১৯৫৯ সালের ঐতিহাসিক খাদ্য আন্দোলন ও ১৯৯০ সালের ভাড়াবৃদ্ধি-মূল্যবৃদ্ধি বিরোধী আন্দোলনের শহিদ স্মরণে ৩১ আগস্ট কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে অনুষ্ঠিত হল জনসভা। প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে এস ইউ সি আই (সি)-র কলকাতা জেলা কমিটির ডাকে সহস্রাধিক মানুষের এই সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শঙ্কর ঘোষ। সভাপতিত্ব করেন কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক সুব্রত গৌড়ী। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নভেন্দু পাল ও গোপাল বিশ্বাস। এ দিন সকালে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে শহিদ মাধাই হালদার স্মরণ বেদিতে মাল্যদান করেন নেতৃবৃন্দ।
এ যুগের মহান মাক্সর্বাদী চিন্তানায়ক কমরেড শিবদাস ঘোষ স্মরণে রচিত সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে সভা শুরু হয়। প্রথমে দল ও গণসংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদ বেদিতে মাল্যদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দলের সঙ্গীত স্কোয়াডের এক সদস্যের কণ্ঠে ‘৯০ সালে ভাড়াবৃদ্ধি-মূল্যবৃদ্ধি বিরোধী আন্দোলনে নিহত কিশোর শহিদ মাধাই হালদার স্মরণে রচিত সঙ্গীতের সুর শ্রোতাদের গভীর ভাবে আলোড়িত করে।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন কমরেড সুব্রত গৌড়ী। খাদ্য আন্দোলন ও ভাড়াবৃদ্ধি-মূল্যবৃদ্ধি বিরোধী আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনজীবনের জ্বলন্ত সমস্যাগুলির বিরুদ্ধে এস ইউ সি আই (সি)-র নেতৃত্বে দেশ জুড়ে আন্দোলন চলছে। সেই আন্দোলন শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই এই সমাবেশ।
প্রধান বক্তার ভাষণে কমরেড শঙ্কর ঘোষ প্রথমেই ঐতিহাসিক খাদ্য আন্দোলন ও ভাড়াবৃদ্ধি-মূল্যবৃদ্ধি বিরোধী আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, বিপ্লবব্রতী খেটে-খাওয়া দেশবাসীর কাছে ৩১ আগস্ট দিনটি একাধারে শোকের ও সংগ্রামী শপথ গ্রহণের। ‘৫৯ সালের খাদ্য আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, সর্বহারার মহান নেতা কমরেড শিবদাস ঘোষ স্বাধীনতা প্রাপ্তির সময়েই দেখান, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের হাত থেকে মুক্ত হলেও ভারত রাষ্ট্রে শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থা কায়েম হওয়ায় দেশবাসীর সংকটমুক্তি ঘটেনি। তার জন্য চাই পুঁজিবাদ উচ্ছেদকারী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব। চূড়ান্ত বিপ্লবী স্পর্ধায় তিনি দেখান, ঐতিহাসিক ভাবে সেই দায়িত্ব এসে পড়েছে এ দেশের যথার্থ সাম্যবাদী দল এস ইউ সি আই (সি)-র উপর।
