প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, তাঁর সরকারের আর্থিক নীতি নিয়ে প্রশ্ন যাঁরা তুলছেন, তাঁরা সব ‘পেশাদার নৈরাশ্যবাদী’৷ তাঁর সরকার কোন আশাবাদটি দেশের মানুষের সামনে নিয়ে এসেছে? তাঁর সরকারের দ্বিতীয় দফার প্রথম বাজেটেই যে নীতির পরিচয় মানুষ পেয়েছে, তা আশাবাদ না নির্জলা মিথ্যার কারবার? ভোটের সময় প্রতিশ্রুতির ফোয়ারায় বিশ্বাস করে কেউ যদি ভেবেও থাকেন, এবার অন্তত মানুষের জীবনের জ্বলন্ত সমস্যাগুলি সমাধানের দিকে নজর দেবে সরকার– অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের পেশ করা কেন্দ্রীয় বাজেট দেখে তাঁরাও হতাশ৷ নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির বোঝা ছাড়া এই বাজেটে সাধারণ মানুষের প্রাপ্তি কিছুই নেই৷
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেকখানি নেমে যাওয়া সত্ত্বেও সরকার পেট্রোল–ডিজেলের উপর ২ টাকা করে শুল্ক এবং সেস চাপিয়েছে, যা লিটার পিছু প্রায় আড়াই টাকা করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে৷ এই বোঝা জিসিপত্রের দামবৃদ্ধির আকারে সোজা এসে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে চাপবে৷ বিগত সরকারে মোদিজি বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ বাস্তবে তাঁর শাসনে বেকারি ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ হয়েছে৷ এবার বোধহয় প্রতিশ্রুতির বিড়ম্বনা এড়াতেই চাকরির ব্যাপারে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি সীতারামনজি৷ তা বলে কি বাজেটে কেউই কিছু পায়নি? অবশ্যই পেয়েছে৷ না, সাধারণ মানুষ নয়, দেদার পেয়েছে দেশের একচেটিয়া পুঁজিপতি শ্রেণি৷ আয়কর কমিয়ে দেওয়া হয়েছে দেশের ৯৯.৩ শতাংশ কর্পোরেট সংস্থার৷ রাষ্ট্রায়ত্ত সব সংস্থাগুলিকে পিপিপি মডেলের নামে (পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ) পুঁজিপতিদের ভেট দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী৷ রেল সহ প্রতিটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাতেই পুঁজিপতিদের বিনিয়োগের জন্য আহ্বান করা হয়েছে৷ সাধারণ মানুষের মুখের সামনে অবশ্য একটি হৃষ্টপুষ্ট গাজর ঝুলিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ কোন সে গাজর?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছেন ২০২৪–২৫ সালের মধ্যে ভারতের অর্থনীতির বহর এখনকার ২.৬১ লক্ষ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যাবেন তিনি৷ তাতে সাধারণ মানুষের কী লাভ হবে? এ নিয়ে তাঁর নিজের বা তাঁর মন্ত্রী–পারিষদ দলের কোনও উত্তর নেই৷ প্রশ্ন তো উঠবেই যে ২০ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি নিয়ে ট্রাম্প সাহেব যখন বেকার সমস্যায় হাবুডুবু খাচ্ছেন, জাপান, জার্মানি, থেকে ইংল্যান্ড ভারতের থেকে বড় অর্থনীতি নিয়েও দেশের বেশিরভাগ মানুষের চাকরি, বাসস্থান সহ ন্যূনতম দাবি মেটাতে জেরবার, সেখানে নরেন্দ্র মোদি সাহেবের হাতে নিছক অর্থনীতির বহর বাড়িয়ে মানুষের সমস্যা সমাধানের কোন ম্যাজিক মজুত? এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেই ‘নৈরাশ্যবাদী’!
মোদি সরকারের প্রথম দফার শাসনে আর্থিক সংকট চরমে পৌঁছেছে৷ হিসেবের কারসাজি করেও জিডিপি (মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন) বৃদ্ধির হার তলানিতে নেমেছে৷ ৭ লক্ষের উপর কলকারখানা নতুন করে বন্ধ হয়ে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক এক বছরে কর্মচ্যুত হয়েছেন৷ প্রতি বছর হাজার হাজার সর্বস্বান্ত কৃষকের আত্মহত্যা সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ সরকার কৃষিঋণ মকুব নিয়ে টালবাহানা করছে৷ ফসলের ক্ষতি পূরণ করে দিয়ে বাঁচাবার বদলে সরকার তাদের ঠেলে দিচ্ছে বিমা কোম্পানির খপ্পরে৷ সাধারণ মানুষের জন্য তেলের দাম বেড়েছে, জিএসটির হাত ধরে বেড়েছে বেশিরভাগ জিনিসের দাম৷ ২০১৭ সালে বিজেপি সরকার করপোরেটদের করছাড় দিয়েছিল ৮৫ হাজার কোটি টাকার বেশি৷ শিল্প উৎপাদন বাড়েনি, বাড়েনি পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার৷ এই যখন জ্বলন্ত সমস্যা– তখন কোন পথে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে ভারত পৌঁছাবে, সেই প্রশ্ন তুললেই নৈরাশ্যের কারবারি হয়ে যেতে হবে?
