যাদবপুরের ব়্যাগিং কাণ্ড প্রসঙ্গে এস ইউ সি আই (সি) রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য ১৬ আগস্ট শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে পাঠানো এক চিঠিতে বলেন, যাদবপুরের মতো দেশের প্রথম সারির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব়্যাগিংয়ের শিকার হয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা গোটা দেশের মনকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়ে গেছে। প্রখ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা কেমন করে ঘটতে পারল তা ভেবে আমরা বিস্মিত।
তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটে আসছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের না জানার কথা নয়। ব়্যাগিং বন্ধে সুপ্রিম কোর্ট এবং ইউজিসি-র সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটি ও অ্যান্টি ব়্যাগিং স্কোয়াড গঠন, প্রথম বর্ষের ছাত্রদের আলাদা ছাত্রাবাসে রাখা, ভর্তির পর পরই জুনিয়র ও সিনিয়র ছাত্রদের নিয়ে যুক্তভাবে ব়্যাগিং সম্পর্কে সচেতন করা ও তাদের মেলামেশার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ ব্যর্থ না হলে এই ছাত্রের মৃত্যু হত না। একে অপরাধমূলক অবহেলা ছাড়া আর কী বলা যেতে পারে? রাজ্য সরকারও এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য না থাকার ফলে এমন ঘটনা ঘটেছে এ কথাও গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ গত মে মাস পর্যন্ত উপাচার্য ছিলেন। আবার স্থায়ী উপাচার্য না থাকার ফলে যদি কোনও অসুবিধা হয়ে থাকে তার জন্য রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকার দায়ী। কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদলের মধ্যে কে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করবে সেই দড়ি টানাটানির ফলে রাজ্যের অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী উপাচার্যহীন অবস্থায় রয়েছে। ঘটনাপ্রবাহ থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে, ব়্যাগিংয়ের ফলেই যে ছাত্রটির মৃত্যু হয়েছে তা ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। এর তীব্র নিন্দা করেন তিনি।
চিঠিতে তিনি দাবি করেন, দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, ব়্যাগিং প্রতিরোধে সুপ্রিম কোর্ট ও ইউজিসির সুপারিশ বিশ্ববিদ্যালয়কে কার্যকর করতে হবে, রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব়্যাগিংয়ের মতো অসামাজিক ও অপরাধমূলক কাজ বন্ধের জন্য বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, শিল্পীদের নিয়ে কমিটি গঠন করে প্রচারমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।