কমরেড শঙ্কর ঘোষ বলেন, কমরেড শিবদাস ঘোষের কথার সত্যতা প্রমাণ করে স্বাধীনতার কয়েক বছরের মধ্যেই সমস্যা-সংকটে জর্জরিত দেশের সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ আছড়ে পড়তে থাকে রাজপথগুলিতে। পশ্চিমবাংলা ছিল সেই আন্দোলনের পীঠস্থান। এস ইউ সি আই (সি) সর্বশক্তি নিয়ে সামিল হয়েছিল সেইসব আন্দোলনগুলি সংগঠিত করতে। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর প্রথমবার বাংলার মানুষ আন্দোলনে নামে ১৯৫২ সালে। রাজ্যে তখন ক্ষমতায় বিধান রায়ের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার। সরকারি পুলিশ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের উপর বর্বর আক্রমণ চালায়। এরপর চলতে থাকে একের পর এক আন্দোলন। ১৯৫৩ সালে এক পয়সা ট্রাম ভাড়া বাড়ানোর বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক আন্দোলন, যে আন্দোলনে সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়। ১৯৫৪-তে হয় শিক্ষক আন্দোলন। এস ইউ সি আই (সি)-র কেন্দ্রীয় দফতর ৪৮ লেনিন সরণি তখন হয়ে উঠেছিল এই আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। দলের নেতা কমরেড সুবোধ ব্যানার্জী ছিলেন সেই আন্দোলনের আহ্বায়ক। প্রবল সরকারি দমন-পীড়ন উপেক্ষা করে শিক্ষক আন্দোলন তীব্রতর হয় এবং জয়যুক্ত হয়।
তৎকালীন কংগ্রেস সরকার বাংলা ও বিহারের সংযুক্তির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে ১৯৫৬ সালে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে মানুষ। গড়ে ওঠে বাংলা-বিহার সংযুক্তিবিরোধী আন্দোলন। মার্ক্সবাদের শিক্ষায় এস ইউ সি আই (সি) বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি তুলে দেখায়, কেন এই সংযোগ সাধারণ মানুষের স্বার্থবিরোধী। সরকার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।
তিনি বলেন, ১৯৫৯ সালের ১৩ জুলাই শুরু হয় ঐতিহাসিক খাদ্য আন্দোলন। দেশে তখন প্রায় দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি। খাদ্যের দাবিতে একের পর এক বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠতে থাকে কলকাতা মহানগরী। ১৬ আগস্ট গ্রেফতার হন এস ইউ সি আই (সি)-র নেতা নীহার মুখার্জী ও সুবোধ ব্যানার্জী। ২০ আগস্ট ৩০ হাজার ভুখা মানুষ খাদ্যমন্ত্রীর ভবনের দিকে অভিযান চালায়। আসে ঐতিহাসিক ৩১ আগস্ট। খাদ্যের দাবিতে এ দিন লক্ষাধিক মানুষের মিছিল আছড়ে পড়েছিল কলকাতার রাজপথে। এই আন্দোলনেও এস ইউ সি আই (সি) ছিল সামনের সারিতে। রাজ্যের কংগ্রেস সরকার নির্মম আক্রমণ চালায় সেই মিছিলে। পুলিশের লাঠির ঘায়ে সরকারি হিসাবেই প্রাণ যায় ৮০ জন আন্দোলনকারীর। বেসরকারি হিসাবে নিহত হয়েছিলেন ২১২ জন। নিখোঁজ হন দুশো মানুষ। পুলিশের এই নৃশংস বর্বরতা কংগ্রেস সরকারের ‘গণতান্ত্রিক’ মুখোশ সম্পূর্ণভাবে খসিয়ে দেয়। প্রকাশ্যে এসে যায় তার ফ্যাসিবাদী চেহারা। এই বর্বরতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ধ্বনিত করে এস ইউ সি আই (সি)। দেশে চাল উৎপাদনের কমতি নেই। কিন্তু কংগ্রেস সরকার খাদ্যপণ্যের বাজার সম্পূর্ণ রূপে ব্যবসায়ী-কালোবাজারিদের হাতে তুলে দেওয়ায় মানুষ দু’বেলা খেতে পায়নি। এই অবস্থায় ১৯৬৬ সালে আবার শুরু হয় খাদ্য আন্দোলন। কমরেড শিবদাস ঘোষ মাক্সর্বাদ-লেনিনবাদের শিক্ষার আলোয় দেখান যে, চাষিকে ফসলের ন্যায্য দাম পাইয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ন্যায্য মূল্যে ক্রেতাদের হাতে খাদ্যপণ্য তুলে দিতে হলে প্রয়োজন সামগ্রিক রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য। খাদ্যপণ্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু করার দাবি তোলে এস ইউ সি আই (সি)। সম্প্রতি দিল্লি সীমান্তে সাম্প্রতিক ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনেও সেই দাবির প্রতিধ্বনি শোনা গেছে।
