বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও বর্ষা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মাটিতে ছিঁড়ে পড়ে থাকা বিদ্যুৎবাহী তার কিংবা অসুরক্ষিত বাতিস্তম্ভের সংস্পর্শে আসার ফলে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে।
২৭ জুন কলকাতার হরিদেবপুরে ১১ বছরের এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় বিদ্যুৎ গ্রাহক সংগঠন অ্যাবেকার পাঁচ জনের এক প্রতিনিধিদল মৃতের বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। স্থানীয় থানা ও কাউন্সিলারের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও লাইন মেরামতির দাবি জানান তাঁরা।
পর দিন বাঁকুড়ার ঝাঁটিপাহাড়ীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অ্যাবেকার এক সদস্য প্রাণ হারালে সংগঠনের বাঁকুড়া জেলা নেতৃত্ব মৃতের পরিবারের সাথে দেখা করেন এবং বিদ্যুৎ দপ্তরে ডেপুটেশন দিয়ে বাঁশের খুঁটিতে বিদ্যুতের তার পরিবহণের প্রতিবাদ জানান।
২ জুলাই বাঁকুড়া শহরের ভূতেশ্বর গ্রামে রাস্তায় মাটিতে ছিঁড়ে পড়ে থাকা বিদ্যুৎবাহী তারে গৃহবধূ পার্বতী ঘোষ এবং স্থানীয় বিদ্যুৎ গ্রাহক অনঙ্গমোহন ঘোষ মারা যান। গ্রাহক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পরিবারগুলোর সাথে দেখা করেন। স্থানীয় প্রশাসন মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয়।
ওই দিনই হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় দক্ষিণ গঙ্গারামপুরে ছেঁড়া তারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যান সুব্রত মণ্ডল। অ্যাবেকার প্রতিনিধিরা উলুবেড়িয়ায় বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির ডিভিশনাল ম্যানেজারের কাছে ডেপুটেশন দিয়ে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পরিষেবার সঠিক মানের দাবি জানান।
ওই দিনই কলকাতার রাজাবাজারে বৃষ্টির জমা জলে বাতিস্তম্ভের সংস্পর্শে এসে ১৩ বছরের ছাত্র মহম্মদ ফারজান আনসারির মৃত্যুর খবর পেয়ে অ্যাবেকার এক প্রতিনিধিদল মৃত ছাত্রের পরিবারের সাথে দেখা করে সমবেদনা জানান।
ধারাবাহিক ভাবে ঘটে চলা এই ধরনের দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে অ্যাবেকার সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বিশ্বাসের নেতৃত্বে সংগঠনের কলকাতা জেলা কমিটি ৫ জুলাই কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র-ইন-কাউন্সিল, লাইটিং অ্যান্ড ইলেকট্রিসিটি এবং সিইএসসি কর্তৃপক্ষের কাছে ডেপুটেশন দেয়। মেয়র-ইন-কাউন্সিল দাবিগুলির যৌক্তিকতা স্বীকার করেন এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
অ্যাবেকা কলকাতা জেলা সভাপতি শিবাজী দে-র নেতৃত্বে জেলা সম্পাদক নীরেন কর্মকার, আশীষ দণ্ড ওই দিনই সিইএসসির সদর দপ্তরে স্মারকলিপি দিলে কর্তৃপক্ষ রক্ষণাবেক্ষণ ও নজরদারির ত্রুটির কথা স্বীকার করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন।