চাকরির নিরাপত্তা, বেতন ও পেনশনের দাবিতে ব্রিটেনের রেলকর্মীরা দেশ জুড়ে ধর্মঘটে নেমেছেন। ধর্মঘটের এই চেহারা ৩০ বছরের মধ্যে ব্রিটেনের মানুষ দেখেনি। ২১ জুন থেকে দশ হাজারেরও বেশি রেল কর্মচারী কাজ বয়কট করায় রেল পরিষেবা বিধ্বস্ত। টিউব রেলকর্মীরাও ধর্মঘট করছেন। এই ধর্মঘট জনজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। বাসগুলিতে যাত্রীর ভিড় ভয়ঙ্কর, অ্যাপ-ক্যাব অমিল। যাতায়াত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় রেস্টুরেন্ট-বার-কাফেতে লোকজন কম। সমুদ্র-যান এবং বাস সহ অন্যান্য পরিবহণ শ্রমিকরাও ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন।
৪০ হাজার সাফাইকর্মী, সিগন্যালম্যান, মেন্টেনান্স স্টাফ এবং স্টেশন কর্মচারীরা লাগাতার ধর্মঘটে নেমেছেন। করোনার গত দু’বছরে সরকারের সহযোগিতায় বেসরকারি রেল কোম্পানিগুলি রেল-পরিষেবার নানা ক্ষেত্রে ব্যয় কমাচ্ছে এবং কর্মচারীদের ছাঁটাই করছে। কর্মচারীরা ভয়ঙ্কর মূল্যবৃদ্ধির এই বাজারে বেতন বাড়ানোর দাবি বারবার জানালেও রেল কোম্পানিগুলি মাত্র ৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু বর্তমানে ১০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির বাজারে এই প্রতিশ্রুতি কর্মীদের ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢালে। জ্বালানি, খাদ্যদ্রব্যের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই দেশের নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। লক্ষ লক্ষ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন চাপে পড়ে করোনা-পরবর্তী অর্থনীতির দুর্দশার দোহাই পেড়ে কর্মচারী ইউনিয়ন ও জনসাধারণকে এই পরিস্থিতির জন্য দোষী সাব্যস্ত করেই দায় সেরেছেন। ইউনিয়নের সদস্যরা জানিয়েছেন, ধর্মঘট অশনিসঙ্কেত মাত্র। মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার শিক্ষক, চিকিৎসক, সাফাইকর্মী, আইনজীবী ও সমাজের সব অংশের বিক্ষোভে ফেটে পড়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।