আলোচনা করতে গিয়ে কমরেড শঙ্কর ঘোষ দেখান, কমরেড শিবদাস ঘোষ সেই সময় থেকেই ‘কমিউনিস্ট’ নামধারী দলগুলির নির্বাচনমুখী মানসিকতাকে চিহ্নিত করে জনসাধারণের সামনে তা তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি বামপন্থী দলগুলির সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের বিপ্লবের প্রতি আবেগ, নিষ্ঠা ও আত্মদানের মানসিকতার কথা বিবেচনায় রেখে যুক্ত আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছে এস ইউ সি আই (সি)। খাদ্য আন্দোলনের প্রস্তুতিতে ১৯৫১-‘৫২ সালে এস ইউ সি আই(সি), আরএসপি, আরসিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক ও কৃষক প্রজা মজদুর পার্টি সংযুক্ত ভাবে গড়ে তুলেছিল ‘দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ কমিটি’। অন্য দিকে সিপিআই ও ডেমোক্রেটিক ভ্যানগার্ড পার্টি দুটি মিলে গড়ে তুলেছিল ‘খাদ্য অভিযান কমিটি’। কমরেড শিবদাস ঘোষ এই দুটি কমিটিকে যুক্ত করে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। কিন্তু স্বাধীনতা আন্দোলনে সিপিআই-এর জঘন্য ভূমিকার জন্য দুর্ভিক্ষ প্রতিরোধ কমিটির নেতারা এতে রাজি ছিলেন না। কমরেড ঘোষের দিনের পর দিনের একান্ত প্রচেষ্টায় নেতারা শেষপর্যন্ত রাজি হন এবং দুটি কমিটি যুক্ত হয়ে ঐক্যবদ্ধ বামপন্থী আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন করে।
কমরেড শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘৬৪ সালে সিপিআই ভেঙে বেরিয়ে আসে সিপিআই(এম) এবং ‘৬৬ থেকে তারা আন্দোলনের রাস্তা ত্যাগ করে পুরোপুরি নির্বাচনমুখী একটি দলে পরিণত হয়। তিনি দেখান, ‘৬৭ ও ‘৬৯-এর যুক্তফ্রন্ট সরকারের পর ‘৭৭ সালে সিপিএম-এর নেতৃত্বে এস ইউ সি আই (সি)-কে বাদ দিয়ে তৈরি হল বামফ্রন্ট সরকার। ক্ষমতায় বসার পর থেকেই বামপন্থা বিসর্জন দিয়ে এই সরকার একের পর এক জনবিরোধী কার্যকলাপ চালাতে শুরু করে। এর বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে জনস্বার্থ রক্ষায় লড়াই-আন্দোলন গড়ে তুলতে থাকে এস ইউ সি আই (সি)।
১৯৭৯-তেই এস ইউ সি আই (সি)-র আইন অমান্যের উপর নৃশংস লাঠিচার্জ করে সিপিএম সরকারের পুলিশ। ১৯৮০ থেকে লাগাতার চলতে থাকে বাসভাড়া বৃদ্ধি ও মূল্যবৃদ্ধি বিরোধী আন্দোলন। ১৯৮৩-তে বাসভাড়া বৃদ্ধি প্রতিরোধ আন্দোলনের উপর কলকাতা ও পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে পুলিশ গুলি চালায়, কলকাতায় একজন ও পুরুলিয়ায় দু’জন নিহত হন। এরই ধারাবাহিকতায় আসে ১৯৯০-এর ৩১ আগস্ট। কমরেড শঙ্কর ঘোষ সেই ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ওই দিন এস ইউ সি আই (সি) সহ ১৩ পার্টির জোটের ডাকে কলকাতায় এক বিশাল আইন-অমান্য হয়। রাজ্যে শাসনক্ষমতায় তখন সিপিএম নেতৃত্বাধীন ফ্রন্ট সরকার। পুলিশ নৃশংস অত্যাচার নামিয়ে আনে শান্তিপূর্ণ নিরস্ত্র আইন-অমান্যকারীদের উপর। লাঠি, টিয়ার গ্যাসের পর মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায় তারা। গুলিবিদ্ধ হন ৩২ জন। শহিদের মৃত্যু বরণ করেন এস ইউ সি আই (সি)-র কিশোর কর্মী মাধাই হালদার। মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু এ প্রসঙ্গে চরম নির্লজ্জের মতো মন্তব্য করেন, ‘নিরামিষ আন্দোলনকে আমিষ করা হল’।