নরেন্দ্র মোদির ‘আশাবাদটি’ কেমন? কেন্দ্রীয় বাজেটের আগের দিন প্রকাশিত আর্থিক সমীক্ষার রিপোর্টে সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সুপারিশ করেছেন, দেশের মানুষকে নিখরচায় ইন্টারনেট ডাটা ব্যবহারের সুযোগ দিলেই বাড়বে কর্মসংস্থান! না, পরিহাস নয়৷ রীতিমতো আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় সরকারি আর্থিক সমীক্ষা এই রকম আরও মণি–মুক্তো সাজিয়ে দিয়েছে দেশের মানুষের জ্ঞাতার্থে৷
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাহেবের বহু–চর্চিত নোট বাতিল করে কালো টাকা ধরার আস্ফালন থেকে তাঁর অর্থনৈতিক কাণ্ডজ্ঞানের পরিচয় দেশের মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন৷ কিন্তু তাঁর ‘আশাবাদের’ সাথে তাল মিলিয়ে নিজের চাকরি রক্ষার্থে আর্থিক উপদেষ্টা মশাই যা বলেছেন তাতে দেশের মানুষের চোখ আরও কপালে ওঠার জোগাড়৷ বলেছেন, একটু ধর্মভয় দেখালেই সব ট্যাক্স ফাঁকিওয়ালারা একেবারে সুড়সুড় করে কর দিয়ে দেবে৷ অবশ্য, আদানি–আম্বানি–বিড়লা– থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর অতিপ্রিয় ‘মেহুল ভাই’ কিংবা নীরব মোদি, বিজয় মাল্য সাহেবরা পর্যন্ত কর ফাঁকি আর মন্দিরে উদার ‘বিনিয়োগ’ একই সাথে চালিয়ে যান কোন ‘ধর্মবুদ্ধিতে’ সেটা বলা নেই যেমন বলা নেই, প্রবল রাম ভক্তের ভেকধারি বিজেপি লোকসভা ভোটে কালোটাকাকেই আশ্রয় করল কোন ধর্মবুদ্ধিতে?
হিসাব করার পদ্ধতি পর্যন্ত পাল্টে দিয়েও সরকারি সমীক্ষাও এবছর আর্থিক বৃদ্ধির হারকে ৬ শতাংশের উপরে দেখাতে পারেনি৷ ভারি শিল্প, খনি, পরিকাঠামো ইত্যাদি যে সমস্ত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান হয় তার সবগুলিতে যে মন্দা, সে কথা অর্থমন্ত্রী চেপে যেতেই চেয়েছেন৷ কিন্তু কিছু ‘আশাবাদের’ রেখা তো দেখাতে হবে তাই আর্থিক সমীক্ষা থেকে বাজেট সর্বত্র সরকারের বক্তব্য, বেসরকারি লগ্নি বাড়লেই তৈরি হবে কর্মসংস্থান৷ দেশের শ্রমজীবী মানুষের গড় বয়স কম থাকার জন্য তারা বেশি করে কাজ করবে আর তাতেই লগ্নির পরিবেশ তৈরি হয়ে যাবে কিন্তু অর্থনীতির রোগ সারাবার জন্য সরকারি কর্তারা যে ওষুধটি সুপারিশ করছেন, তা পাওয়া যাবে কোথায়? দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে৷ ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে কোনও শিল্পজাত দ্রব্যেরই বাজার নেই৷ পরিকাঠামো শিল্প ধুঁকছে৷ এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগই বা আসবে কোথা থেকে আর কর্মসংস্থানই বা হবে কোথায়? সরকার রপ্তানি বাড়াবার নিদান হেঁকে