কলকাতা : ৩০ জানুয়ারি কয়েক হাজার শ্রমিকের দৃপ্ত মিছিল কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে গিয়ে পুলিশের কর্ডন ভেঙে আইন অমান্য করে৷ নেতৃত্ব দেন এ আই ইউ টি ইউ সি–র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি কমরেড এ এল গুপ্তা এবং সম্পাদক কমরেড দিলীপ ভট্টাচার্য৷ শিলিগুড়িতে আইন অমান্যে এদিন পুলিশি আক্রমণে পাঁচ জন আহত হন৷
দেশজুড়ে শ্রমজীবী মানুষের জীবনে যে ঘোর সংকট নেমে এসেছে তার বিরুদ্ধে এ আই ইউ টি ইউ সি তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ মূল্যবৃদ্ধি রোধ, সার্বজনীন রেশন চালু, ন্যূনতম মজুরি মাসিক ১৮ হাজার টাকা, স্থায়ী কাজে ঠিকা শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ, আশা–আইসিডিএস– মিড–ডে মিল কর্মীদের সরকারি কর্মীর স্বীকৃতি, সম কাজে সম মজুরি, স্কিম ওয়ার্কারদের সরকারি কর্মীর স্বীকৃতি, ন্যূনতম পেনশন মাসে ৩০০০ টাকা প্রদান সহ ১২ দফা দাবিতে এবং ব্যাঙ্কে গচ্ছিত সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ কর্পোরেট মালিককে লুঠের সুযোগ করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আনা কালা এফ আর ডি আই বিল বাতিল ইত্যাদি দাবিতে ব্যাপক আন্দোলনে সামিল হওয়া ছাড়া শ্রমিক কর্মচারীদের বাঁচার কোনও পথ নেই৷ কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার শ্রম আইনকে ক্রমাগত মালিকদের স্বার্থে পরিবর্তন করছে, আইনভঙ্গকারী মালিকদের শাস্তি দূরে থাক তাদের হাতে আরও শোষণের অধিকার তুলে দিচ্ছে৷ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে বেসরকারি মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে৷ এ সবের প্রতিবাদে এআইইউটিইউসি সহ ১০টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা দেশব্যাপী আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গত ১০ আগস্ট দিল্লির বৈঠকে৷ তখনই জানুয়ারি মাসে আইন অমান্যের কর্মসূচি গৃহীত হয়৷ ভারতের সমস্ত রাজ্যে এই আইন অমান্য হলেও পশ্চিমবঙ্গে সিটু সহ অন্যান্য কিছু সংগঠন এই সময় আইন অমান্য করতে না চাওয়ায় এ আই ইউ টি ইউ সি এককভাবেই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে কার্যকর করে৷
মিছিলের শুরুতে এ আই ইউ টি ইউ সি নেতৃবৃন্দ আন্দোলনকে আরও তীব্র করার ডাক দেন৷ সরকারি চাকরিতে লক্ষ লক্ষ শূন্যপদ বিলোপের প্রতিবাদ জানান তাঁরা৷
শিলিগুড়ি : একই দাবিতে ওই দিন শিলিগুড়িতেও আইন অমান্য করা হয়৷ কাঞ্চনজংঘা স্টেডিয়াম থেকে শ্রমজীবী মানুষের সুসজ্জিত মিছিল হাসপাতাল মোড়, হাসমিচক, হিলকার্ট রোড হয়ে এস ডি ও অফিসের দিকে এগোনোর চেষ্টা করলে বিরাট পুলিশ বাহিনী মিছিলের গতিরোধ করে৷ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তাধ্বস্তিতে এ আই ইউ টি ইউ সি দার্জিলিং জেলা সম্পাদক কমরেড ক্ষিতীশ রায় সহ ৫ জন আন্দোলনকারী আহত হন৷ পুলিশ ছয় শতাধিক আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করে৷ আইন অমান্যে নেতৃত্ব দেন কমরেডস অভিজিৎ রায়, শংকর গাঙ্গুলী, সামসের আলী, নাসের মহম্মদ, ক্ষিতীশ রায়, জয় লোধ প্রমুখ৷