এখানেই শেষ নয়, জনস্বার্থবাহী গণআন্দোলন ভাঙতে বছরের পর বছর ধরে এস ইউ সি আই (সি)-র উপর লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে গেছে সিপিএম ফ্রন্ট সরকার। শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগণাতেই ওদের আক্রমণে দলের বহু নেতা-কর্মী শহিদ হয়েছেন। কমরেড শঙ্কর ঘোষ দেখান, নির্লজ্জ ভোটসর্বস্বতার নীতি নিয়ে চলতে চলতে সিপিএম আজ কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। মানুষকে প্রতারণা করতে ৩১ আগস্ট খাদ্য আন্দোলনের শহিদ দিবস পালন করতে গিয়ে এবার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একটা কথাও নেতাদের মুখে শোনা যায়নি। আজ বামপন্থার পথ থেকে সম্পূর্ণ সরে গিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল সোস্যাল ডেমোক্র্যাটে পরিণত হয়েছে সিপিএম দলটি।
তিনি বলেন, মরতে বসা পুঁজিবাদী ব্যবস্থা নিজেকে রক্ষা করতে আজ ফ্যাসিবাদী রূপ নিয়েছে। ভারতের শাসক পুঁজিপতি শ্রেণির স্বার্থে বর্তমানে সর্বশক্তি নিয়োগ করে কাজ করে চলেছে কেন্দ্রের সাম্প্রদায়িক বিজেপি সরকার। এ দেশে ফ্যাসিবাদের ভিত্তি স্থাপন করেছিল কংগ্রেস। বিজেপি এখন তার ছেড়ে যাওয়া জুতোয় পা গলিয়ে আরও সংহত করছে ফ্যাসিবাদকে। ফিরিয়ে আনতে চাইছে অতীতের অন্ধকারাচ্ছন্ন চিন্তাকে। ধূর্ত কৌশলে তারা রাষ্ট্র ও দেশকে সমার্থক করে দেখাতে চাইছে, যাতে শোষণমূলক পুঁজিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা উচ্ছেদের লড়াইকে দেশদ্রোহ বলে দাগিয়ে দেওয়া যায়। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার চরম দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে। তারাও প্রতিবাদ-আন্দোলন দমনে অতি তৎপর।
কমরেড শঙ্কর ঘোষ বলেন, পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় যত পচন ধরছে, জনজীবন ততই সংকটগ্রস্ত হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারি সর্বব্যাপক হচ্ছে, নারী সুরক্ষা তলানিতে। নেতারা চরম দুর্নীতিগ্রস্ত। কিন্তু সমাজ জুড়ে অন্ধকার যত গভীর হচ্ছে, আলো ফোটার সম্ভাবনা তত শক্তিশালী হচ্ছে। সংকটে জর্জরিত মানুষ মুক্তির পথ খুঁজছে, লড়াইয়ে নামার তাগিদ অনুভব করছে। মাক্সর্বাদ-লেনিনবাদ-শিবদাস ঘোষ চিন্তাধারা অনুসরণ করে মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে তাদের সংগঠিত করে একের পর এক গণআন্দোলন গড়ে তুলছে এস ইউ সি আই (সি)। এই পথে হেঁটেই পৌঁছতে হবে পুঁজিবাদ উচ্ছেদকারী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের মহাসড়কে। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ৩১ আগস্ট দেশের শোষিত নিপীড়িত মেহনতি মানুষকে সেই সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে যায়।