Breaking News

মানবসম্পদের উন্নয়নে পেছনের দিকে এগোচ্ছে মোদির ভারত

যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংক্রান্ত সমীক্ষার সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সের তালিকায় ভারতবর্ষের স্থান ১৩৪ নম্বরে।

আর্থিক বৈষম্য, দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান, দারিদ্র-বেকারি ইত্যাদির ভিত্তিতে দেশগুলিকে চারটি ভাগে ভাগ করে যে তালিকা করা হয়েছে, সেখানে চিন এবং শ্রীলঙ্কার স্থান যথাক্রমে ৭৫ এবং ৭৮-এ। এমনকি প্রতিবেশী ভুটান আর বাংলাদেশও ভারতের থেকে কিছুটা এগিয়ে ১২৫ আর ১২৯-এ বসেছে। কাজেই, নির্বাচনের আগে বিজেপি-র নেতামন্ত্রীরা যতই বিকশিত ভারতের কথা বলুন, মন্দির-মসজিদের কাজিয়ায় মানুষকে রুজিরুটির সমস্যা ভুলিয়ে রাখতে চান আর গদি দখলের জন্য ২০১৪ আর ২০১৯-এর মতোই মিথ্যে প্রতিশ্রুতির ঝুলি খুলে বসুন, এই রিপোর্ট আবারও দুইয়ে দুইয়ে চারের মতো পরিষ্কার দেখিয়ে দিচ্ছে, ক্ষমতার দশ বছরে দেশের কেমন ‘উন্নয়ন’ তাঁরা করেছেন।

করোনা অতিমারির ধাক্কা কাটিয়ে বিশ্বের নানা দেশের অর্থনীতি কতটা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে, বিভিন্ন সরকারি নীতির সুফল মানুষ কতটা ভোগ করছেন, এ সব খতিয়ে দেখতে করা হয়েছিল সমীক্ষাটি। দেখা গেছে, দেশে দেশে ধনী-গরিবের বৈষম্য যেমন কমার পরিবর্তে বেড়েই চলেছে, তেমনই ধনী দেশ আর গরিব দেশগুলোর মধ্যে আর্থিক ব্যবধানও ক্রমশ বাড়ছে। সারা বিশ্বের মোট বাণিজ্য-সম্পদের ৪০ শতাংশ জমা হচ্ছে মাত্র দু-তিনটি দেশের ভাণ্ডারে। ২০২১-এর তথ্য বলছে, ৯০ শতাংশেরও বেশি দেশের জিডিপিকে (মোট উৎপাদিত পণ্যের মূল্য) ছাপিয়ে গেছে মাত্র তিনটি বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানির পুঁজি। সমীক্ষার আওতায় আসা অর্ধেকেরও বেশি মানুষ মনে করছেন, নিজেদের জীবনের ভাল-মন্দের ওপর তাঁদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই, দেশের সরকারের নীতি প্রণয়নের সাথেও তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই।

একদিন সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসানে জনগণের জন্য-জনগণের দ্বারা পরিচালিত-জনগণের গণতন্ত্রের স্লোগান দিয়ে এই বুর্জোয়া ব্যবস্থার সুত্রপাত ঘটেছিল। বিশ্বজুড়ে মানুষের দুর্দশার ছবি প্রমাণ করে, বাইরের খোলসে ‘গণতন্ত্র’ শব্দটা টিকে থাকলেও, মুনাফাসর্বস্ব পুঁজিবাদ আজ দেশে দেশে সাধারণ মানুষকে শোষণ করার ক্ষেত্রে স্বৈরতন্ত্রই চালাচ্ছে।