‘‘এদেশে কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী দলটির জন্মের পর থেকে সংগ্রামের ইতিহাস, অর্থাৎ সংগ্রাম পরিচালনার কায়দা ও পরিচালনার সময়কার দৃষ্টিভঙ্গি পর্যালোচনা করে এবং দেশের মূল রাজনৈতিক অবস্থা এবং রাষ্ট্রের চরিত্র নির্ধারণ করবার জন্য এই পার্টিটি যতবার মূল রণনীতি নির্ধারণ করবার চেষ্টা করেছে, অর্থাৎ মূল বিপ্লবী তত্ত্ব গ্রহণ করবার চেষ্টা করেছে, সেই সমস্ত তত্ত্ব বিশ্লেষণ করে এবং দলের নেতা ও কর্মীদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রাত্যহিক আচরণের ক্ষেত্রে সংস্কৃতিগত মান, যা নিয়ে পরে বিশদভাবে আমি আপনাদের সামনে আলোচনা করব, সে সমস্ত বিষয় লক্ষ করে – এই দলটি যে গঠনের শুরু থেকেই কমিউনিজমের তকমা এঁটে একটি পেটিবুর্জোয়া পার্টির মতো আচরণ করে এসেছে – এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েই কেবলমাত্র আমরা ভারতবর্ষের সর্বহারা শ্রেণির বিপ্লবী দল, অর্থাৎ মার্কসবাদী–লেনিনব দল হিসাবে এস ইউ সি আই–কে গড়ে তুলেছি৷
কারণ, মার্কসবাদ অনুযায়ী আমরা জানি, দল শুধুমাত্র কতকগুলো ব্যক্তিবিশেষের সমষ্টি নয়, শ্রেণিবিভক্ত সমাজে যে কোনও রাজনৈতিক দলই কোনও না কোনও শ্রেণির দল৷ অর্থাৎ উৎপাদনের বিকাশের একটি বিশেষ ঐতিহাসিক স্তরে একটি দেশে যে শ্রেণিগুলির অস্তিত্ব বর্তমান থাকে তার কোনও না কোনও একটির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আদর্শগত ও নৈতিক আশা–আকাঙক্ষাগুলিকে বাস্তবে রূপায়িত করার রাজনৈতিক অস্ত্রই হচ্ছে সেই শ্রেণির রাজনৈতিক দল৷ তাহলে, দল বলতে মার্কসবাদীরা বুঝে থাকে শ্রেণি দল যা একটা বিশেষ শ্রেণিগত বিশ্বদৃষ্টিভি এবং সমস্যা বিশ্লেষণ ও সমাধানের ক্ষেত্রে বিশেষ শ্রেণির দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী চিন্তাগত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির ওপরেই গড়ে উঠে, সে সম্বন্ধে দলের নেতা ও কর্মীরা সচেতন থাক বা না থাক, যেটা দলকে এবং দলের মূল বিচার–বিশ্লেষণকে এবং দলের নেতা ও কর্মীদের জীবনের প্রতিটি সমস্যার ক্ষেত্রে প্রাত্যহিক আচরণের সংস্কৃতিগত ও রুচিগত দিকটিকেও প্রভাবিত করে চলেছে৷’’
– কেন ভারতবর্ষের মাটিতে এস ইউ সি আই (সি) একমাত্র সাম্যবাদী দল