দেওয়ার জন্য সিঙ্গুরে অনেক কাণ্ড ঘটিয়েছেন তাঁরা। গোয়েঙ্কাকে সিইএসসি বিক্রি করে দিয়েছে জলের দরে তাঁরাই।

এক কথায়, এই দলগুলি সবাই মালিকের পক্ষে। বিরোধী একমাত্র জনগণ। কারণ ভোটে জেতে এই সব নেতারা, মানুষ প্রতিবারই হারে। তাই কোন দল কটা সিট পাবে এটা ভেবে আমাদের মাথা ভার করে লাভ কী? আমরা ভোট দিই মন্দির-মসজিদ তৈরি করে দেওয়ার জন্য নয়, আমাদের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের জীবন সুন্দর করবার জন্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কাজের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করবার জন্য। তাই নেতারা ভোট চাইতে এলে এই প্রশ্ন তাঁরা মানুষের ন্যূনতম প্রয়োজনগুলি মেটানোর ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

গৌতম দাস, মালদা