রোগ সারাতে চেয়েছে৷ কিন্তু একই সাথে সরকারের আর্থিক সমীক্ষাই জানিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে যে মন্দা চলছে তাতে রপ্তানি বাড়বার আর কোনও উপায় আপাতত নেই৷ বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে অনেক আশা দেখাচ্ছে সরকার৷ কিন্তু সে বিনিয়োগ কি আদৌ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে? সরকারের রিপোর্টই বলছে বেশিরভাগ বিদেশি বিনিয়াগ আসছে শেয়ার মার্কেটের ফাটকা কারবারে, নতুন কোনও শিল্পে নয়৷ অর্থাৎ এই বিনিয়োগের সাথে দেশে কর্মসংস্থান বাড়া বানতুন কলকারখানা খোলার কোনও সম্পর্কই নেই৷ এই বিদেশি বিনিয়োগের একটা বড় অংশ আসলে সিঙ্গাপুর, মরিশাসের মতো ট্যাক্সছাড়ের স্বর্গ বলে পরিচিত দেশগুলিতে ঘুরে আসা নিখাদ ভারতীয় পুঁজি৷ এ দেশের পুঁজিপতিরা প্রথমে ওইসব দেশে কিছু লোকদেখানো কোম্পানি খুলে বিনিয়োগ দেখায়, তারপর সেই পুঁজিকেই বিদেশি পুঁজি হিসাবে ভারতে বিনিয়োগ করে৷ ভারত সরকারের সাথে এই সমস্ত দেশের চুক্তির সুযোগ নিয়ে তাদের কর মকুব হয়ে যায়৷ এগুলি কোনও নতুন বিনিয়োগ তো নয়ই, বরং বড়সড় ধোঁকাবাজি৷
আজ কৃষিক্ষেত্রের প্রধান সংকট চাষির ফসলের লাভজনক দাম না পাওয়া৷ সে সংকট মেটানোর ব্যবস্থা হবে কোথা থেকে? কৃষিক্ষেত্রে দেশি–বিদেশি বৃহৎ পুঁজির বিনিয়োগ চাষিকে কোনও সুরাহা দেওয়া দূরে থাক তাদের যে আরও বেশি বেশি করে অসহায় অবস্থার দিকেই ঠেলে দিচ্ছে তা মহারাষ্ট্রের তুলো চাষিদের আত্মহত্যার মিছিলেই প্রমাণ হয়৷ তা হলে দাঁড়ালো কী? দেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষিক্ষেত্রে যুক্ত, তারা বাঁচবার মতো আয় করার সুযোগটুকুও পাচ্ছে না৷ গ্রামীণ এলাকার মানুষ দলে দলে সামান্য কিছু কাজের আশায় শহরে ভিড় করছে৷ সেখানেও কাজ নেই৷ শ্রমিকদের মধ্যে ৯০ শতাংশ নিয়োজিত অসংগঠিত শিল্পে, যেখানে সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি তো দূরের কথা, যা জোটে তাতে দুবেলা একটা পেট ভরাবার মতো টাকাও হাতে থাকে না৷ সংগঠিত শিল্প–ক্ষেত্রে, সরকারি চাকরিতে, রেল ইত্যাদিতে বেশিরভাগ চুক্তিভিত্তিক ঠিকা শ্রমিক দিয়েই কাজ চলছে৷ তাদের মজুরি যেমন সামান্য কাজের নিশ্চয়তাও নেই৷ এর সাথে যুক্ত হবে দেশের বিপুল বেকারবাহিনী৷ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির স্বীকারোক্তিতেই তা প্রায় ৬৬ কোটি৷ এদের বিশেষ কোনও রোজগার নেই৷ তা হলে দেশের শিল্প–কারখানায় উৎপাদিত জিনিস কিনবে কে? দেশের বেশিরভাগ মানুষের যদি ক্রয়ক্ষমতাই না থাকে তাহলে শিল্পে বিনিয়োগ করবে কোন পুঁজিমালিক?
তাহলে কোন ম্যাজিকে ৬ বছরের মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ৫ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছাবে? আর যদি পৌঁছেও যায়, তাতে দেশের মানুষের কোন উপকারটি হবে? সরকার যখন বলে আর্থিক বৃদ্ধি হচ্ছে, জিডিপি বাড়ছে, তাতে দেশের মানুষের কী উপকার হয়? দেখা যায় যত ‘আর্থিক বৃদ্ধি’ হয় তত চাকরি কমে, কমে প্রকৃত মজুরির হার৷ দারিদ্র বাড়ছে৷ নরেন্দ্র মোদি সরকার মেক ইন ইন্ডিয়া বলে ব্যাপক ঢাকঢোল পিটিয়ে কিছু যুদ্ধাস্ত্র, যুদ্ধ বিমান তৈরির বরাত দেশে নিয়ে এসেছে৷ সেগুলি তৈরি করবে আম্বানি–আদানি–টাটাদের মতো দৈত্যাকার কর্পোরেট গোষ্ঠী৷ তাতে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লেনদেন হবে, তার হিসাব দেশের নিতান্ত গরিব মানুষের নুন–তেল কেনার যৎসামান্য খরচের সাথে জুড়ে দিয়ে বিরাট আর্থিক বৃদ্ধি দেখানো হবে৷ কিন্তু এই আর্থিক বৃদ্ধির ছিটেফোঁটা রেশও মধ্যবিত্ত বা গরিবের কাছে পৌঁছায় না৷ এই ফাঁপা বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুললে নৈরাশ্যের কারবার হয়, নাকি নরেন্দ্র মোদি সরকারের মিথ্যার কারবারের পর্দাফাঁস করা হয়
এই পরিস্থিতিতে দরকার ছিল দেশের সমস্ত শ্রমিক–চাষির আয় বাড়ানোর ব্যবস্থা করা৷ তার জন্য দেশের কোটি কোটি শ্রমজীবী মানুষ তাদের শ্রম দিয়ে যে মূল্য উৎপাদন করে তার অধিকাংশটা তাদের কাছেই ফিরিয়ে দেওয়া দরকার৷ কিন্তু তা করতে গেলে টান পড়ে পুঁজিপতিদের মুনাফায়৷ ১৯৮০–৮১–তে ভারতে সংগঠিত ক্ষেত্রে ১০০ একক মূল্য উৎপাদনে শ্রমিকের মজুরির ভাগ ছিল ২৮.৫ শতাংশ৷ ২০১২–১৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১১ শতাংশ (আইএলও, এশিয়া প্যাসিফিক ওয়ার্কিং পেপার সিরিজ, ২০১৭)৷ পরবর্তীকালে তা আরও কমে ৯ শতাংশের নিচে নেমেছে৷ অর্থাৎ শ্রমের দ্বারা উৎপাদিত মূল্যের ৯০ শতাংশের বেশিটাই আত্মসাৎ করে মালিকশ্রেণি৷এই পথেই দেশের বেশিরভাগ মানুষের সম্পদ গিয়ে জমা হয় করপোরেটদের সিন্দুকে৷ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অর্থনীতির আকার যত বড় হবে মাথাপিছু তত বেশি আয় জীবনে সাফল্য নিয়ে আসবে৷ বলেছেন, মাথাপিছু বেশি আয় মানে তত বেশি ক্রয়ক্ষমতা, তত চাহিদা, তত উৎপাদন, তত কর্মসংস্থান এবং তত সঞ্চয়৷ মাটির পৃথিবীতে স্বর্গ আর কাকে বলে নানা কথার কারসাজিতে প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে পুঁজিবাদী অর্থনীতির মূল নিয়মটিকেই ভুলিয়ে দিতে চেয়েছেন৷ তা হল, ক্রমাগত অসাম্য তৈরিই পুঁজিবাদী অর্থনীতির নিয়ম৷ দেশের ১৩০ কোটি মানুষের সিংহভাগ অংশ প্রতিদিন উদয়াস্ত খেটে যে উৎপাদন করে চলেছে তার সুফল যায় কোথায়? যায় মুষ্টিমেয় মালিকদের পকেটে৷ তাই দেশের মোট সম্পদের ৭৩ শতাংশ সম্পদ আজ কুক্ষিগত ১ শতাংশ পুঁজিপতির হাতে৷ দেশের মোট সম্পদের মাত্র ৪.৮ শতাংশ সম্পদ রয়েছে ৬০ শতাংশে মানুষের হাতে৷ ফলে আম্বানি আদানি টাটা বিড়লা গোয়েঙ্কা মাহিন্দ্রাদের আয়বৃদ্ধি মানে তা রাম শ্যাম যদু মধু রহিমের আয়বৃদ্ধি নয় পুঁজিবাদী বর্তমান ব্যবস্থায় মাথাপিছু আয় তো শিল্পপতি আর শ্রমিক– দু জনের আয়ের গড় হিসাব করেই ঠিক করা হয়৷ প্রধানমন্ত্রীও সেই হিসেবের কথাই বলেছেন৷ তাতে দেশের সাধারণ মানুষের উল্লসিত হওয়ার কোনও কারণ আছে কি? নাকি গত পাঁচ বছরের মতোই আরও পাঁচ বছর দেশের মানুষ আশা নিয়েই কাটিয়ে দেবেন৷ অবশ্য কিছুদিন পর অমিত শাহ এগিয়ে এসে বলতে পারেন, প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন তা আসলে জুমলা– সত্যি সত্যি বলেননি৷